দুই সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে এবারের প্রেম দিবসে মজে রয়েছেন সাহা দম্পতি। ছবি - ফেসবুক।
নেট জগতে অর্কুট ইতিহাস। তবুও সেই অর্কুট এখনও ওঁদের মনে বেঁচে আছে। কারণ অর্কুটই যে সেতু বন্ধনের কাজটা করেছিল, যা এখনও অটুট।
২০০৭ সালে অর্কুটে আলাপ। পার্ক স্ট্রিট মোড়ে ফ্লুরিজের সামনে প্রথম দেখা। লুকিয়ে লুকিয়ে সিনেমা দেখতে যাওয়া। এরপর ২০১১ সালে হঠাৎ করে বিয়ে। এ ভাবেই সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কোলে মার্কেটের মেস বাড়ি থেকে সাউথ সিটির সাজানো ফ্ল্যাট। এক আকাশের নীচে ১৪ বছর কাটিয়ে দিলেন ঋদ্ধিমান সাহা-দেবারতি। ধোঁয়া ছাড়ার প্রতিশ্রুতি নয়। বরং বড় কন্যা আনভি ও কোলের ছেলে অনভয়কে নিয়ে নতুন স্বপ্ন দেখা।
যদিও এবারের ভ্যালেন্টাইন দিবস সাহা দম্পতির কাছে একটু অন্য রকম। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ চলছে। দলেও রয়েছেন পাপালি। পরিবারকে সঙ্গে রাখার অনুমতি দিয়েছে বিসিসিআই। তাই স্ত্রী দেবারতির ঠিকানা চেন্নাইয়ের টিম হোটেল। এমন বিশেষ দিনে ‘মনের মানুষ’ সঙ্গে রয়েছেন। তবুও ওঁর আক্ষেপ রয়েছে। কারণ, ‘সুপারম্যান’ মাঠে নয়, ড্রেসিংরুমে বসে আছেন।
প্রথম ভালবাসা বলে কথা। তাই দেবারতির কাছে এক দশকের স্মৃতি এখনও সতেজ। মনে পড়ে যায় সেই দিনগুলির কথা। চেন্নাইয়ের টিম হোটেল থেকে আনন্দবাজার ডিজিটালকে বলছিলেন, “অর্কুটে কে কাকে প্রথম বন্ধুত্বের বার্তা পাঠিয়েছিলাম মনে নেই। প্রথমবার দেখা করার পর কে প্রথম প্রেম নিবেদন করেছিলাম, সেটাও ঠিক মনে পড়ছে না। যতদূর মনে পড়ে ২০০৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় আইপিএল খেলতে যাওয়ার আগে ঋদ্ধিই প্রথম প্রেমের কথা বলে। তারপর থেকেই অজান্তে ওর প্রেমে আবদ্ধ হয়ে গেলাম।”
ভারতীয় ক্রিকেট মহলে ঋদ্ধিকে নিয়ে একটা কথা চালু আছে। ‘ছেলেটা বড্ড মুখচোরা। বড্ড উদাসীন।’ স্বামীর এমন আচরণে দেবারতিও মাঝেমধ্যে বিরক্ত হয়ে পড়েন। বললেন, “ওর দায়বদ্ধতা, খারাপ সময়েও ইতিবাচক মানসিকতা ভাল দিক। দ্বিতীয়বার গর্ভবতী থাকার সময় ও নিউজিল্যান্ডে ছিল। এরপর রঞ্জি ফাইনাল, আইপিএল, অস্ট্রেলিয়া সফর লাগাতার ক্রিকেট চলছেই। তবে ঘরে না থাকলেও ও কিন্তু সবসময় আমার খোঁজ নিয়েছে। তবে ওর অনেক খারাপ দিকও আছে। সেটাও জানিয়ে রাখা দরকার। সবচেয়ে খারাপ ব্যাপার হল ও নিজের জন্য কিছুই বলবে না। খুবই উদাসীন। মাঠে ও যেমন নির্লিপ্ত, আগ্রাসী মানসিকতা দেখায় না, সংসারের ক্ষেত্রেও ঠিক তাই। ফলে ওর সঙ্গে প্রচুর ঝগড়াও হয়। তবে সেটা শুধুই আমার তরফ থেকে। ঝগড়ার সময় আমাকে আবার খুঁচিয়ে ও চুপ করে যায়। এতে আরও রাগ বাড়ে।”
দীর্ঘ সম্পর্কে অনেক প্রেম দিবস একসঙ্গে কাটালেন। এবারও দুজন কাটাবেন অনেকটা সময়। তবে এ বার জৈব বলয়ে থাকার জন্য বাইরে বেরনোর উপায় নেই। টিম হোটেলেই নৈশভোজ সারতে হবে। যদিও এমন বিশেষ দিনের প্রসঙ্গ এলে দেবারতির কাছে একটা মুহূর্ত বারবার ফিরে আসে। ২০১২ সাল। সেবার পাপালির ১৭০ রানের উপর ভর করে দলীপ ট্রফি জিতেছিল পূর্বাঞ্চল। সেই ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রিয় মানুষের পাশে ছিলেন। একে তো জয়ের আনন্দ, অন্যদিকে প্রেম দিবসে প্রিয় মানুষের কাছে থাকা।
এমনই টুকরো টুকরো ভাল-মন্দ স্মৃতি নিয়েই ওঁরা বেঁচে আছেন দুই সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে। সেলিব্রেটি সত্ত্বাকে দূরে সরিয়ে রেখে। শহরের আর পাঁচজন মধ্যবিত্ত মানুষের মত। তবুও দেবারতির একটা আক্ষেপ থেকেই গেল। ওঁর ‘মনের মানুষ’ ড্রেসিংরুমে বসে, আর ঋষভ পন্থ উইকেটের পিছনে রয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy