প্রস্তুতি: ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে নামার আগে অনুশীলনে মেসি, আগুয়েরো ওতামেন্দিরা। মঙ্গলবার। ছবি: এএফপি
হর্হে সাম্পাওলির একটা রেকর্ড আছে। আর্জেন্টিনার যে ১২টা ম্যাচে তিনি দায়িত্বে আছেন, তার কোনওটাতেই একই দল খেলাননি। বার বার নতুন প্রথম একাদশ নামিয়ে দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার লিয়োনেল মেসিদের বিশ্বকাপের মরণ-বাঁচন ম্যাচ। প্রতিপক্ষ ক্রোয়েশিয়া। যারা প্রথম ম্যাচে নাইজেরিয়াকে হারিয়ে টগবগে হয়ে রয়েছে। লিয়োনেল মেসিরা এই ম্যাচে জিততে না পারলে বিশ্বকাপ থেকে অকাল বিদায়ের আতঙ্ক তাড়া করবে তাঁদের।
আর্জেন্টিনা শিবিরের খবর, নিজের চরিত্র অনুযায়ী কোচ আবার দলে বেশ কিছু পরিবর্তন করবেন। মেসির জন্য তিনি নতুন সঙ্গী হিসেবে নিঝনি নভগরোদ স্টেডিয়ামে নামিয়ে দেবেন বোকা জুনিয়র্সের প্রতিভাবান ফুটবলার ক্রিস্তিয়ান পাভনকে। যাঁর বয়স মাত্র বাইশ। ডান ও বাঁ, দু’দিকেই খেলতে পারেন। তার চেয়ে বড় কথা সাম্পাওলি সম্ভবত অ্যাঙ্খেল দি’মারিয়ার জায়াগায় তাঁকে খেলাবেন। দি’মারিয়াকে প্রথম ম্যাচে খুবই দুর্বল দেখিয়েছে। যে কারণে তাঁকে তুলে নিতেও বাধ্য হন কোচ।
প্রথম দলে জায়গা পেতে পারেন, এমন খবর পাভন নিজেও হয়তো পেয়েছেন। যদিও তিনি বলেছেন, ‘‘আমার মনে হয় কোচ সব ক’টি পজিশন নিয়েই ভাবছেন। দেখি ম্যাচের দিন উনি কী ঠিক করেন। আমি নিজে আত্মবিশ্বাসী। সব কিছু ঠিকঠাকও চলছে। এখনও জানি না ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে আমি প্রথম একাদশে থাকব কি না।’’
অবশ্য শুধু মেসির পাশের জায়গাটা নিয়ে ভাবছেন না সাম্পাওলি। তাঁর মাথায় রক্ষণ নিয়েও যথেষ্ট উদ্বেগ। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে তিনি তিন ডিফেন্ডার রেখে রক্ষণ সাজাবেন। গ্যাব্রিয়েল মেরকাদো, নিকোলাস ওতামেন্দি এবং নিকোলাস তাগলিয়াফিকো। এঁদের মধ্যে মেরকাদো আইসল্যান্ডের বিরুদ্ধে পরিবর্ত হিসেবে নেমেওছিলেন। মঙ্গলবার আর্জেন্টিনার পক্ষ থেকে কথা বলতে এসেছিলেন এই মেরকাদোই। তিনি বলে যান, ‘‘আইসল্যান্ড ম্যাচের ভুল থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। ওই ম্যাচটা নিয়ে সারাক্ষণ ভাবলে চলবে না। আপাতত ক্রোয়েশিয়াকে ঘিরেই আমাদের যাবতীয় ভাবনা চলছে।’’
মেরকাদোইয়ের কথায় স্পষ্ট, অসম্ভব চাপে আছে আর্জেন্টিনা। তবে সব চেয়ে বেশি চাপ সেই মেসিরই। চারটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ন’টি লা লিগা জয়ের পরেও লোকে কথা বলছে, তাঁর বিশ্বকাপ না জেতা নিয়ে। প্রথম ম্যাচে পেনাল্টি থেকে গোল করতে না পারা এবং দলকে জেতাতে না পারা নিয়ে আলোচনা অব্যাহত। তার মধ্যেই এই রবিবার মেসি ৩১ বছরে পা দিলেন। আরও চার বছর পরে কাতার বিশ্বকাপে তিনি খেলবেন কি না, কেউ জানে না। হয়তো বিশ্বকাপ জেতার এটাই তাঁর শেষ সুযোগ। বলাবলি হচ্ছে, তিনি পেনাল্টি নষ্ট না করলে আইসল্যান্ড ম্যাচ থেকে হয়তো পুরো পয়েন্টই আসত। চাপ আন্দাজ করে ক্রোয়েশিয়ার মহাতারকা ফুটবলার লুকা মদ্রিচ আগেই বলছেন, ‘‘জিততেই হবে এমন অবস্থায় খেলতে নামা মানেই চাপে পড়ে যাওয়া। মেসিরাও চাপে থাকবে।’’ আর্জেন্টিনা শেষ বিশ্বকাপ জিতেছিল ১৯৮৬ সালে। সেই দিয়েগো মারাদোনার দেওয়া বিশ্বকাপ। আর তাদের শেষ বড় সাফল্য ১৯৯৩ সালে কোপা আমেরিকা জয়। রাশিয়া দীর্ঘ সময়ের খরা কাটাতে পারে কি না, তা নির্ভর করবে বৃহস্পতিবারের ম্যাচের উপর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy