রাফায়েল নাদাল বনাম রজার ফেডেরার। ছবি: এএফপি।
বিশ্ব টেনিসের শ্রেষ্ঠ সময় যাচ্ছে এই মুহূর্তে। কিন্তু যে ভাবে সেটা এল তা বোধহয় কেউই ভাবতে পারেনি। বিশেষ করে প্লেয়াররা, যারা এই সেরা সময়টা আনল। এটা ঠিক যে, টুর্নামেন্টের শেষ দু’দিন অস্ট্রেলীয় ওপেন যে মহানাটক আমদানি করেছে সেটা কোনও দুর্ঘটনা নয়। শনিবার ফাইনালে ছত্রিশের একটা মেয়ে মুখোমুখি হয়েছিল পঁয়ত্রিশের আর একজনের। রবিবার আরও দু’জন ‘ওটি’ (তিরিশের বেশি) একে অপরের মুখোমুখি হচ্ছে। যারা খেলাটার সবচেয়ে জনপ্রিয় আর সফল দুই পুরুষ। সবচেয়ে বড় কথা, মেলবোর্ন থেকে অ্যান্ডি মারে আর নোভাক জকোভিচের বিদায়ের পর প্রত্যেকে এই ফাইনালটাই দেখার অপেক্ষায় ছিল।
কিন্তু স্বয়ং দুই ফাইনালিস্ট কি এটা ভেবেছিল? রজার ফেডেরারের ফিটনেস নিয়ে একটা প্রশ্ন ছিল। গত বছর উইম্বলডনের পর চলতি অস্ট্রেলীয় ওপেন-ই ওর প্রথম বড় টুর্নামেন্ট। রাফায়েল নাদাল-ও ওর চোট-আঘাত সারিয়ে তুলতে গত অক্টোবর থেকে খুব বেশি ম্যাচ খেলেনি। আর দু’জনের কেউই তো এখন আর কচি খোকা নয়। রজার ৩৫, রাফা ৩০।
রাফার সবচেয়ে কঠিন ম্যাচ ছিল তৃতীয় রাউন্ডে। সেটাই ওর ‘সিগনেচার’ ম্যাচ ছিল। যেটাতে জার্মানির আলেকজান্ডার জেরেভকে পাঁচ সেটে হারিয়েছিল। আমার মতে তার পর থেকেই নাদাল বিশ্বাস করতে শুরু করে, এ বছরের ওপেনে ওর জন্য বড় কিছু অপেক্ষা করে আছে। তার পর, ওহ! শুক্রবারের সেই সেমিফাইনাল। ম্যাচটার ধারাভাষ্যে ছিলাম। ওটা একটা মহাকাব্যিক ম্যাচ। বহু-বহু বছরে আমার দেখা অন্যতম সেরা ম্যাচ!
এ রকম একটা আবেগে ভরা ম্যাচ জেতার পরে রাফার মধ্যে আর কতটা জ্বালানি অবশিষ্ট আছে সেটাও একটা প্রশ্ন! ফাইনালের আগে একটা দিন অতিরিক্ত বিশ্রাম পেলেও রজারকে নিয়েও একই প্রশ্ন উঠবে। ওয়ারিঙ্কার বিরুদ্ধে রজারের ‘ফাইভ-সেটার’ও ওকে খাদের কিনারায় পৌঁছে দিয়েছিল। দু’জনের যে কেউই তাতে পা পিছলে পড়তে পারত। ফলে রবিবার রাফা-রজার, দু’জনই শারীরিক ভাবে কমই চাঙ্গা থাকবে। অনেক দিন পরে এটা সবচেয়ে দর্শনীয় একটা গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনাল হবে। সাধারণত ফ্যানরা যে কোনও এক দিকে ঢলে থাকে, কিন্তু আজ মনে হচ্ছে গ্যালারিতে রাফা-রজারের ভক্তরাও সমান দু’ভাগে ভাগ হয়ে যাবে। তবে দিনের শেষে সব কিছুই আপনার ললাটলিখন। দুই মহাপ্রতিদ্বন্দ্বীই যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। ২০০৮ উইম্বলডন ফাইনালকে অনেকে বলে থাকে রাফা-রজারের সেরা ম্যাচ। কিন্তু কে বলতে পারে আজ আবার একটা মহাকাব্যিক ম্যাচ দেখব না আমরা?
কেরিয়ারের এই অবস্থায় দু’জনের কাছেই এই মেজরটা জেতার গুরুত্ব অপরিসীম। এমন নয় যে, এই ওপেনটা ওদের দরকার। ইতিমধ্যেই দু’জনের গ্র্যান্ড স্ল্যাম কেরিয়ার অবিশ্বাস্য রকমের উজ্জ্বল। কিন্তু আজকের গ্র্যান্ড স্ল্যামটা যে জিতবে তার কেরিয়ারে ট্রফিটা যাকে বলে ‘আইসিং অন দ্য কেক’ হবে।
ভবিষ্যদ্বাণী নয়, আমি শুধু প্রার্থনা করছি, আর একটা মহাকাব্য যেন দেখতে পাই। আশা করছি, দু’জন প্লেয়ারই ফিট থাকবে। আশা করছি, দু’জনই চাপ সামলাবে। সবচেয়ে বড় কথা, আমি আশা করছি সুন্দর টেনিস দেখার।
রজার ৩ রাফা ১
রড লেভার
সার্ভটা ভাল করলে রজার হয়তো কিছুটা এগিয়ে থাকবে। লড়াইটা আসলে নাদালের ফোরহ্যান্ড আর রজারের ব্যাকহ্যান্ডের। কয়েক বছর আগে যা নিয়ে অস্বস্তিতে ছিল রজার। কিন্তু এখন বড় মাথার র্যাকেট নিয়ে খেলে। আর ওজনও কিছুটা বাড়ায় শক্তিটাও বেড়েছে ওর। ফলে নাদালের বিষাক্ত টপস্পিনগুলো ও আরও ভাল সামলাতে পারবে নিশ্চয়ই। তবে নাদাল সেটা বুঝে গেলেই কিন্তু আরও মারাত্মক ফোরহ্যান্ড মারবে।
রয় এমারসন
ফেডেরারকেই আমি সবসময় ফেভারিট বাছি। কারণ, ও-ই আমার বেশি পছন্দের। ওর সার্ভিসটা খুব ভাল হচ্ছে। আর ও যখন ভাল সার্ভ করে, তখন পাঁচ সেটে ওকে হারানো কঠিন। তবে ফিটনেসে রাফা এখন সেরা জায়গায় রয়েছে। দু-সেট পর যদি রজার মেডিক্যাল ব্রেক নিয়ে নেয়, তা হলে আবার কী হবে কে জানে।
প্যাট র্যাফটার
আমার বাজি নাদালের দিকে। কিন্তু সেমিফাইনালে যে ধকল নিয়েছে, সেটা ও কী করে সামলায়, দেখার। দু’জনের কাছেই ক্লান্তিটা বড় চ্যালেঞ্জ। কখনও দু’দিনের বিশ্রামে আবার ছন্দ হারিয়ে যায়। রাফাকে হারাতে গেলে ফেডেরারকে কিছুটা হলেও ওর খেলায় বদল আনতে হবে। আরও বেশি আগ্রাসন চাই। নেটে আরও বেশি আসা চাই ওর।
প্যাট ক্যাশ
সব কিছুই রজারের দিকে ঝুঁকে। ফাস্ট হার্ডকোর্ট। রাতের সময়টা ফেডেরারের পক্ষে খুব ভাল। লো-বাউন্সিং বলগুলো ওর পক্ষে এখন খুব ভাল। শারীরিক ভাবেও একেবারে তাজা রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy