উদ্বেগ: ড্র করল দল। রবিবার নেমার নিজেও গোল পেলেন না। ফাইল চিত্র
প্রথম ম্যাচে সুইৎজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ড্র করায় অনেকেই এই বিশ্বকাপে ব্রাজিলের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। ব্রাজিলীয়রা কিন্তু একটা ড্রয়ে ভেঙে পড়ে না। আমরা এখন নেমার দ্য সিলভা স্যান্টোস (জুনিয়র)-দের ঘুরে দাঁড়ানোর অপেক্ষায়। তবে এই মুহূর্তে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সুইৎজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচের ভুলভ্রান্তি দ্রুত শুধরে নেওয়া।
প্রথম ম্যাচে কী কী ভুল করেছিলেন ব্রাজিলের ফুটবলাররা?
এক) নেমার অকারণে পায়ে বল রাখছিলেন। ওঁর উচিত ছিল, দ্রুত পাস দিয়ে জায়গা নেওয়া। রবিবার সেটা করেননি বলেই সুইৎজারল্যান্ডের ফুটবলাররা বার বার ওঁকে ফাউল করেছেন। নব্বই মিনিটে দশ বার নেমারকে ফাউল করেছেন বিপক্ষের ফুটবলাররা। নেমার যদি খেলার ধরন না বদলান, তা হলে কিন্তু সমস্যায় পড়বেন। কারণ, ওঁর মতো ফুটবলারকে বিপক্ষের কোচ ও ফুটবলাররা কখনও খোলা মনে খেলতে দেওয়ার ভুল করবেন না। শুধু তাই নয়, এ ভাবে খেললে ফের চোট পাওয়ার সম্ভাবনাও বাড়বে।
দুই) সুইৎজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত শুরু করেছিল ব্রাজিল। ২০ মিনিটের মধ্যেই গোল করে এগিয়ে দেন ফিলিপে কুটিনহো। তা সত্ত্বেও জয় হাতছাড়া হয়েছে। কারণ, দ্বিতীয়ার্ধে মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিল তিতের দল।
তিন) দ্বিতীয়ার্ধে মাঝমাঠে সে ভাবে ব্লকিং হচ্ছিল না। পাওলিনহোর পরিবর্তে রেনাতো আগুস্তোকে নামান তিতে। আমার মতে পাউলিনহোর মাঠে থাকাটা জরুরি ছিল। রেনাতো শ্লথ। তার উপর শারীরিক ভাবে খুব একটা শক্তিশালীও নন। শক্তির লড়াইয়ে রবিবার জার্দান শাকিরিরা ব্রাজিলের ফুটবলারদের চেয়ে অনেক এগিয়ে ছিলেন।
চার) দানি আলভেসের অভাব বার বার অনুভব করছিলাম। সুইৎজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ব্রাজিলের অধিকাংশ আক্রমণই হয়েছে বাঁ প্রান্ত থেকে। কারণ, লেফ্ট ব্যাক মার্সেলো ভিয়েরা ওভারল্যাপে উঠেছেন। যদিও সময় মতো নেমে আসতে পারছিল না বলে রক্ষণের উপর চাপ বাড়ছিল। তাও মার্সেলোর জন্য সব সময়ই বাঁ দিক সচল দেখিয়েছে। সম্পূর্ণ বিপরীত ছবি ডান প্রান্তিক আক্রমণের ক্ষেত্রে। আলভেসের পরিবর্তে প্রথম দলে জায়গা পাওয়া দানিলো আক্রমণে খুব একটা স্বচ্ছন্দ নন। তাই পুরো ম্যাচে মাত্র কয়েক বারই ডান দিক দিয়ে আক্রমণ তৈরি হয়েছে।
পাঁচ) কুটিনহোর গোলে এগিয়ে যাওয়ার পরে ব্রাজিলের ফুটবলারদের মধ্যে একটু গা-ছাড়া মনোভাব লক্ষ্য করেছি। এই প্রবণতা কিন্তু ভয়ঙ্কর। ব্রাজিলের ফুটবল সংস্কৃতি হচ্ছে, খেলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত গোলের জন্য ঝাঁপানো।
ছয়) উইং দিয়ে উড়ে আসা বলে আমাদের রক্ষণের দুর্বলতা এই ম্যাচেও বার বার স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ৫০ মিনিটে সুইৎজারল্যান্ডের গোলটার কথাই মনে করুন। জুবেরকে ডাবল কভারিং করা উচিত ছিল। অর্থাৎ, এক জন থাকবেন সামনে। দ্বিতীয় জন জায়গা নেবেন সুইস মিডফিল্ডারের পিছনে। মিরান্দা কিন্তু দাঁড়িয়েছিলেন জুবেরের সামনে। শাকিরির কর্নারে হেড করতে ওঠার আগে মিরান্দাকে পিছন থেকে ধাক্কা দেন জুবের। ফলে নিজের জায়গা থেকে সরে গিয়েছিলেন ব্রাজিল ডিফেন্ডার। কার্যত বিনা বাধায় গোল করে সমতা ফেরান তিনি।
ব্রাজিলের পরের ম্যাচ কোস্তা রিকার বিরুদ্ধে শুক্রবার। তিতে কি পারবেন এর মধ্যে ভুলত্রুটি শুধরে নিতে? আমার মতে, চার দিন যথেষ্ট সময়। তবে কোস্তা রিকার চেয়েও আমার কাছে বেশি কঠিন মনে হচ্ছে, সার্বিয়া ম্যাচ। কারণ, ওরাও অনেকটা সুইৎজারল্যান্ডের ছকেই খেলবে বলে আমার অনুমান। ফলে তিতেকে এখন থেকেই ‘প্ল্যান বি’ তৈরি করে ফেলতে হবে। এই পরিকল্পনায় দ্রুত নিজেদের মধ্যে পাস খেলে বিপক্ষের বক্সে হানা দিতে হবে। চেষ্টা করতে হবে নিজেদের পায়ে কম বল রাখা, কারণ লাতিন আমেরিকা ও ইউরোপের খেলার ঘরানাটা আলাদা। লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর অস্ত্র আক্রমণাত্মক ফুটবল। ইউরোপের দেশগুলো কিন্তু অঙ্ক কষে শক্তি নির্ভর খেলে। গোল করে এগিয়ে যাওয়ার পরে রক্ষণ শক্তিশালী করার দিকে নজর দেয়। মনে হয় না নেমাররা একই ভুলের পুনরাবৃত্তি করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy