মেজাজে: সোচিতে ব্রাজিলের অনুশীলনে খোশমেজাজে কিং নেমার। তৈরি হচ্ছেন বিশ্বকাপের জন্য। ছবি: এএফপি
শুরু হয়েছিল হাসি, ঠাট্টা, মজা দিয়ে। শেষ হতে পারত বিপর্যয়ে। অল্পের জন্য বড় চোটের হাত থেকে বেঁচে গেলেন নেমার দ্য সিলভা স্যান্টোস (জুনিয়র)।
মঙ্গলবার সোচিতে ব্রাজিলের প্রস্তুতি শিবিরের শুরুটা হল অভাবনীয় ভাবে। মাটিতে বসে ছিলেন ফিলিপে কুটিনহো। হঠাৎ দেখা গেল, তাঁকে ঘিরে ধরেছেন দলের বেশ কয়েক জন ফুটবলার। কুটিনহো কিছু বোঝার আগেই পিছন থেকে এসে তাঁর মাথায় ডিম ফাটিয়ে চলে যান নেমার! তার পরে কুটিনহোকে ঘিরে ধরে তাঁর মাথায় ময়দা ঢেলে দেন দলের অন্যান্য ফুটবলার।
ময়দা, ডিম দিয়ে কি কেক বানানোর চেষ্টা চলছিল অনুশীলনে? হতেই পারে! কারণ মঙ্গলবার ছিল কুটিনহোর ২৬তম জন্মদিন। তবে শুধু কুটিনহোর মাথাতেই ডিম ভাঙা হয়নি। নেমার নিজেও এই ‘অত্যাচারের’ শিকার হয়েছেন। এ ক্ষেত্রে দায়ী মার্সেলো। কুটিনহোকে ডিম-ময়দা মাখিয়ে যখন খুব একচোট হাসছিলেন নেমার, পিছন থেকে এসে তাঁকে ধরে ফেলেন মার্সেলো। এবং ব্রাজিলের মহাতারকাকে মাটিতে ফেলে তাঁর মাথাতেও ফাটানো হয় ডিম। পুরো ঘটনার ভি়ডিয়ো টুইটার মারফত ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
মাথায় ডিম ভাঙা হলেও কোনও ক্ষতি হয়নি নেমারের। কিন্তু এর পরে অনুশীলনে যা হল, তা মারাত্মক হতেই পারত নেমারের জন্য। মঙ্গলবারের অনুশীলনে দর্শক প্রবেশের অনুমতি ছিল। সোচিতে প্রায় পাঁচ হাজার লোক হয়েছিল নেমার এবং তাঁর দলের অনুশীলন দেখতে। ব্যারিকেডের গেটের পাশে দাঁড়িয়ে যখন সই শিকারিদের আবদার মেটাচ্ছিলেন নেমার, হঠাৎ করে সেটা ভেঙে পড়ে। হুড়মুড় করে পড়ে যান দর্শকরা। অবস্থা দেখে লাফ দিয়ে সরে যান নেমার। ভাগ্য ভাল থাকায় চোট পাননি বিশ্বের সব চেয়ে দামি ফুটবলার।
ঘটনা অবশ্য এখানেই শেষ হয়ে যায়নি। জনা চারেক ভক্ত এর পর মাটি থেকে উঠে দৌড়ে আসতে থাকেন নেমারের দিকে। তাঁদের মাঝপথেই আটকে দেন নিরাপত্তারক্ষীরা। পুরো ঘটনায় অবশ্য এটকুটু বিচলিত হননি নেমার। তাঁকে যখন নিরাপত্তারক্ষীরা সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, পিছন ঘুরে নেমার দেখার চেষ্টা করেন, কারও চোট লেগেছে কি না। তার আগে অবশ্য এক খুদে ভক্ত নেমারের কাছে পৌঁছে তার স্বপ্নের ফুটবলারের সঙ্গে নিজস্বীও তুলে ফেলেন।
শেষ বার ২০০২ সালে ব্রাজিলের বিশ্বকাপজয়ী দলের অন্যতম সেরা ফুটবলার ছিলেন রোনাল্ডো। সেই রোনাল্ডোও মুগ্ধ নেমারে। বলছেন, ‘‘রোনাল্ডোই আমার ব্রাজিলের প্রধান আশা। এই মুহূর্তে পুরোপুরি তৈরি রয়েছে ও। তা ছাড়া ব্রাজিলের গোটা দলটাও বেশ ভাল। এ বার চ্যাম্পিয়ন হতেই পারে তিতের দল।’’
বিশ্বকাপে আসার আগে চোট সমস্যায় পড়েছিলেন নেমার। অস্ত্রোপচারও করতে হয় পায়ে। কিন্তু এখন সেই চোট আতঙ্ক কাটিয়ে ছন্দে ফিরেছেন তিনি। দুরন্ত গোলও করেছেন দু’টো প্রস্তুতি ম্যাচে। নেমার নিয়ে ব্রাজিলের গোলকিপার আলিসন বেকার বলেছেন, ‘‘ঈশ্বরকে ধন্যবাদ, নেমার সুস্থ হয়ে গিয়েছে। চোট পাওয়া থেকে শুরু করে রিহ্যাব— এই পুরো প্রক্রিয়াটা দারুণ ভাবে সামলানো হয়েছে। ও এখন পুরো সুস্থ।’’ ব্রাজিলিয়ান গোলকিপার আরও বলেন, ‘‘প্রথম দিকে মাঠে নামার সময় নেমার একটু আতঙ্কে ছিল। যেটা খুবই স্বাভাবিক। তার পর আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে গিয়েছে।’’
দিন কয়েক হল সোচিতে এসেছে ব্রাজিল দল। অল্প সময়ের মধ্যেই শহরটি ভাল লেগে গিয়েছে ফুটবলারদের। আলিসন যেমন বলেছেন, ‘‘শহরটাকে প্রথম দেখায় আমাদের বেশ ভাল লেগেছে। সুন্দর শহর, সামনেই সমুদ্র। আমরা রেস্তরাঁয় বসে সমুদ্র দেখতে দেখতে লাঞ্চ করেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy