দুরন্ত: ঘাসের কোর্টে শাসন ফেডেরার, নাদাল, সেরিনার।
ফের টেনিসে ফিরছে সোনার সময়। টেনিস বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী গ্র্যান্ড স্ল্যামের দিকে তাকালে ঠিক এটাই মনে হবে এখন।
এক দিকে যেমন উইম্বলডনের কোয়ার্টার ফাইনাল রাউন্ডের আগেই মেয়েদের সিঙ্গলসে প্রথম ১০ বাছাই ছিটকে গিয়েছেন। তেমনই গত দু’দশক ধরে টেনিস দুনিয়া শাসন করা তারকারা অবলীলায় এগিয়ে যাচ্ছেন খেতাব জয়ের দৌড়ে।
সোমবারই যেমন। উইম্বলডনের ‘ম্যানিক মানডে’ শাসন করলেন তিন তারকা রজার ফেডেরার, সেরিনা উইলিয়ামস এবং রাফায়েল নাদাল।
প্রথাগত ভাবে রবিবার উইম্বলডনের কোনও খেলা ছিল না। ঘাসের কোর্টগুলির পরিচর্যার জন্য যে ঐতিহ্য মেনে আসছে অল ইংল্যান্ড ক্লাব। এমনটাই বলা হয়। তাই সোমবার ফের খেলা শুরু হওয়ার পরেই যাবতীয় আকর্ষণ ছিল সেন্টার কোর্টে সুইস মহাতারকার উপর। অপ্রতিরোধ্য ফেডেরার হতাশ করেননি ভক্তদের। প্রি-কোয়ার্টারে স্ট্রেট সেটে জিতলেন ২০ গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক। বিপক্ষ ফ্রান্সের আদ্রিয়ান মানারিনোকে ৬-০, ৭-৫, ৬-৪ হারিয়ে ১৬ নম্বর উইম্বলডন কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা নিশ্চিত করে ফেলেন তিনি।
শুধু তাই নয়, ঘাসের কোর্টের গ্র্যান্ড স্ল্যামে এই জয়ের সঙ্গে সঙ্গেই টানা ৩২টি সেট জিতলেন তিনি। ২০০৫-’০৬ মরসুমে তাঁর টানা সেট জেতার রেকর্ড ছিল ৩৪। তাঁর সামনে সেই নজির ছুঁয়ে ফেলার হাতছানি এ বার শেষ আটের লড়াইয়ে। সোমবার মাত্র ১৬ মিনিটে প্রথম সেট জেতার পরে দ্বিতীয় সেটে ফেডেরারের ফরাসি প্রতিপক্ষ কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সেই চ্যালেঞ্জ সহজেই পেরিয়ে যান তিনি। তৃতীয় সেটে আর কোনও সুযোগ পাননি মানারিনো। ছ’বার মুখোমুখি হয়ে মানারিনোর বিরুদ্ধে ছ’নম্বর জয়ের পরে ফেডেরার বলেন, ‘‘প্রথম সেট জেতার পরে ম্যাচে টিকে থাকতে দ্বিতীয় সেটের শুরু থেকেই মানারিনোকে ঝাঁপাতে হত। ঠিক তখন থেকেই ম্যাচটা কঠিন হতে শুরু করে। যত কঠিন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নামতে হয়, নিজের খেলাটাও ততটাই উন্নত করতে হয়। উইম্বলডনের দ্বিতীয় সপ্তাহেও ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পেরে দারুণ লাগছে।’’ ফেডেরারের কোয়ার্টার ফানালের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকার কেভিন অ্যান্ডারসন। তিনি ৭-৬ (৪), ৭-৬ (২), ৫-৭, ৭-৬ (৪) হারান ফ্রান্সের গেল মফিসকে।
দাপট দেখালেন সেরিনা উইলিয়ামসও। ২৫ নম্বর বাছাই স্ট্রেট সেটে ইভজেনিয়া রদিনাকে ৬-২, ৬-২ হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলেন। সেরিনার মতোই রাশিয়ার রদিনাও এক সন্তানের মা। সেরিনা তাঁর আদর্শও। তাঁকে হারানোর পরে শেষ আটে সেরিনার মুখোমুখি ইটালির ক্যামিলা জিওর্জি। যে দাপটে সেরিনা কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছেন, অনেকেই তাঁকে সম্ভাব্য ফাইনালিস্ট দেখতে শুরু করে দিয়েছেন। রদিনার বিরুদ্ধে জিততে গিয়ে যেমন সেরিনা সোমবার ৩০টা উইনার এবং ১০টা এস সার্ভিস মারেন। যাতে স্পষ্ট ধীরে ধীরে বিধ্বংসী ছন্দে ফিরতে শুরু করেছেন ২৪ গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী।
বিশ্বের ১২০ নম্বরকে হারিয়ে ১৩ নম্বর উইম্বলডন কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার পরে সেরিনাকে প্রশ্ন করা হয় এই নিখুঁত জয়ে তিনি কতটা সন্তুষ্ট। মার্কিন তারকা বলেন, ‘‘আমি ভীষণ খুঁতখুঁতে। সব সময়ই আমি কিছু না কিছু ভুল খুঁজে পাই। এই ম্যাচটা খুবই ভাল হয়েছে। আমার প্রতিপক্ষ দারুণ শট নিচ্ছিল। ঠিক এই কারণেই প্রতিযোগিতায় এত দূর আসতে পেরেছে ও। স্কোরলাইন যা বলছে তার চেয়ে ম্যাচটা কিন্তু কঠিন ছিল।’’
তবে সবচেয়ে চমকপ্রদ জয় বোধহয় পেলেন রাফায়েল নাদাল। বিশ্বের এক নম্বর কোয়ার্টার ফাইনালে স্ট্রেট সেটে জয় পান চেক প্রজাতন্ত্রের জিরি ভেসিলির বিরুদ্ধে। ফল স্প্যানিশ তারকার পক্ষে ৬-৩, ৬-৩, ৬-৪। এই জয়ের ফলে ২০১১ মরসুমের পরে প্রথম বার উইম্বলডনের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলেন তিনি। সবচেয়ে বড় কথা শেষ আটে ওঠার পথে একটিও সেট হারাননি তিনি। তৃপ্ত স্প্যানিশ তারকা ম্যাচের পরে বলেন, ‘‘খুব গুরুত্বপূর্ণ জয় পেলাম। এ ভাবে উইম্বলডনে এগোতে পারছি বলে দারুণ লাগছে। এখানে খেলা চারটে ম্যাচই ইতিবাচক হল আমার পক্ষে। এক বছর ঘাসের কোর্টে খেলিনি। এই ছন্দটা উপভোগ করে যেতে চাই।’’
ভারতীয় সমর্থকদের জন্যও সোমবার ভাল খবর। দ্বিভীজ শরন এবং নিউজিল্যান্ডের আর্টেম সিটাক পুরুষদের ডাবলসে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছেন। এই প্রথম উইম্বলডনের শেষ আটে উঠলেন ভারতের ডেভিসকাপার। দু’সেটে পিছিয়ে পড়ার পরে জোনাথন এরলিচ এবং মার্সিন মাটকোওস্কির বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়িয়ে দ্বিভীজরা জেতেন ১-৬, ৬-৭ (৩), ৬-৪, ৬-৪, ৬-৪।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy