মহড়া: আজ, রবিবার প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। তার আগে অনুশীলনে ব্যস্ত ভারতীয় দল। শনিবার। পিটিআই
পল্টন বাজার সংলগ্ন এলাকা দিয়ে মিছিল যাচ্ছিল খানাপড়ার উদ্দেশে। তাঁদের মুখে কোনও স্লোগান নেই। হাতে শুধু কয়েকটি পোস্টার ও ব্যানার। বেশির ভাগ পোস্টারেই লেখা, ‘সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন মানছি না। পুরনো ভারত ফিরিয়ে দাও।’
অসম ক্রিকেট সংস্থার উদ্বেগ, এই প্রতিবাদ যেন মাঠে শুরু না হয়। তাই শুক্রবারই ঘোষণা করা হয়েছিল, পোস্টার নিয়ে মাঠে ঢোকা যাবে না। শনিবার জানিয়ে দেওয়া হল, অসমিয়া গামছা নিয়েও মাঠে আসা যাবে না। সর্ব অসম ছাত্র সংগঠনের এক প্রতিনিধি মাঠের বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন দু’দলের অনুশীলন দেখার জন্য। কিন্তু পুলিশের কড়াকড়িতে স্বপ্ন তাঁর পূরণ হয়নি। যখন জানতে পারলেন রবিবার পোস্টার, প্ল্যাকার্ড নিয়ে মাঠে আসা নিষিদ্ধ, বাধ্য হয়ে বলেই উঠলেন, ‘‘পোস্টার, গামছা নিষিদ্ধ করা হয়েছে ঠিক আছে। কিন্তু আমাদের স্লোগান কি আটকাতে পারবে?’’
মাঠের নিরাপত্তা নিয়ে একেই অস্বস্তিতে রয়েছে অসম ক্রিকেট সংস্থা। তার উপরে মাঠে প্রতিবাদী স্লোগান উঠলে কী করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে, তা জানা নেই কারও। শহরের এই অবস্থার বিষয় নিয়ে অধিনায়ক বিরাট কোহালিকেও প্রশ্ন করা হয়, ‘‘সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদ নিয়ে আপনার কী মত?’’ বিরাটের উত্তর, ‘‘যে বিষয়ে আমার পুরোটা জানা নেই, তা নিয়ে দায়িত্বজ্ঞানহীন ভাবে মন্তব্য করতে চাই না।’’ যোগ করেন, ‘‘নিরাপত্তার দিক থেকে যদিও কোনও সমস্যায় পড়তে হয়নি। রাস্তায় সে রকম কিছু নজরে পড়েনি।’’
অথচ এই শহরই সাক্ষী পাঁচ প্রতিবাদীর মৃত্যুর। এই উদ্বেগের শহরেই আজ, রবিবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি শুরু করবে ভারত। নতুন বছরে কোহালি প্রাধান্য দিচ্ছেন দলীয় প্রয়াসকে। টিম হাডলে বেশ কিছুক্ষণ বিরাটকে কথা বলতে দেখা যায়। কী নিয়ে দলের সঙ্গে আলোচনা করছিলেন? তাঁর উত্তর, ‘‘দল হিসেবে খেলার কথা বলেছি। ব্যক্তিগত সাফল্যের চাহিদা দলের ক্ষতি করতে পারে। তার চেয়ে দলের জন্য খেলার মনোভাব নিয়ে নামলে সার্বিক পারফরম্যান্সে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।’’ যোগ করেন, ‘‘গত তিন বছর ধরে এই সংস্কৃতি মেনেই খেলছি। আসলে ছোটবেলা থেকে কখনও জিজ্ঞাসা করা হয় না জিতলাম কি না। প্রশ্ন করা হয় তুমি কী করলে। এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে তাই দলীয় সংহতিতেই জোর দিতে চাই।’’ অনুশীলন শুরু হওয়ার পরে ফিল্ডিং করতে গিয়ে বাঁ-হাতের কড়ে আঙুলে আঘাত লাগে বিরাটের। পরে তিনটি নেটে অবশ্য ব্যাট করেন ভারতীয় অধিনায়ক।
১৮ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। তার আগে ১৫টিরও বেশি ম্যাচ পাচ্ছে ভারত। এই কয়েকটি ম্যাচের মধ্যেই বিরাটকে বেছে নিতে হবে সেরা ১৫ সৈনিককে। কী রকম দল চান? অধিনায়কের উত্তর, ‘‘আইসিসি প্রতিযোগিতা জেতার জন্য ব্যাটিংয়ে গভীরতা থাকা জরুরি। আমি দেখতে চাই শিখর, রাহুল ও আমি ব্যর্থ হলে নীচের দিকের ব্যাটসম্যানেরা কী ভাবে পরিস্থিতি সামলাচ্ছে। প্রথম দু’জনের সাফল্যের উপরে নির্ভর করে কোনও প্রতিযোগিতাই জেতা যায় না।’’
সকালে অনুশীলনে এসে হেড কোচ রবি শাস্ত্রীর সঙ্গে পিচ দেখে আসেন বিরাট। ২০১৮-তে যে পিচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ১০৭ বলে ১৪০ রান করেছিলেন, সেখানেই পরীক্ষা লাসিথ মালিঙ্গাদের বিরুদ্ধে। বিরাট মনে করেন, শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধেও বড় রানের খেলা হবে। পিচে হাল্কা ঘাস রাখা হয়েছে। প্রায় চার মাস পরে চোট সারিয়ে মাঠে ফিরছেন যশপ্রীত বুমরা। তাঁর সঙ্গেই থাকছেন নবদীপ সাইনি। তাঁদের জন্য কিছুটা সুবিধা তো থাকবেই। কিন্তু এই তথ্য উদ্বেগ বাড়াতে পারে শিখর ধওয়নের। টি-টোয়েন্টিতে শেষ ১৪টি ইনিংসে হাফসেঞ্চুরি নেই শিখরের। রোহিত শর্মা বিশ্রামে থাকায় তাঁর কাছে বড় সুযোগ রান করে দলে স্থায়ী জায়গা করে নেওয়ার। গত সিরিজে রোহিতের সঙ্গে ওপেন করে কে এল রাহুল প্রমাণ করেছেন, তিনি দারুণ ছন্দে। ক্রিকেটপ্রেমীদের প্রশ্ন, এটাই শিখরের শেষ সুযোগ নয় তো?
অন্য দিকে শ্রীলঙ্কা নিদাহাস ট্রফির পরে ভারতের বিরুদ্ধে কোনও টি-টোয়েন্টি খেলেনি। রবিবার থেকে তাদেরও বিশ্বকাপের প্রস্তুতি শুরু। টি-টোয়েন্টি যুগে দাপিয়ে বেড়ানো লাসিথ মালিঙ্গা তাদের অধিনায়ক। ১৫ মাস পরে টি-টোয়েন্টি দলে ফিরিয়ে আনা হয়েছে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথেউজের মতো তারকাকে। ফিরেছেন নিরোশন ডিকওয়েল্লাও। বুমরার সঙ্গে দীর্ঘদিন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে খেলা মালিঙ্গা বললেন, ‘‘বুমরার বৈচিত্র সম্পর্কে ক্রিকেটারদের বোঝানো হয়েছে। কিন্তু আসল কাজ ব্যাটসম্যানদেরই করতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy