ব্রোঞ্জ জয়ী লভলিনা। ছবি-- টুইটার
বক্সিং প্রথম প্রেম না হলেও ছোট থেকেই খেলায় মন ছিল লভলিনার। কিন্তু বাড়ির ছোট মেয়ে যে বড় হয়ে অলিম্পিক্সে পদক এনে দেবে, ভাবেননি লভলিনার বাবা টিকেন বড়গোঁহাই। শুক্রবার চাইনিজ তাইপেইয়ের চেন নিয়েন-চিনকে ৪-১ ব্যবধানে হারান লভলিনা। সকাল থেকে শুভেচ্ছার বন্যা বয়ে যাচ্ছে লভলিনার বাড়িতে। তার মধ্যেই কলকাতা থেকে ফোন করছি জেনে টিকেন বললেন, ‘‘মে মাস পর্যন্ত তো কলকাতাতেই ছিলাম।’’ মুকুন্দপুরের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল লভলিনার মায়ের। চিকিৎসার জন্য প্রায় পাঁচ মাস কলকাতাতেই ছিলেন বলে জানান তিনি। সে সময় লভলিনা আটকে ছিলেন অলিম্পিক্সের প্রস্তুতিতে। স্ত্রীর কিডনি প্রতিস্থাপনের পর মে মাসেই অসমের বাড়িতে ফিরেছেন।
অসমের গোলাঘাট জেলার বারোমুখিয়া গ্রামে ১৯৯৭ সালের ২ অক্টোবর জন্ম লভলিনার। স্কুলে পড়াশোনার সময় লভলিনার শটপাটে বেশি আগ্রহ ছিল বলে জানান টিকেন। বর্তমানে লভলিনার এক দিদি থাকেন রাজস্থানে, অন্য জন শিলিগুড়িতে। ছোটবেলায় এই দুই দিদির সঙ্গে কিকবক্সিংয়ে হাতেখড়ি হয় লভলিনার। বাবা বলেন, ‘‘প্রথমে তো ‘মুয়ে থাই’ খেলায় আগ্রহ ছিল ওর। ২০১২ সাল নাগাদ সবকিছু বদলে গেল। স্থানীয় এক প্রতিযোগিতায় ও অংশ নিয়েছিল। সেখানেই সাই অর্থাৎ স্পোর্টস অথরিটি অব ইন্ডিয়ার আধিকারিকদের নজরে পড়ে। সাইয়ের কর্তারা এক নজরেই ওর প্রতিভা বুঝে গিয়েছিলেন।’’
ছোট চা বাগানের রোজগারের উপরই নির্ভরশীল বড়গোঁহাই পরিবার। টোকিয়োতে লভলিনার খেলার সময় যখন পুরো গ্রাম মাতোয়ারা, টিকেন শান্ত হয়ে অপেক্ষা করছিলেন ফলাফলের জন্য। ‘‘গ্রামে আমাদের সহজ জীবন, যা রোজগার হয় তাতে মোটামুটি চলে যায়। লভলিনাও গ্রামে সবাই যেমন থাকে তেমনই এখানে ওর জীবনযাপন।’’ বললেন টিকেন।
লভলিনার মায়ের কিডনির সমস্যার জন্য অনেকদিন ধরেই চিকিৎসা চলছিল। ছোট চা বাগান সঙ্গে চাষবাস করে দীর্ঘদিন কিডনির চিকিৎসা চালানো খুব সহজ নয় বলে জানান টিকেন। কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য লভলিনার পরিবারকে থাকতে হয়েছিল কলকাতাতেই। একদিকে যখন স্ত্রীর কিডনির চিকিৎসা চলছে প্রস্তুতির জন্য ছোটমেয়ে তখন দিল্লিতে। করোনার সময় মায়ের জটিল অস্ত্রোপচার নিয়ে চিন্তিত মেয়ে খবর নিতেন রোজ। কিডনি প্রতিস্থাপন হয়ে গেলেও এখনও সম্পূর্ণ সুস্থ নন তিনি। এখনও কিডনির চিকিৎসা চলছে লভলিনার মায়ের। ‘‘মেয়ের পদক পাওয়ার আনন্দ ওর মাকে তাড়াতাড়ি সুস্থ করে তুলবে বলে মনে হচ্ছে।’’ বললেন লভলিনার গর্বিত বাবা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy