ছন্দে: পুণেতে টেস্টের প্রথম দিনে চেনা মেজাজে বিরাট কোহালি। প্রতিপক্ষ পেসারদের এ ভাবেই ওড়ালেন। পিটিআই
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সিরিজের প্রথম টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করে নতুন রূপকথা তৈরি করেছিলেন মায়াঙ্ক আগরওয়াল। বীরেন্দ্র সহবাগের পরে ভারতীয় ওপেনার হিসেবে প্রথম ২০০ রানের গণ্ডি পেরিয়েছিলেন ১০ বছর পরে। কিন্তু বৃহস্পতিবার পুণের গাহুঞ্জে স্টেডিয়ামে খেলতে নামার আগের রাতে ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালি পরামর্শ দিয়েছিলেন, গত ম্যাচের সব কীর্তি ভুলে একেবারে শূন্য থেকে শুরু করার।
মায়াঙ্কের এই কাহিনি তুলে ধরলেন তাঁর ছোটবেলার কোচ আর মুরলীধর। প্রত্যেক দিন কোচের সঙ্গে ফোনে কথা হয় মায়াঙ্কের। বুধবার রাতেও ম্যাচের পরিকল্পনা নিয়ে কোচের সঙ্গে কথা হয়েছে তাঁর। কী বলেছিলেন মায়াঙ্ক? এ দিন টেস্টে তাঁর ছাত্র দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করার পরে উচ্ছ্বসিত কোচ। আনন্দবাজারকে ফোনে তিনি বললেন, ‘‘গত রাতে ফোন করে মায়াঙ্ক বলছিল সিনিয়ররা নাকি গত ইনিংসের কথা ওকে ভুলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘বিশেষ করে বিরাট। মায়াঙ্কের মুখেই শুনলাম, অধিনায়ক ওকে শূন্য থেকে শুরু করার পরামর্শ দিয়েছিল।’’ চেতেশ্বর পূজারার সঙ্গে ১৩৮ রানের জুটি গড়ে বিপক্ষ শিবিরের আতঙ্ক তৈরি করেছেন মায়াঙ্ক। ব্যাট করার সময় পূজারার সঙ্গে নিশ্চয়ই প্রচুর আলোচনা হয়েছে। তা নিয়ে কোচকে কী বললেন মায়াঙ্ক? মুরলী বলছিলেন, ‘‘পূজারা প্রচণ্ড খুশি। ওর খুব প্রশংসা করেছে। ড্রেসিংরুমে ফেরার পরে ওকে নাকি ‘বস’ বলে ডেকেছে।’’
কোচ নিজেও মায়াঙ্কের দুরন্ত ব্যাটিংয়ে উচ্ছ্বসিত। বলছিলেন, ‘‘ইনিংসটি খুব ভাল করে সাজিয়েছে। শুরুর দশ ওভারে রাবাডা ও ফিল্যান্ডারের বল নড়াচড়া করছিল। তখন শরীরের বাইরে বল তাড়া করছিল না। কিন্তু একাদশতম ওভারে রোহিত আউট হওযার পর থেকেই আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে মায়াঙ্ক। হয়তো বুঝতে পেরেছিল, প্রতি-আক্রমণের পথ বেছে নেওয়াই বিপক্ষ শিবিরে চাপ ফিরিয়ে দেওযার একমাত্র পথ।’’
অ্যানরিখ নর্ৎজের বল মাথায় লাগার পরেও ভয় পেতে দেখা গেল না মায়াঙ্ককে। তার পরের বলই পাঠিয়ে দিলেন বাউন্ডারির উদ্দেশে। ছাত্রের এই মনোভাব দেখে সব চেয়ে খুশি কোচ। বলছিলেন, ‘‘রান করার ইচ্ছে কতটা জোরালো হলে ঘণ্টায় ১৪০ গতির বল হেলমেটে লাগার পরেও ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা যায়, তা আমার জানা নেই। ছোটবেলা থেকেই ও রান করার জন্য মরিয়া। দেশের জার্সিতে সেই সুযোগ পেয়ে আরও নাছোড় হয়ে উঠেছে। একজন ছাত্রের থেকে এ ধরনের মনোভাবই আশা করে একজন কোচ।’’
ছোটবেলার প্রসঙ্গ তুললেই মায়াঙ্কের লিগ ক্রিকেটের দিনগুলো মনে পড়ে য়ায় কোচের। স্কুলে পড়ার সময় স্থানীয় টি-টোয়েন্টি লিগে ডাবল সেঞ্চুরি করে কর্নাটকের ক্রিকেটমহলে সারা ফেলে দিয়েছিলেন। অথচ এই আগ্রাসী ক্রিকেটই হয়ে উঠেছিল তাঁর পথের কাঁটা। একাধিক সেঞ্চুরি হাতছাড়া করে মায়াঙ্ক যখন হতাশ, প্রায় ঠিকই করে ফেলেছিলেন পাইলট হবেন, তখন কোচই তাঁর আত্মবিশ্বাস ফেরাতে সাহায্য করেন। মুরলীধরের কথায়, ‘‘বরাবরই চঞ্চল। উইকেটে দাঁড়িয়ে থাকতে কখনওই পছন্দ করত না। সব সময়েই নতুন কিছু করার তাগিদ ছিল ওর মধ্য। নতুন কোনও শট শিখলে নেটে অনুশীলন করে দেখার আগে ম্যাচে পরীক্ষা করে দেখত। তাই বাজে শট খেলে আউট হয়ে ফিরে আসার প্রবণতাও বেড়ে গিয়েছিল। তখন ধ্যানই হয়ে উঠেছিল ওর ওষুধ। এ ভাবেই মনকে শান্ত করে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সফল হতে শুরু করল মায়াঙ্ক।’’
এখন সে সবই ইতিহাস। প্রথম শ্রেণির গণ্ডি পেরিয়ে মায়াঙ্ক এখন টেস্ট ক্রিকেটের নতুন তারকা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy