ভরসা: গোলাপি বল নিয়ে অনুশীলনে ব্যস্ত শামি। তাঁর দিকেই চোখ অধিনায়ক কোহালির। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
নৈশালোকে গোলাপি বলের মহড়ায় নেমে পড়লেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালি। ইনদওরে প্রথম টেস্টের দু’দিন আগে থ্রো-ডাউনের (বল ছুড়ে ব্যাটসম্যানকে অনুশীলন) সাহায্যে গোলাপি বলের বাউন্স ও সুইংয়ের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার পরে বুধবার ইডেনে বোলারদের বিরুদ্ধেও নিজেকে ঝালিয়ে নিলেন। কিন্তু নৈশালোকে গোলাপি বলের সঙ্গে এটাই তাঁর প্রথম আলাপ। আর প্রথম আলাপেই বিরাটের সব চেয়ে বড় প্রতিপক্ষ হয়ে উঠলেন তাঁর দলেরই প্রধান পেসার!
তিনি, মহম্মদ শামি। নেটে ভারতীয় অধিনায়ককে স্বাগত জানালেন প্রিয় আউটসুইং দিয়ে। প্রথম বলেই বুঝিয়ে দিলেন গোলাপি বলে পেসারকে সামলানো খুব একটা সহজ নয়। কোহালিও নাছোড়। হারার আগে হার মানেন না। লেগ স্টাম্প ছেড়ে মিডল স্টাম্প গার্ড নিয়ে তৈরি হয়ে গেলেন শামির দ্বিতীয় বলের আগে। ফের একই ডেলিভারি। কিন্তু শরীরের বাইরের বল কোহালি ছুঁলেন না। তিনি জানেন, সাধারণ লাল বলের চেয়ে নতুন গোলাপি বলে সুইং ও বাউন্স কিছুটা বেশি। ম্যাচে শরীরের বাইরে ব্যাট বাড়ালেই অপেক্ষা করে থাকা স্লিপ ফিল্ডারের হাতে ধরা পড়ে যেতে পারেন। ভারতীয় পেসারের সুইংয়ের সঙ্গে মোকাবিলা করতে এ বার ক্রিজ ছেড়ে কিছুটা এগিয়ে দাঁড়ালেন বিরাট। ফের সেই আউটসুইংয়ের প্রচেষ্টা। কিন্তু এগিয়ে দাঁড়ানোর কারণে সুইং ভাঙার আগেই পরিচিত কভার ড্রাইভ মেরে জবাব দিলেন তাঁর সতীর্থকে। অধিনায়কের শটের কদর করা ছাড়া আর কোনও উপায়ও ছিল না শামির।
নেটে বাকি বোলাররা ভারতীয় অধিনায়ককে এক বারও পরাস্ত করতে পারেননি। ভাল বলকে সম্মান দিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন। শরীরের কাছের বল রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলে দেন। তাঁর নেট সেশনের সব চেয়ে সুন্দর মুহূর্ত, এক স্থানীয় বোলারকে মারা স্ট্রেট ড্রাইভ। ইনসুইং করে বিরাটকে পরাস্ত করার চেষ্টা করেছিলেন স্থানীয় বোলার রমন সিংহ। অধিনায়ক শুধু সময় মতো ব্যাট নামিয়েছিলেন। বোলারের পাশ দিয়ে বুলেটের গতিতে সাইট স্ক্রিনে গিয়ে ধাক্কা খেল বল। বুধবারের ইডেনে স্পিনারদের বিরুদ্ধেও আগ্রাসী দেখিয়েছে তাঁকে। অন্যতম কারণ, গোলাপি বলে স্পিন কম করে। পেসারদের সামলে স্পিনারদের বিরুদ্ধেই রান বার করার সুযোগ পাবেন ব্যাটসম্যানেরা। সেই মনোভাব নিয়েই হয়তো স্পিনারদের নেটে ঢুকেছিলেন বিরাট। সামান্য ফ্লাইট দেখলেই স্টেপ আউট করে সোজা তুলে দিলেন বোলারের উপর দিয়ে।
ভারতীয় অধিনায়কের ওয়ার্ম-আপের পদ্ধতিও অভিনব। ম্যাচের সঙ্গে প্রস্তুতির প্রত্যেকটি মুহূর্তও যে তিনি উপভোগ করেন, তা ফুটে ওঠে চোখেমুখে। এ দিন মহম্মদ শামি, ঋদ্ধিমান সাহা, উমেশ যাদবকে নিয়ে ওয়ান-টাচ পাসিং ফুটবল খেলছিলেন বিরাট। বাইরে থেকে দেখলে হয়তো মনে হতে পারে নিছকই মজা করছেন। কিন্তু মজার সঙ্গেই জড়িয়ে আছে রিফ্লেক্সে উন্নতি করার রসদ।
নেটে ব্যাট করতে যাওয়ার আগে সতীর্থদের স্লিপ ক্যাচিং করাতেও দেখা গেল অধিনায়ককে। কারণ, ইডেনের গতিময় পিচে মহম্মদ শামি, উমেশ যাদবদের ডেলিভারি বিপক্ষ ব্যাটসম্যানের ব্যাট ছুঁয়ে উড়ে আসবে এই স্লিপ অঞ্চলেই। প্র্যাক্টিসের শেষের দিকেও নৈশালোকের সঙ্গে মানিয়ে নিতে ফের স্লিপ ক্যাচিং করলেন রোহিত, পুজারা, রাহানেরা। হঠাৎ-ই আতঙ্ক তৈরি হল ভারতীয় শিবিরে। নিচু ক্যাচ নিতে গিয়ে আঙুলে চোট পেয়ে স্লিপ থেকে সরে দাঁড়ান রোহিত। কিন্তু শুশ্রূষা করিয়ে ফের স্লিপে দাঁড়িয়ে পড়েন হিটম্যান। স্বস্তি ফেরে ভারতীয় শিবিরেও।
ভারতের প্রথম দিনরাতের টেস্টের আগে মাত্র এক দিনই নৈশালোকে অনুশীলন করলেন বিরাটরা। বৃহস্পতিবার ভারতীয় দল অনুশীলন করবে সকালে। নৈশালোকে প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে বাংলাদেশকে। ইনদওরে টেস্ট শেষ হওয়ার পরের দিন নৈশালোকে প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ ছিল ভারতের। কিন্তু অনুশীলনে এসেছিলেন মাত্র ছ’জন। ইডেনে যদিও উপস্থিত ছিলেন প্রত্যেকে। বৃহস্পতিবার আরও এক বার গোলাপি বলের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে শুক্রবার প্রথম দিনরাতের টেস্ট খেলতে নামবে ভারত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy