নিনথোইনগানবা মিতেই। ছবি: সংগৃহীত।
বাবাই স্বপ্নটা দেখেছিলেন। ছেলে একদিন দেশের জার্সিতে খেলবে। বিশ্বকাপ খেলবে এতটা হয়তো কখনওই ভাবেননি। কিন্তু মণিপুরের নিনথোইনগানবা মিতেই আর কয়েকদিন পরেই দেশের মাটিতে দেশের জার্সিতে বিশ্বকাপ খেলতে নামবে। কিন্তু বাবার সেই খেলা আর দেখা হবে না। বাবা আর নেই। হঠাৎই দিল্লির শিবিরে খবরটা এসেছিল মিতেইয়ের কাছে। তড়িঘড়ি ফিরে যেতে হয়েছিল ইম্ফলে। এতদিন সবজি বিক্রি করে সংসার চালাতেন বাবাই। সঙ্গে মা মাছ বিক্রি করতেন। কষ্টের সংসারে বাবাকে হারিয়ে একরাশ হতাশায় ডুবে গিয়েছিল মিতেই। কিন্তু বাবার কথা ভেবেই আবার ঘুরে দাঁড়ানো।
আরও পড়ুন
জহুরি জামশিদের খুঁজে আনা রত্নই এখন ভরসা
তার বেশ কয়েক দিন আগের কথা। ভারতীয় দলের সঙ্গে এক্সপোজার ট্রিপ করে মেক্সিকো থেকে ফিরছিল মিতেই। প্রতিবার এমন সময় বাবাই আসতেন এয়ারপোর্টে নিতে। কিন্তু সে বার দেখলেন বাবা নেই। তার জন্য দাঁড়িয়ে রয়েছে তার কাকা। কাকাকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারেন বাবা অসুস্থ। বাড়ি ফিরে দেখে বাবা শয্যাশায়ী। অনেকক্ষণ বাবাকে জড়িয়ে রেখেছিলেন। লম্বা বিদেশ সফরে ছেলে দেশের হয়ে খেলতে গিয়েছে, তাকে বাবার অসুস্থতার কথা জানালে যদি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে তাই পরিবারের কেউই জানাননি মিতেইকে। নিজের শহরে ফিরে জানতে পেরেছিলেন প্রথম। বাবা থাইরয়েড ক্যান্সারে আক্রান্ত। কিন্তু তার থেকে বেশি তার পরিবারের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল ছেলের বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাওয়া। ছেলে জায়গাও পেয়েছে।
আরও পড়ুন
বয়স বেশি, অনেক আশা জাগিয়েও খেলা হল না বিশ্বকাপ
সেই সময় যখন মেক্সিকো থেকে ফিরেছিল মিতেই, বাবা বলেছিলেন, দিল্লিতে বিশ্বকাপের ম্যাচ দেখতে যাবে। কথা দিয়েছিল মিতেই। কারণ তার আগে সুব্রত কাপে ছেলের খেলা দেখতে দিল্লিতে যেতে চেয়েছিলেন মাংলেম। কিন্তু টানাপড়েনের সংসারে সেটা ছিল প্রায় অসম্ভব। কোনও রকমে মাছ বিক্রি করে দিল্লি যাওয়ার জন্য টাকা জমিয়েছে মিতেইয়ের মা ও দিদি। বাবা পারেননি কিন্তু মার স্বপ্ন পূরণ করতে চায় এই ছেলে। সঙ্গে খেলতে চান বাবার কথা ভেবেই। এত বড় মঞ্চে নামতে কোনও ভয় নেই ১৬ বছরের নিনথোইনগানবা মিতেইয়ের। শুধু বাবার জন্য মনটা মাঝে মাঝে কেঁদে ওঠে। আবার নিজেকে শক্ত করে ভাবে এটাই তো চেয়েছিল বাবা। তাই সেরাটা যে দিতেই হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy