Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
ICC T20 World Cup 2024

আবেগে ভেসে বিরাট: এই রোহিতকে তো আগে দেখিনি

এই মাঠেই ১৩ বছর আগে পঞ্চাশ ওভারের বিশ্বকাপ জেতার পরে ২১ বছর বয়সি কোহলি বলেছিলেন, ২৪ বছর ধরে ভারতীয় দলের দায়িত্ব কাঁধে নেওয়া সচিন তেন্ডুলকরকে কাঁধে নিয়ে উৎসব করাটা তাঁদের কর্তব্য।

উৎসব: মেরিন ড্রাইভে বিশ্বকাপ ট্রফি নিয়ে বিরাট ও রোহিত। 

উৎসব: মেরিন ড্রাইভে বিশ্বকাপ ট্রফি নিয়ে বিরাট ও রোহিত।  ছবি: আইসিসি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪ ০৯:১৬
Share: Save:

বিশ্বজয়ের পরে বার্বেডোজ়ে ড্রেসিংরুমের সিঁড়িতে রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলির আলিঙ্গনের ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছিল আগেই। দেড় দশক ধরে তিনি সতীর্থকে এত কাছ থেকে দেখলেও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতার পরে এতটা আবেগরুদ্ধ রোহিত শর্মাকে আগে কখনও দেখেননি। সেই মুহূর্তটা স্মরণ করে বলে দিলেন বিরাট কোহলি।

‘‘১৫ বছরে রোহিতকে এতটা আবেগরুদ্ধ হতে প্রথম দেখলাম। কেনসিংটন ওভালে যখন সিঁড়ি দিয়ে উঠছিলাম, রোহিতও কাঁদছিল, আমার চোখ দিয়েও জল পড়ছিল। ওই দিনটা কখনও ভুলব না,’’ ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে বিশ্বজয়ের উৎসবে বলে ওঠেন বিরাট।

এই মাঠেই ১৩ বছর আগে পঞ্চাশ ওভারের বিশ্বকাপ জেতার পরে ২১ বছর বয়সি কোহলি বলেছিলেন, ২৪ বছর ধরে ভারতীয় দলের দায়িত্ব কাঁধে নেওয়া সচিন তেন্ডুলকরকে কাঁধে নিয়ে উৎসব করাটা তাঁদের কর্তব্য। এখন ৩৫ বছর বয়সে সেই একই মাঠে আর এক বিশ্বজয়ের উৎসবে কোহলি বললেন, তাঁর আশা ১৫ বছর ধরে ভারতীয় দলের দায়িত্ব তিনি এবং রোহিত ভালই সামলেছেন। যিনি গত সপ্তাহেই বিশ্বকাপ জয়ের পরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে অবসরের কথা ঘোষণা করে দিয়েছিলেন। ‘‘আশা করি আমরা (তিনি আর রোহিত) দায়িত্বটা সামলাতে পেরেছি। আর ট্রফিটা আবার এখানে (ওয়াংখেড়ে) ফিরিয়ে আনার চেয়ে বেশি আর কী হতে পারে,’’ বলেন বিরাট। সে দিনের মতো এ দিনও তো আবেগে কম ভাসলেন না বিরাট। রোহিতের পাশাপাশি বুমরাকে নিয়েও তাঁর মন্তব্য, ‘‘বুমরার মতো বোলার এক প্রজন্মে এক জনই হয়। ওকে যে আমাদের দলে পেয়েছি, তাতে খুব খুশি।’’

যাঁকে নিয়ে কোহলির মন্তব্য উড়ে এল সেই বুমরা আবার এই উৎসব দেখে মোহিত। ‘‘এই মাঠটার একটা বিশেষ মাহাত্ম্য আছে। ছোট বয়স থেকে এখানে আসছি। তবে আজ যা দেখলাম আগে কোনও দিন দেখিনি। বিশ্বকাপ জেতার সময় মাঠে ছেলেকে দেখে খুব আবেগরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলাম। স্ত্রীকে বলেছিলাম, চাই ছেলে আমার খেলা দেখুক,’’ বলেন বুমরা। বিদায়ী কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের গলাতেও তো আবেগের ছোঁয়া, ‘‘এই ভালবাসার কথা খুব মনে পড়বে। আজ পথে যে উন্মাদনা দেখলাম কখনও ভুলব না।’’

রোহিতদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অভিযান যে রকম স্মরণীয় ছিল ততটাই মনে রাখার মতো ছিল চ্যাম্পিয়নদের দেশে ফেরার প্রায় ১৪ হাজার কিমির সফর। ঝড়ের তাণ্ডবে বেশ কয়েক বার উড়ান পিছিয়ে যাওয়ার পরে শেষ পর্যন্ত বার্বেডোজ়ে গ্রান্টলে অ্যাডামস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্থানীয় সময় রাত দুটোয় এয়ার ইন্ডিয়ার বিশেষ বিমান আটকে থাকা ভারতীয় দলকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পৌঁছয়। সম্ভবত এটাই ছিল বার্বোডোজ় থেকে সরাসরি নয়াদিল্লির প্রথম উড়ান। যেহেতু এশিয়া থেকে ক্যারিবিয়ানে সরাসরি বিমানে আসার কোনও ব্যবস্থা নেই, তাই এমন উড়ান পথ আগে কখনও তৈরি হয়নি। তাই এমন অভিজ্ঞতার সামনে হয়তো কেউ পড়েনওনি।

ভারতীয় ক্রিকেটার, সাপোর্ট স্টাফ ছাড়াও ক্রিকেটারদের পরিবার, ভারতীয় সাংবাদিক, প্রচারকারী চ্যানেলের কর্মী এবং এক ‘সুপার ফ্যান’ও ছিলেন এই বিশেষ উড়ানে। বিমানটি আবার পূর্ব নির্ধারিত দিল্লি থেকে নিউ ইয়র্কের যাত্রা সেরে পৌঁছেছিল বার্বেডোজ়ে। ‘‘এর চেয়ে বড় বিমান এখানে এর আগে কখনও নামতে দেখিনি,’’ বলছিলেন বিমানবন্দরের এক কর্মী।

স্থানীয় সময় ভোর চারটেয় ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফেরা বিমানে ওঠেন। শুরু হয় ১৬ ঘণ্টার আর এক অবিস্মরণীয় যাত্রা। যার আগে পর্যন্ত শনিবার দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্বজয় করার পরে সমুদ্র সৈকতের রিসর্টেই আটকে থাকতে হয়েছিল ক্রিকেটারদের। আইসিসি-র প্রতিযোগিতার ফাইনালে ট্রফি জেতার ১৩ বছরের অপেক্ষা মেটানোর পরে দেশের মানুষের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত উৎসব ভাগ করে নেওয়ার আনন্দ স্পষ্ট ফুটে উঠেছিল
ক্রিকেটারদের চোখেমুখে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy