সম্মান: রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের হাত থেকে রাজীব খেলরত্ন পুরস্কার নিচ্ছেন বিরাট কোহালি। মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি ভবনে। পিটিআই
এক জন শান্ত। সাফল্যের কোনও উচ্ছ্বাস নেই। অন্য জন উচ্ছ্বাস ঢেকে রাখতে পারেন না। প্রথম জন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। আর দ্বিতীয় জন ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহালি।
দু’জনের মধ্যে এতটা ফারাক থাকলেও যে প্রাক্তন অধিনায়কের কাছ থেকেই অধিনায়কত্বের শিক্ষা পেয়েছেন, তা স্বীকার করতে দ্বিধা নেই কোহালির। এক সাক্ষাৎকারে সম্প্রতি তিনি বলেছেন, ‘‘বেশির ভাগ সময়েই এমএস (ধোনি)-এর সঙ্গে ক্রিকেট নিয়ে কথা বলতাম। দলের সহ-অধিনায়ক হওয়ার আগেও ম্যাচ চলাকালীন ওর সঙ্গে প্রচুর আলোচনা করতাম। অধিনায়কত্বের শিক্ষাটা পেয়েছি ওর কাছ থেকেই। স্লিপে দাঁড়িয়ে সমানে লক্ষ্য করতাম ওকে।’’
অবসর সময়েও বিরাটের চিন্তায় শুধুই ক্রিকেট। বলছেন, ‘‘ক্রিকেট নিয়ে চিন্তা করতে পছন্দ করি বলেই অধিনায়কত্ব উপভোগ করি। উপভোগ করি রান তাড়া করে জিততে। ম্যাচের কোন সময় কোন সিদ্ধান্ত প্রয়োগ করা উচিত, তা নিয়ে ভাবতে পছন্দ করি।’’
সম্প্রতি ইংল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট সিরিজ ১-৪ হারলেও তিনিই ছিলেন ভারতীয় ব্যাটিংয়ের স্তম্ভ। পাঁচ টেস্টে বিরাট করেন ৫৯৩ রান। গড় ৫৯.৩০। তাই ক্রিকেটের সব চেয়ে পুরনো রূপ চার দিনের হয়ে যাক, তা কোনও ভাবেই চান না ভারতীয় অধিনায়ক। বিরাট বলেন, ‘‘টেস্ট ক্রিকেটে সফল হওয়ার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। ক্রিকেটের সব চেয়ে সুন্দর বিভাগের নাম টেস্ট। তাই পাঁচ দিনের জায়গায় চার দিনের টেস্ট করার কোনও যুক্তিই আমি দেখছি না।’’
বিশ্বজুড়ে টি-টোয়েন্টি লিগের উত্থান টেস্ট ক্রিকেটের জনপ্রিয়তায় কিছুটা হলেও প্রভাব ফেলেছে। তবুও টেস্ট ক্রিকেটে কোনও রকম বদলের প্রয়োজন দেখছেন না ভারত অধিনায়ক। বিরাটের কথায়, ‘‘ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকায় গেলে কিন্তু দেখা যায়, এখনও টেস্ট দেখার জন্য গ্যালারি ভরে দর্শক আসছে। কারণ, ওরা খেলাটা বোঝে। দর্শকদের সচেতনতার উপরেই পুরোটা নির্ভর করছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘টেস্ট অনেকটা পাঁচ দিনে একটি জীবন অতিবাহিত করার মতো। তাতে ওঠা-পড়া রয়েছে। এক দিন ভাল খেললেও পরের দিন আবার নতুন করে পুরোটা শুরু করতে হয়। কেউ যদি সত্যিই ক্রিকেট বোঝে, খেলাটাকে মন দিয়ে ভালবাসে, টেস্ট তাঁর পছন্দ হবেই। এখানে সফল হওয়ার অনুভূতিটাই আলাদা।’’
আইসিসি-র বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হবে ২০১৯ থেকে। যা নিয়ে উচ্ছ্বসিত এবং ইতিবাচক ভারতীয় অধিনায়ক। বিরাট বলেছেন, ‘‘আমার মনে হয় টেস্ট ক্রিকেটের জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। যা ক্রিকেটকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলবে। গোটা চ্যাম্পিয়নশিপ জুড়েই থাকবে উত্থান, পতন। যারা টেস্ট ভালবাসে, তাদের জন্য এটা দারুণ খবর।’’
বিরাট মনে করেন, দেশের ক্রিকেট পরিকাঠামোর উপরেও অনেকটা নির্ভর করে টেস্ট ক্রিকেটের উন্নতি। তাই প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটকে আরও উন্নত করে তোলার বার্তা দিয়েছেন ভারতীয় অধিনায়ক, ‘‘প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটকে যদি কম গুরুত্ব দেওয়া হয়, তা হলে টেস্ট খেলার প্রেরণাও হারাতে শুরু করে সে দেশের ক্রিকেটারেরা। তারই মধ্যে বেড়ে উঠছে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট। তাই প্রত্যেক দেশের ক্রিকেট বোর্ডেরই উচিত তাদের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটকে উন্নত করে তোলা। যদি ঘরোয়া ক্রিকেটের পরিকাঠামো উন্নত হয়, টেস্ট খেলার প্রেরণাও হারায় না সে দেশের ক্রিকেটারেরা।’’
ইংল্যান্ডে টেস্ট সিরিজ খেলে আসার পরে এখন বিশ্রামে রয়েছেন ভারত অধিনায়ক। আগামী মাসেই ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে মাঠে ফেরার কথা তাঁর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy