Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

চনমনে রাখতে কোলাদোদের বিশ্রাম কোচের

বিরাট কোহালিদের হেড কোচ রবি শাস্ত্রীর মতো লাল-হলুদ চাণক্য আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস গার্সিয়ারও অস্ত্র বিশ্রাম।

প্রতিপক্ষ: অনুশীলন সেরে বেরোচ্ছেন বোরখা ও মার্কোস। শুক্রবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

প্রতিপক্ষ: অনুশীলন সেরে বেরোচ্ছেন বোরখা ও মার্কোস। শুক্রবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

শুভজিৎ মজুমদার
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৯ ০৫:০৪
Share: Save:

ভারতীয় ক্রিকেট দলের দর্শন ঢুকে পড়ল ইস্টবেঙ্গলের অন্দরমহলেও!

বিরাট কোহালিদের হেড কোচ রবি শাস্ত্রীর মতো লাল-হলুদ চাণক্য আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস গার্সিয়ারও অস্ত্র বিশ্রাম। পার্থক্য একটাই, ভারতীয় ক্রিকেট দলের তারকারা ম্যাচের আগের দিন সাধারণত অনুশীলন করেন না। ইস্টবেঙ্গলের স্প্যানিশ কোচ দলের প্রধান অস্ত্রদের বিশ্রাম দিলেন ম্যাচের আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে।

মোহনবাগানের বিরুদ্ধে কলকাতা প্রিমিয়ার লিগের ডার্বির আগে রণনীতি ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় সল্টলেকে সাইয়ের মাঠেই অনুশীলন করাচ্ছেন আলেসান্দ্রো। সংবাদমাধ্যম থেকে ইস্টবেঙ্গলের সমর্থক— কারও অনুশীলন দেখার অনুমতি নেই। তা সত্ত্বেও শুক্রবার সকালে সাইয়ের গেটের সামনে জড় হয়েছিলেন কয়েক জন লাল-হলুদ সমর্থক। উদ্দেশ্য, ডার্বির জন্য শুভেচ্ছা জানানো। সকাল এগারোটা নাগাদ ফিজিক্যাল ট্রেনার কার্লোস নোদার ও সহকারী কোচ জোসেপ ফেরে (কোকো)-কে নিয়ে বাইরে এলেন আলেসান্দ্রো। এ দিন তাঁর মন একেবারেই ভাল নেই। সকালে ঘুম থেকেই উঠেই শুনেছেন বার্সেলোনা ও স্পেনের প্রাক্তন তারকা ও কোচ লুইস এনরিকের ন’বছরের কন্যার মৃত্যুর খবর। মাসখানেক আগেই এনরিকের সঙ্গে কথা হয়েছিল লাল-হলুদ কোচের। ভেবেছিলেন দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে ছোট্ট সানা। কিন্তু মৃত্যুর সঙ্গে গত পাঁচ মাস ধরে লড়াই করেও জিততে পারল না কোচ হিসেবে বার্সেলোনাকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে চ্যাম্পিয়ন করা কোচের কন্যা। ডার্বির আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে এই মর্মান্তিক ঘটনায় রীতিমতো ধাক্কা দিয়েছে আলেসান্দ্রোকে।

কোচ চলে যাওয়ার পরে একে একে বেরিয়ে এলেন সামাদ আলি মল্লিক, অভিজিৎ সরকার, পিন্টু মাহাতো, বোরখা গোমেস পেরেস, মার্কোস দে লা এসপাদারা। কিন্তু খাইমে সান্তোস কোলাদো, কাশিম আইদারা, লালরিনডিকা রালতে, বিদ্যাসাগর সিংহেরা কোথায় গেলেন? ডার্বির জন্য কি অসহ্য গরম উপেক্ষা করেই বাড়তি পরিশ্রম করছেন? অনুশীলন শেষ করে বেরিয়ে আসা ফুটবলারদের কথায় রহস্য আরও বাড়ল। বললেন, ‘‘কোলাদো, ডিকারা কোথায় আমরা জানি না। এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারব না।’’ একই বক্তব্য ক্লাবের কর্মীদেরও। অনুসন্ধানের পরে রহস্য উদঘাটন হল। জানা গেল, বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে কাশিমদের।

ডার্বির আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে বিশ্রাম কেন? উঠে এল আকর্ষণীয় তথ্য। কলকাতা লিগের ম্যাচ ইস্টবেঙ্গলকে খেলতে হচ্ছে ময়দানে নিজেদের মাঠে। বৃষ্টিতে মাঠের অবস্থা ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। ফলে ৯০ মিনিটের ম্যাচে ফুটবলারদের যা পরিশ্রম হয়, তার দ্বিগুণ হচ্ছে কাদা মাঠে খেলতে গিয়ে। জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমির প্রাক্তন ট্রেনার চিন্ময় রায় বলছিলেন, ‘‘কাদা মাঠে প্রতিবন্ধকতা অনেক বেশি। কারণ, পা পিছলে যায়। শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য পেশিকে বাড়িতে পরিশ্রম করতে হয়। দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়ে পেশিগুলো। কুঁচকি, গ্লুৎস (কোমরের নীচের অংশের পেশি) ও কাফ মাসল শক্ত হয়ে যায়। কারণ, কাদা মাঠে হঠাৎ দৌড়ের গতি বাড়ানো বা থেমে যাওয়া একেবারেই সহজ নয়। এর ফলে পেশিতে আঘাত লাগার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। এই পরিস্থিতি শরীরকে তরতাজা করে তুলতে বিশ্রামই একমাত্র পথ।’’ তিনি আরও বললেন, ‘‘জাকুজি ব্যবহার করে দ্রুত তরতাজা হয়ে ওঠা যায়। তবে ঠান্ডা নয়, গরম জল ব্যবহার করতে হবে। এ ছাড়া অনেকে মাসাজ নেন। কেউ কেউ সাঁতার কাটেন।’’

বিশ্রাম নিয়ে তরতাজা কোলাদো-ডিকারা ডার্বিতে কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন এখন সেটাই দেখার।

অন্য বিষয়গুলি:

Football East Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy