ছবি: টুইটার থেকে
নিখাত জারিন নামটার সঙ্গে ভারতীয়রা প্রথম পরিচিত হন ২০১৯ সালে। সেই সময় মেরি কমের মতো অনেকেই হয়তো বলেছিলেন, “কে নিখাত জারিন?” সত্যিই তো! ছ’বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের সামনে কে নিখাত জারিন? কিন্তু লড়াইয়ে নামলে জারিন যে আক্রমণ ছাড়া কিছুই জানেন না। বিনা লড়াইয়ে তিনি মেরি কমকেও জমি ছেড়ে দিতে রাজি ছিলেন না।
২০১৯ সালে ৫২ কেজি বিভাগে বিশ্ব বক্সিংয়ে কোনও যোগ্যতা অর্জন পর্ব ছাড়াই মেরি কমকে বেছে নেওয়া হয়েছিল। সঙ্গে সঙ্গে আপত্তি জানান মাত্র ২২ বছরের জারিন। ভারতীয় বক্সিং ফেডারেশনের কাছে দাবি জানান যোগ্যতা অর্জন পর্বের জন্য। সেই সময় বক্সিং ফেডারেশনের প্রধান নির্বাচক রাজেশ ভান্ডারী বলেন, “ভেবে চিন্তেই মেরি কমকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভারতের পদক নিশ্চিত করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। এই মুহূর্তে ৫২ কেজি বিভাগে পদক পাওয়ার যোগ্য দাবিদার মেরি কমই।” সে বার ব্রোঞ্জ পেয়েছিলেন মেরি কম। ফেডারেশনের পক্ষ থেকে তখন টোকিয়ো অলিম্পিক্সের জন্যেও মেরি কমকেই বেছে নেওয়া হয়। জারিন মেনে নিতে পারেননি। তিনি ন্যায্য সুযোগের দাবি করেন। উত্তরে মেরির শ্লেষাত্মক প্রশ্ন ছিল, “কে নিখাত জারিন?”
উত্তর পাওয়া গেল। ২০২২ সালে বিশ্ব বক্সিং চ্যাম্পিয়ন নিখাত জারিন। ৫২ কেজি বিভাগেই। শেষ ১৪ বছরে মেরি কম এই প্রতিযোগিতায় সোনা জিতেছেন তিন বার। তাঁর পরে সোনা জিতলেন জারিনই। তেলেঙ্গনায় জন্ম এই তরুণীর। বাবা মহম্মদ জামিল আহমেদের কাছেই শুরু বক্সিংয়ের পাঠ। প্রায় এক বছর বাবার কাছে বক্সিং শেখেন জারিন। ২০০৯ সালে দ্রোণাচার্য পুরস্কার প্রাপ্ত বেঙ্কটেশ্বর রাওয়ের কাছে প্রশিক্ষণ শুরু করেন তিনি। এক বছরের মধ্যে তাঁকে ‘গোল্ডেন বেস্ট বক্সার’ মনোনীত করা হয় তামিলনাড়ুর একটি প্রতিযোগিতায়।
নিজামাবাদের নির্মলা হ্রুদয়া বালিকা বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন জারিন। হায়দরাবাদের এভি কলেজে কলা বিভাগের ছাত্রী ছিলেন। হায়দরাবাদের একটি রাষ্ট্রীয় ব্যাঙ্কে চাকরিও করেন জারিন। জারিনকে তাঁর রাজ্যে সরকারি দূতের সম্মানও দেওয়া হয়েছে।
২০১১ সালে তুরস্কে যুব বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জিতেছিলেন জারিন। ২০১৪ সালে বুলগেরিয়াতে পেয়েছিলেন রুপো। সেই বছরেই সার্বিয়াতে আন্তর্জাতিক নেশনস কাপে সোনা জেতেন তিনি। তাইল্যান্ড ওপেনে ২০১৯ সালে রুপো জেতেন জারিন। তবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জয়টাই এখনও পর্যন্ত তাঁর সেরা সাফল্য।
মেরি কমকে যিনি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়ার সাহস রাখেন, তিনি যে এক দিন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হবেন তাতে অবাক হওয়ার কী আছে? কিন্তু এ বার জারিনের সামনে আরও বড় চ্যালেঞ্জ। মেরি কমকে ছাপিয়ে যাওয়ার চ্যালেঞ্জ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy