সৌজন্য: ম্যাচের সেরা ওয়ার্নারের সঙ্গে করমর্দন কোহালির। এএফপি
মুম্বইয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজের প্রথম ম্যাচটা কী হয়, তা দেখার জন্য অধীর অপেক্ষায় ছিলাম। কারণ, আমার ব্যক্তিগত অভিমত, এই মুহূর্তে বিশ্ব ক্রিকেটে প্রথম সারির দল তিনটে। তারা হল ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড। আর বিশ্বকাপের পরে যে দেশগুলোর বিরুদ্ধে ভারত খেলেছে এ পর্যন্ত তারা এর পরের ধাপে। দেখা গেল বিশ্ব ক্রিকেটের দুই সেরা দেশের দ্বৈরথে প্রথম ম্যাচেই ১০ উইকেটে পর্যুদস্ত হল ভারত। তাও আবার ১২.২ ওভার বাকি থাকতে!
এ দিন ভারতের পারফরম্যান্সে আমি সত্যিই হতাশ। প্রশ্ন উঠতেই পারে, ভারতীয় বোলারেরা কী করল? রোজ কি ব্যাটসম্যানেরাই জেতাবে নাকি? ডেভিড ওয়ার্নার (১২৮) ও অ্যারন ফিঞ্চকে (১১০) তে কোনও সমস্যাতেই ফেলতে পারেনি বুমরা, শামিরা। মুম্বইয়ের ব্যাটসম্যান সহায়ক পিচে বুমরা প্রত্যাবর্তনের পরে ছন্দে নেই। মহম্মদ শামি চেষ্টা করেছে।
আমার মতে, এই দলে দরকার নবদীপ সাইনি ও কুল-চা জুটিকে (কুলদীপ যাদব ও যুজবেন্দ্র চহাল)। কারণ শার্দূল আমার মতে এখনও ওয়ান ডে ক্রিকেটের জন্য তৈরি নয়। বেশি রান দিয়ে ফেলে। সেখানে নবদীপ ওর এক্সপ্রেস গতি দিয়ে বিপাকে ফেলতে পারে। আর রবীন্দ্র জাডেজা উইকেট নেওয়ার চেয়ে বিপক্ষের রান তোলার গতি থামাতে দক্ষ। তাই স্পিনার হিসেবে দরকার কুল-চাকে। কারণ ওদের ২০ ওভার খেলা বিপক্ষের কাছে সমস্যার। এতে বোলিংয়ের ঝাঁঝ বাড়বে।
গত দু’বছরে ভারতীয় দলের ওয়ান ডে ম্যাচে জয়ের স্কোরবোর্ডগুলি খতিয়ে দেখতে দেখা যাবে, এই ভারতীয় দল নির্ভর করে থাকে দু’জনের ব্যাটের উপরে। তারা হল রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহালি। ওদের একজন দীর্ঘ সময় টিকে গেলেই বিপক্ষ বোলাররা সমস্যা তৈরি করতে পারে না।
মাথায় রাখতে হবে, বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দল অস্ট্রেলিয়া। যেমন ওদের ব্যাটিং, তেমনই কামিন্সদের বোলিং বিভাগ। এমন দলের বিরুদ্ধে শুরুতেই এ দিন রোহিত আউট হয়ে গিয়েছিল। আর বিরাট যখন নামল, তখন ২৮ ওভার চলছে। ফলে শুরু থেকেই মারতে হত ওকে। যে সুযোগটা কাজে লাগিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
বুঝলাম না গত কয়েকটি ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও ভারত অধিনায়ক কেন তিন নম্বরে এল না। মানছি, শ্রীলঙ্কা বা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার একটা অবকাশ থাকে। কিন্তু বিশ্বের সেরা দলের বিরুদ্ধে সেই ঝুঁকি নেওয়া যায় না। ভারতকে জিততে গেলে বিরাটকেই তিনে আসতে হবে।
শিখর ধওয়ন (৭৪) ও কে এল রাহুল (৪৭) এ দিন ভাল খেলেছে। কিন্তু ওদের স্ট্রাইক রেট আমাকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। দু’জনেই বেশি বল খেলেছে। যার ফলে বিরাট বেশি বল খেলার সুযোগ পায়নি। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভারতকে জিততে গেলে বিরাটকে তিন নম্বরে নামতে হবেই। কারণ, দলের একদিক ধরে রেখে ইনিংস গড়ার দক্ষতায় বিরাট ও রোহিত অন্যদের চেয়ে এগিয়ে। তাই আমার মনে হয়, পরের ম্যাচ থেকে দলে কিছু পরিবর্তন দরকার। তিন ওপেনারই দারুণ খেলছে। তাই রোহিতের সঙ্গে শিখর ওপেন করুক। তিন নম্বরে আসুক বিরাট। আর চার নম্বরে আসুক রাহুল। তা হলে ব্যাটিং পোক্ত হবে। শ্রেয়স আইয়ার (৪) কে বড় দলগুলোর বিরুদ্ধে রান পেতে হবে। আর ঋষভ পন্থকে অনেক সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এ দিন মাথায় চোট পাওয়ায় কে এল রাহুল উইকেটরক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছে। আমার মনে হয় না, ঋষভ ও রাহুলের উইকেটরক্ষায় কোনও ফারাক রয়েছে। বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমার তো খেলা দেখে মনে হল রাহুলই এগিয়ে। নির্বাচক থাকার সময়ে একজন বাড়তি ব্যাটসম্যান খেলানোর জন্য আমরা রাহুল দ্রাবিড়কে উইকেটকিপার বানিয়ে একজন অতিরিক্ত ব্যাটসম্যান খেলাতাম। এ ক্ষেত্রে মণীশ পাণ্ডেকে খেলানো যেতে পারে ঋষভের জায়গায়।
বর্তমান সময়ে রান তাড়া করায় বিরাট কোহালির দলকেই ক্রিকেট বিশেষজ্ঞেরা সেরা বলছেন। কিন্তু আমার মনে হয়, আগে ব্যাট করলে কী ভাবে দলকে সুবিধাজনক অবস্থায় রাখা যাবে সেটাও শেখা দরকার রয়েছে বিরাটের দলের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy