Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪

উপভোগই করব অবসর: ফেডেরার

তবে গত ১৪ মাসে যতই তিনি হাঁটুর চোট কাটিয়ে ফেরার পরে তিনটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতুন না কেন, বয়সটা কিন্তু থেমে নেই, ফেডেরার ভক্তদের জন্য বেদনাদায়ক হলেও বাস্তবটা হল, তিনিও টেনিস থেকে অবসরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৪৬
Share: Save:

গত ১৪ মাসে তিনি যে অবিশ্বাস্য ফর্ম দেখিয়েছেন তাতে বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে তাঁর এক নম্বরে উঠে আসায় অনেকেই অবাক নন। যেন এটা প্রত্যাশিতই ছিল। হোক না সেটা বিশ্বরেকর্ড। হোক না তিনি ৩৬ বছর বয়েসে নজিরটা গড়লেন। তাঁর নাম যে রজার ফেডেরার।

তবে গত ১৪ মাসে যতই তিনি হাঁটুর চোট কাটিয়ে ফেরার পরে তিনটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতুন না কেন, বয়সটা কিন্তু থেমে নেই, ফেডেরার ভক্তদের জন্য বেদনাদায়ক হলেও বাস্তবটা হল, তিনিও টেনিস থেকে অবসরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। ২০টি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক, যাঁর গোটা জীবনটাই টেনিসকে কেন্দ্র করে, কোর্টে যাঁর টেনিস-শিল্প দেখেই একটা প্রজন্ম বড় হয়েছে, তিনি যখন অবসর নেবেন, কেমন লাগবে? তিনি নিজে কখনও ভেবেছেন?

‘‘২০১৬-এ চোটের জন্য যখন ছ’মাস কোর্টের বাইরে চলে গিয়েছিলাম তখন কিছুটা আভাস পেয়েছিলাম অবসরের পরের দৃশ্যটার। এবং আমি খুব উপভোগ করেছি সেটা,’’ মার্কিন সংবাদমাধ্যমে বলেছেন ফেডেরার। তিনি বলেন, এই সময়টায় পরিবারের সঙ্গে অনেকটা সময় কাটানোর সুযোগ পেয়েছেন। আর তাঁর সমাজসেবী সংস্থা ‘রজার ফে়ডেরার ফাউন্ডেশন’-এর কাজে আরও ফোকাস করতে পেরেছিলেন কোর্টের বাইরে থাকার জন্য। তাঁর সংস্থা আফ্রিকায় বাচ্চাদের শিক্ষার প্রসারে কাজ করে। ‘‘আমার কখনই ওই সময়টায় একঘেয়েমি লাগেনি। তাই অবসরের ব্যাপারটা আমায় খুব একটা ভাবায় না,’’ বলেন সুইস কিংবদন্তি। সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘আমার দারুণ একটা বন্ধু-বান্ধবের দল রয়েছে। বিশেষ করে আমার স্ত্রী এবং বাবা-মা মানুষ হিসেবে দারুণ। তাই আমি সবসময়ই মনে করি অবসরের পরে বাড়িতে আমার সময়টা খুব ভাল কাটবে।’’

ফেডেরার ভক্তরা অবশ্য স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারেন। তাঁর এখনই অবসর নেওয়ার কোনও তাড়াহুড়ো নেই। ‘‘এক দিক থেকে দেখলে অবসরের জন্য আমার তর সইছে না। তবে অবসরের ব্যাপারটা হতে এখনও সময় লাগবে। এক জন টেনিস খেলোয়াড় হিসেবে আমার সময়টা এখন দারুণ যাচ্ছে,’’ বলেন ফেডেরার। রটারডাম ওপেনে তিনি এক নম্বরে উঠে আসেন ছ’বছর পরে। গত সপ্তাহে নেদারল্যান্ডসের রবিন হাস-কে হারিয়ে। এর পরে তিনি ফাইনালে তাঁর চেয়ে প্রায় ১০ বছরের জুনিয়র গ্রিগর দিমিত্রভকে উড়িয়ে দিয়ে চ্যাম্পিয়ন হন। অনেকের কাছেই তাঁর এক নম্বরে আসাটা অবাক করার মতো না হলেও ফেডেরার নিজেই কিন্তু ব্যাপারটা বিশ্বাস করতে পারছেন না। ‘‘এক নম্বরে উঠে আসাটা সত্যিই আমাকে খুব অবাক করেছিল। কারণ ২০১৬-এ অস্ত্রোপচার হওয়ার পরে জানতাম না আর কোনও দিন গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিততে পারব কি না। তাই এটা আমার সেরা প্রত্যাবর্তন।’’

ফেডেরারের হাঁটুর অস্ত্রোপচার হয় দু’বছর আগে। চোটটা টেনিস খেলতে গিয়ে বা অনুশীলনে লাগেনি। লেগেছিল তাঁর সন্তানদের স্নান করাতে গিয়ে। শেষ পর্যন্ত তিনি টেনিস কোর্টে ফিরে আসেন গত মরসুমে দীর্ঘ রিহ্যাবের পরে। তাঁর এত সাফল্য এবং জনপ্রিয়তার কারণ কী?

ফেডেরার মনে করেন, যে ভাবে তিনি বড় হয়ে উঠেছেন সেটাই তাঁকে এত সাফল্য অর্জন করতে সাহায্য করেছে। ‘‘বাবা-মা সবসময় আমায় মাটিতে পা রেখে চলতে শিখিয়েছে। আমি একটা সাধারণ গ্রামের, সাধারণ শহরের, সাধারণ দেশ থেকে উঠে এসেছি। আমার মনে হয়, এ রকম একটা জায়গায় আমার বড় হয়ে ওঠাটা দারুণ ছিল।’’ পাশাপাশি টেনিস কোর্টের প্রতিদ্বন্দ্বীদেরও ফেডেরার প্রচণ্ড সম্মান দেন। তিনি বলেন, ‘‘আজ আমি যে জায়গায় উঠে এসেছি তাঁর কারণ ওরা আমায় উন্নতি করতে সাহায্য করেছে।’’ তবে জনপ্রিয়তার চূড়োয় থাকলেও ফেডেরার জানেন সমস্ত টুর্নামেন্ট তিনি জিততে পারবেন না। তিনি বলেন, ‘‘আমি মানুষ হিসেবে খোলামেলা এবং সৎ থাকার চেষ্টা করি। জানি সবাইকে খুশি করতে পারব না। তবে যখনই আমি খেলাটার প্রতিনিধিত্ব করতে নামি সব সময় চেষ্টা করি নিজের সেরাটা দিতে।’’

আপাতত তাঁর লক্ষ্য চলতি মরসুমে আসন্ন টুর্নামেন্টগুলোতে নিজের তাজ ধরে রাখা। অস্ট্রেলিয়া ওপেনে তিনি এই লক্ষ্যে সফল। এ বার নতুন চ্যালেঞ্জ শুরু হচ্ছে মার্চে ইন্ডিয়ান ওয়েলসে এবং এপ্রিলে মায়ামিতে। ফেডেরার ভক্তরা জানেন, ফেডেরার তাজ রক্ষা করতে পারুন বা নাই পারুন একটা ব্যাপার আবার মন্ত্রমুগ্ধ করে দেবে—কোর্টে তাঁর সেই অনবদ্য টেনিস, মানে শিল্প।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy