ছন্দে: দুরন্ত জয় রজারের (ডান দিকে)। জিতে উচ্ছ্বসিত নাদাল। এএফপি
প্রথম সেটে পিছিয়ে পড়ে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন। বসনিয়া হারজ়েগোভিনার দামির জ়ুমহুরকে হারিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের তৃতীয় রাউন্ডে পৌঁছলেন রজার ফেডেরার। ফল ৩-৬, ৬-২, ৬-৩, ৬-৪।
বুধবার প্রথম সেটে ৩-৬ হেরে গিয়েছিলেন ফেডেরার। সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে বেশি সময় নেননি কিংবদন্তি টেনিস তারকা। দ্বিতীয় সেট ৬-২ জিতে নেন তিনি। তৃতীয় সেটও জেতেন ৬-৩। চতুর্থ সেটে জ়ুমহুর কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। ৬-৪ জিতে তৃতীয় রাউন্ডে ওঠেন ফেডেরার।
যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে জয় দিয়ে অভিযান শুরু করলেন আর এক তারকা রাফায়েল নাদালও। প্রথম রাউন্ডে সহজ জয় পাওয়ার পরেই ভাল খবরটা পেলেন তিনি। বাছাই তালিকার প্রথম দশে থাকা তাঁর চার সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী বিদায় নিয়েছেন প্রথম রাউন্ড থেকেই। এই চার জন হলেন, দমিনিক থিম (চতুর্থ বাছাই), স্তেফানোস চিচিপাস (অষ্টম বাছাই), ক্যারেন কাশানভ (নবম বাছাই) এবং রবের্তো বাতিস্তা আউত (দশম বাছাই)। চার জনই নাদালের অর্ধের খেলোয়াড়। যার মানে হল, স্প্যানিশ তারকার ফাইনালে ওঠার পথ অনেকটাই পরিষ্কার হয়ে গেল।
প্রথম রাউন্ডে নাদাল সহজেই ৬-৩, ৬-২, ৬-২ উড়িয়ে দিলেন জন মিলম্যানকে। দ্বিতীয় বাছাই নাদালের কাছে দিনটা ভাল গেলেও যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে মঙ্গলবার বড় অঘটনের সাক্ষী হয়েই থাকল। এই ভাবে তারকাদের বিদায়কে বলা হচ্ছে বাছাইদের আতঙ্কের দিন। সাংবাদিক বৈঠকে নাদাল বলেছেন, ‘‘এটাই হল টেনিস। আর কী বলব। গ্র্যান্ড স্ল্যামের মতো প্রতিযোগিতায় উল্টো দিকে সব সময় কঠিন প্রতিপক্ষই থাকে। যে কারণে সতর্ক থাকতে হয়। আমি যেমন জানতাম, মিলম্যান খুব শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী। ভুল করলেই হারতে হবে।’’ যে চার বাছাই বিদায় নিলেন, তাঁদের নিয়ে নাদালের মন্তব্য এ রকম: চিচিপাস— ‘‘সামনে চ্যালেঞ্জটা বেশ কঠিন ছিল।’’ ক্যারেন— ‘‘ওর হারে অবাকই হয়েছি।’’ থিম— ‘‘দিন দশেক ধরে ওর শরীরটা ভাল যাচ্ছিল না। থিমের জন্য খারাপই লাগছে।’’ রবের্তো— ‘‘রবের্তো হেরে যাবে ভাবতে পারিনি। সত্যি কথা বলতে কী, ওর জন্য দুঃখই হচ্ছে।’’ তবে সহজ জয়ের দিনে মহিলা চেয়ার আম্পায়ারের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন নাদাল। সময় নষ্ট করার জন্য স্প্যানিশ তারকাকে সতর্ক করেছিলেন চেয়ার আম্পায়ার। ক্ষুব্ধ নাদাল তাঁকে বলেন, ‘‘আমি সার্ভ করার জন্য তৈরি। কিন্তু আপনি কি দেখতে পাননি, দর্শকদের চিৎকার থামার অপেক্ষায় ছিলাম আমি।’’
প্রথম দশের মধ্যে এখন নাদালের সামনে থাকছেন শুধু আলেকজান্ডার জ়েরেভ। তাঁকেও প্রথম রাউন্ডের বাধা টপকাতে পাঁচ সেট লড়তে হল। তার আগে ইতালির থোমাস ফাবিয়ানোর কাছে ৪-৬, ৬-৩, ৩-৬, ২-৬ হারেন থিম। চার ঘণ্টার লড়াইয়ে আন্দ্রে রুবলেভের কাছে হারেন চিচিপাস। এর পরে চেয়ার আম্পায়ারকে তীব্র আক্রমণ করেন তিনি। বলেন, ‘‘এই চেয়ার আম্পায়ার কোনও কারণে আমার উপরে রেগে ছিলেন কি না, জানি না।’’ পাঁচ সেটের লড়াইয়ে হারেন কাশানভ এবং বাতিস্তাও।
যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের প্রথম দু’দিনের পরে যা ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, পুরুষদের ফাইনালে দেখা যেতে পারে সেই নাদাল, রজার ফেডেরার এবং নোভাক জোকোভিচের মধ্যে যে কোনও দু’জনকে। তরুণ প্রজন্মের কেউ এখনও সে ভাবে চ্যালেঞ্জ খাড়া করতে পারেননি। টেনিসের ‘ফ্যাব থ্রি’ এখনও বাছাই তালিকায় প্রথম তিনটে জায়গা ধরে রেখেছেন। দশ বছর আগেও বছরের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যামে এই ফেডেরার, নাদাল, জোকোভিচই বাছাই তালিকায় প্রথম চারে ছিলেন। নাদাল বলছেন, ‘‘মনে হয় সেই ২০০৭ সাল থেকেই আমি, রজার আর নোভাক এই জায়গায় আছি। আমাদের তিন জনের কাউকে এই নিয়ে প্রশ্ন করলে জবাব পাবেন, ব্যাপারটা বেশ কঠিন। কিন্তু ঘটনা হল, আমরা এই জায়গাটা ধরে রাখতে পেরেছি।’’
নাদাল নিজে ১৫ বছর ধরে সার্কিটে আছেন। একের পর এক চোট-আঘাতের ধাক্কা সামলাতে হয়েছে তাঁকে। হাসতে হাসতে নাদাল বলেন, ‘‘আমি তো একই শরীর নিয়ে খেলে চলেছি। নতুন শরীর পেলে ভাল হত!’’ যে ভাবে বাছাইয়ের পতন হচ্ছে, তাতে বাড়তি সতর্ক নাদাল। দ্বিতীয় রাউন্ডে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়ার অবাছাই খেলোয়াড় থানাসি কোকিনাকিস। যিনি আবার নিক কিরিয়সের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। যে কিরিয়স প্রথম রাউন্ডে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টিভ জনসনকে হারিয়ে বলেছেন, ‘‘ম্যাচটা তাড়াতাড়ি শেষ হওয়ায় পানশালায় যেতে পারব!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy