সম্মান: পতাকাবাহক নিখাত ও শরৎ। সমাপ্তি অনুষ্ঠানে। ছবি: পিটিআই
মোট ৬১টি পদক নিয়ে শেষ হল ভারতীয় দলের কমনওয়েলথ গেমস অভিযান। তালিকায় চার নম্বরে তারা। সোমবার বার্মিংহামে বর্ণময় সমাপ্তি অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়েছে এ বারের প্রতিদ্বন্দ্বিতা।
ভাংড়া নাচের মাধ্যমে স্বাগত জানানো হয় ভারতীয় দলের প্রতিনিধিদের। সমাপ্তি অনুষ্ঠানে ভারতের জাতীয় পতাকা বহন করেন নিখাত জ়ারিন এবং শরৎ কমল। এ বারের কমনওয়েলথ গেমসে ভারতীয় প্রতিযোগীরা জিতেছেন মোট ২২টি সোনা, ১৬টি রুপো এবং ২৩টি ব্রোঞ্জ। সবচেয়ে বেশি পদক এসেছে কুস্তি থেকে (১২ পদক, যার মধ্যে সোনা ৬টি)। তার পরেই রয়েছে ভারোত্তোলন। সেই ইভেন্ট থেকে ভারতের খেলোয়াড়েরা জিতেছেন ১০টি পদক, যার মধ্যে সোনা তিনটি। বক্সিং থেকে এসেছে সাতটি পদক। সব মিলিয়ে বার্মিংহামে ভারতীয় দলের মেজাজ ছিল রীতিমতো ইতিবাচক।
কী ভাবে বদলে গেল মানসিকতা? ছেলেদের ট্রিপল জাম্প থেকে সোনা ছিনিয়ে নেওয়া ভারতীয় তারকা এলঢওস পল জানিয়ে দিচ্ছেন, গত বছর টোকিয়ো অলিম্পিক্সে নীরজ চোপড়ার জ্যাভলিনে সোনা জয় সার্বিক ভাবে পরিবর্তন নিয়ে এসেছে ভারতীয় ক্রীড়ামহলে। তিনি বলেছেন, “আগে আন্তর্জাতিক মঞ্চে উপস্থিত হওয়ার পরে আমাদের মধ্যে এক অদ্ভুত জড়তা কাজ করত। ইভেন্টে নামার আগেই মানসিক ভাবে অনেক পিছিয়ে পড়তাম। সেই দুর্বলতা ঝেড়ে ফেলার পথ দেখিয়েছেন নীরজ চোপড়া।”
পল আরও বলেছেন, “অলিম্পিক্সে সোনা জিতে নীরজ এই বার্তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের খেলোয়াড়েরাও কারও চেয়ে পিছিয়ে নেই। শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করার ক্ষমতা তাঁদেরও রয়েছে। এই মন্ত্রটা ব্যক্তিগত ভাবে আমাকে ভীষণ অনুপ্রাণিত করেছে। নতুন করে সাহস ফিরে পেয়েছি।” যোগ করেছেন, “সামগ্রিক ভাবে এ বারের কমনওয়েলথ গেমসে ভারতের পারফরম্যান্স প্রমাণ করে দিয়েছে, দলের সকলে নিজেদের সেরা উদ্যম নিয়ে দেশকে গর্বিত করার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন।”
সেই সুরই শোনা গিয়েছে সাত্ত্বিকসাইরাজ রনকিরেড্ডির মুখেও। কমনওয়েলথ গেমসের ইতিহাসে ব্যাডমিন্টন ডাবলসে তিনি এবং চিরাগ শেট্টি প্রথম বার ছিনিয়ে নিয়েছেন সোনা। সোমবার শেষ দিনে সোনা জয়ের হ্যাটট্রিকও হয়েছে। ছেলে এবং মেয়েদের সিঙ্গলসে সোনা জিতেছেন লক্ষ্য সেন এবং পি ভি সিন্ধু। এ বার ব্যাডমিন্টন থেকে এসেছে ছ’টি পদক।
সাত্ত্বিক বলেছেন, “এই সাফল্য নতুন এক যুগের সূচনা ঘটাল বলেই আমি মনে করি। ‘‘এই সোনা জয় সব অর্থেই অসাধারণ। বলা যায়, এই ঘটনা ভারতীয় ব্যাডমিন্টনে নতুন যুগের সূচনাও ঘটিয়ে দিল।” যোগ করেছেন, “সকলেই জানেন পুরুষদের ডাবলসে এর আগে কমনওয়েলথ গেমসে কখনও ভারত সোনা জেতেনি। শুরুটা করলাম আমরাই। এ বার নিশ্চয়ই আরও অনেক চ্যাম্পিয়ন ভারতীয় জুটি উঠে আসবে।”
কুস্তিতে সোনা জিতে যেন নিজেকে নতুন ভাবে ফিরে পেয়েছেন সাক্ষী মালিক। মেয়েদের ৬২ কেজিতে সোনা জিতে সাক্ষীর প্রতিক্রিয়া, “মনে হচ্ছে যেন চাঁদের বুকে হেঁটে বেড়াচ্ছি। ২০১৬ রিয়ো অলিম্পিক্সের পরে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তেমন সাফল্য ছিল না। কমনওয়েলথ গেমস সোনা যেন নতুন জীবন দিল।”
তবে রয়েছে ব্যর্থতার যন্ত্রণাও। ছেলেদের হকি ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ০-৭ গোলের জ্বালা তাড়া করে ফিরছে ভারতীয় দলকে। গোলকিপার পিআর সৃজেশের কথায়, “আমরা রুপো জিতেছি বলে প্রচুর হইচই হচ্ছে। বরং উল্টোটাই সত্যি, আমরা সোনা জিতিনি! যে ভাবে আমরা হারলাম, তা লজ্জার।’’ কোচ গ্রাহাম রিড বলেছেন, “আমাদের দল লড়াই-ই করতে পারেনি। এই ব্যর্থতার দায় সম্পূর্ণ ভাবে আমাদেরই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy