অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটার নাথান ম্যাকসুইনি। ছবি: সমাজমাধ্যম।
ডেভিড ওয়ার্নারের অবসরের পর নতুন ওপেনার খোঁজার জন্য হাতড়াচ্ছিল ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। ঘরোয়া ক্রিকেটে খুঁজতে গিয়ে উঠে আসছিলেন সেই পুরনো মুখেরাই। তবে নির্বাচকদের পরিশ্রম সার্থক করলেন একজনই। নাথান ম্যাকসুইনি। পার্থ টেস্টে যাঁর অভিষেক প্রায় নিশ্চিত। অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটে তরুণদের মধ্যে সবার আগে নাম উঠে এসেছে তাঁর। নির্বাচকেরাও দলে নিতে দেরি করেননি।
তিন বছর আগে রাজ্য বদল
২০২১-২২ মরসুমে অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটের মরসুম শুরুর আগে কুইন্সল্যান্ড থেকে দল বদলে সাউথ অস্ট্রেলিয়ায় চলে গিয়েছিলেন ম্যাকসুইনি। তখন মাত্র পাঁচটি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা ছিল তাঁর। কেউ খুব একটা মাথা ঘামাননি। তিনটি গ্রীষ্মের পর সেই ম্যাকসুইনিই এখন আলোচনার কেন্দ্রে। কুইন্সল্যান্ডের প্রাক্তন সতীর্থ উসমান খোয়াজার সঙ্গে ভারতের বিরুদ্ধে ওপেন করবেন তিনি। সামলাতে হবে যশপ্রীত বুমরা, মহম্মদ সিরাজদের।
দলে জায়গা আদায় করে নেওয়ার কৃতিত্ব পুরো ম্যাকসুইনিরই। প্রতি মরসুমে নিজেকে উন্নত করেছেন। সাম্প্রতিক কালে ঘরোয়া ক্রিকেটে তাঁর চেয়ে বেশি সাফল্য কারও নেই। সাউথ অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার একটা সিদ্ধান্তই তাঁর জীবন বদলে দিয়েছে। ম্যাকসুইনি যোগ দেওয়ার আগে পর্যন্ত সাউথ অস্ট্রেলিয়া বিধ্বস্ত একটি দল ছিল। টানা দুই মরসুম শেফিল্ড শিল্ডে একটিও ম্যাচ জিততে পারেনি। সেই কাঙ্খিত জয় আসে ম্যাকসুইনি দলে যোগ দেওয়ার পর। অপরাজিত ৯৯ রান করে দলকে জিতিয়েছিলেন।
পরের মরসুমের প্রথম ম্যাচে ম্যাকসুইনিরই শতরানে আবার জেতে সাউথ অস্ট্রেলিয়া। তার পরের ম্যাচে আবার শতরান এবং আবার দলের জয়। তত দিনে নিজেকে সাউথ অস্ট্রেলিয়া দলে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছেন ম্যাকসুইনি।
ঠান্ডা মাথার ক্রিকেটার
ম্যাকসুইনির উত্থানের নেপথ্যে অন্যতম কারণ হল তাঁর ঠান্ডা মাথা। ক্রিজ়ে নেমে শান্ত থাকতে পারেন। সব সময় নিজের উন্নতির চেষ্টা করেন। কিছু শেখার চেষ্টা করেন। বার বার দলকে সমস্যার থেকে বার করে এনেছেন। নিজের সেরাটা দিয়েছেন। ২০২২-২৩ মরসুম শেষ হওয়ার আগেই অস্ট্রেলিয়ার ‘এ’ দলে জায়গা করে নিয়েছিলেন ম্যাকসুইনি। তা-ও আবার অধিনায়ক হিসাবে। নিউ জ়িল্যান্ড ‘এ’ দলের বিরুদ্ধে পর পর দু’টি অর্ধশতরান করে নির্বাচকদের আস্থার দাম রাখেন।
২০২৩-২৪ মরসুমে তাঁকে সাউথ অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক করে। নিউ সাউথ ওয়েলসের বিরুদ্ধে শতরান করে মরসুম শুরু করেন ম্যাকসুইনি। কয়েক সপ্তাহ পরে তাঁর শতরানে গাব্বায় এক দশক পর জেতে সাউথ অস্ট্রেলিয়া। তত দিনে ব্যাটিং অর্ডারে তিনে উঠে এসেছেন ম্যাকসুইনি। তিনে নেমে মাত্র পঞ্চম ইনিংসে শতরান করেন তিনি। গত বছর অক্টোবরেই টেস্ট দলে ঢোকার দাবি জোরালো করেছিলেন।
ওয়ার্নারের অবসর এবং ম্যাকসুইনির উত্থান
ওয়ার্নারের জায়গায় কাকে নেওয়া হবে তা ভেবে চুল ছেঁড়ার দশা হয়েছিল ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচকদের। ম্যাকসুইনি আগে থেকেই তাঁদের নজরে ছিলেন। কিন্তু পুরনো দুই মুখ মার্কাস হ্যারিস এবং ক্যামেরন ব্যানক্রফ্টকে নিয়েও ভাবনাচিন্তা চলছিল। ছিলেন তরুণ স্যাম কনস্টাসও। তবে অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলের হয়ে ভারত ‘এ’ দলের বিরুদ্ধে ম্যাকসুইনির ইনিংস টেস্ট দলে তাঁর জায়গা পাকা করে দেয়। মুকেশ কুমার এবং প্রসিদ্ধ কৃষ্ণের বোলিং সামলে ৮৮ রান করে দ্বিতীয় ম্যাচে দলকে জেতান। ম্যাচের পরের দিনই দলে জায়গা পান।
অভিষেকের আগে কী বললেন
দেখে কে বলবে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামছেন! মাঠে নামার আগেও ঠান্ডা মানসিকতা। সোমবার ম্যাকসুইনি বলেছেন, “যে কাজ আমাকে দেওয়া হয়েছে তা ভাল ভাবেই করতে পারব। নিজের সেরা ব্যাটিংটাই করছি। আশা করি শুক্রবার নিজের ক্ষমতার পরিচয় দিতে পারব।” সমালোচনা কি কানে ঢুকেছে? ম্যাকসুইনির সপাটে হুক, “সমালোচনা তো হবেই। যে কোনও নতুন ক্রিকেটার দলে এলেই সমালোচিত হতে হয়। দেশের হয়ে খেলতে নামলে এ সব সহ্য করাও শিখতে হয়। যাঁরা এ ধরনের চাপ সামলে অভিজ্ঞ তাঁদের কথা শুনে নিজেকে তৈরি করেছি। আমার পাশে অনেকে রয়েছে। তাদের গর্বিত করতে চাই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy