Advertisement
E-Paper

বিশ্বকাপ শুরু হতে না হতেই খলনায়ক নিউ ইয়র্কের পিচ, দায়ী কে? জবাব খুঁজল আনন্দবাজার অনলাইন

বুধবার নিউ ইয়র্কের মাঠে দেখা গেল কোনও বল হঠাৎ উঠছে, কোনওটা নেমে যাচ্ছে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যে পরিমাণ রান উঠতে দেখা যায়, আমেরিকায় সেটা হচ্ছে না। ব্যাটারদের পরীক্ষার মুখে পড়তে হচ্ছে। যা নিয়ে খুশি নন অনেকেই।

New York

নিউ ইয়র্কের এই মাঠেই খেলবে ভারত-পাকিস্তান। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০২৪ ১৯:১১
Share
Save

আমেরিকায় ক্রিকেটের থেকে অনেক বেশি জনপ্রিয় বেসবল। সেই খেলায় শুধু ফুলটস বল করা হয়। অর্থাৎ বল মাটিতে পড়ে না। সোজা ব্যাটারের দিকে বল ছোড়া হয়। ভারত-আয়ারল্যান্ড ম্যাচে পিচ দেখার পর অনেকের কটাক্ষ, আমেরিকায় বেসবলের পিচও এরকম। তাই পিচে বল ফেলা হয় না।

বুধবার নিউ ইয়র্কের মাঠে দেখা গেল কোনও বল হঠাৎ উঠছে, কোনওটা নেমে যাচ্ছে। পেসারেরা সুইংও পাচ্ছেন। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যে পরিমাণ রান উঠতে দেখা যায়, আমেরিকায় সেটা হচ্ছে না। ব্যাটারদের পরীক্ষার মুখে পড়তে হচ্ছে। যা নিয়ে খুশি হতে পারছেন না ভারতের প্রাক্তন অলরাউন্ডার ইরফান পাঠান। তিনি বলেন, “আমরা চাই আমেরিকায় ক্রিকেটের প্রচার হোক। কিন্তু এই পিচ ক্রিকেটারদের জন্য সুরক্ষিত নয়। ভারতে এমন পিচ হলে, কয়েক বছরের জন্য সেখানে খেলাই বন্ধ হয়ে যেত। এই পিচটা ভাল নয়। আর এখানে বিশ্বকাপ খেলা হচ্ছে, কোনও দ্বিপাক্ষিক সিরিজ় নয়।”

শ্রীলঙ্কা বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের পর থেকেই এ বারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পিচ নিয়ে নানা ধরণের সমালোচনা শুরু হয়ে গিয়েছিল। তা আরও বেড়ে যায় বুধবার ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা এই বিষয়ে মুখ খোলায়। আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে জিতলেও পিচ নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছিলেন তিনি। গায়ে বল লাগার পর অর্ধশতরানের পরেই মাঠ ছেড়েছিলেন রোহিত। ম্যাচ শেষে তিনি বলেছিলেন, “নতুন মাঠ। নতুন পরিবেশ। আমরা একটু দেখে নিতে চেয়েছিলাম। আমার মনে হয়, এখানকার পিচ এখনও ঠিক মতো তৈরি হয়নি। যদিও বোলারেরা ভাল সাহায্য পাচ্ছে। তবে বোলিংয়ের প্রাথমিক বিষয়গুলোয় গুরুত্ব দিতে হবে। টেস্ট ম্যাচের মতো বল করতে হবে।” টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে টেস্টের মতো খেলা হলে সেটা দর্শকদের জন্য খুব একটা উপভোগ্য হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।

রোহিত মনে করেন আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে তাঁর ৫২ রানের ইনিংসের অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। তিনি বলেছেন, ‘’২২ গজে সময় কাটানো ছিল প্রধান লক্ষ্য। কিছুটা সময় কাটাতে পেরেছি। বোঝার চেষ্টা করেছি এই পিচে কী ভাবে খেলতে হবে। কেমন শট নেওয়া যেতে পারে। আশা করি পরের ম্যাচেও এ ভাবে খেলতে পারব আমরা।’’

ম্যাচ শেষে রোহিত বার বার পিচ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এর পরেই শুরু হয়ে যায় আলোচনা। ইডেনের পিচ প্রস্তুতকারক সুজন মুখোপাধ্যায় আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, “এটা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের পিচই নয়। বল হঠাৎ করে বুকের উচ্চতায় উঠছে, আবার কোনওটা নেমে যাচ্ছে। এমন পিচে খেলা সত্যিই কঠিন। ড্রপ ইন পিচ কীরকম, তা বোঝার জন্যই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বেশ কয়েকটি ম্যাচ দেখছিলাম। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বুঝতে পারিনি।”

পিচ নিয়ে সমালোচনার মাঝেই একমাত্র স্বস্তিতে যশপ্রীত বুমরা। তিনি আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৩ ওভারে ৬ রান দিয়ে দু’টি উইকেট নেন। ১৩টি বলে কোনও রান দেননি। তিনি ম্যাচের সেরা পুরস্কার নিয়ে বলেন, “ভারত থেকে এসে এখানে দেখছি বল সুইং করছে। এমন সাহায্য পেলে আমি কখনওই পিচ নিয়ে অভিযোগ করব না। এই ধরণের ক্রিকেটে পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলতে হবে।”

ভারতীয় দলও পিচ নিয়ে কোনও সরকারি অভিযোগ করবে বলে মনে করা হচ্ছে না। তবে ভারতীয় দলের অন্দরের অনেকেই পিচ নিয়ে সন্তুষ্ট নন। ভারতীয় ক্রিকেট দলের সঙ্গে যুক্ত এক ব্যক্তি এক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “একদম নতুন পিচ। পিচে ঘাস রয়েছে। আবার বেশ কিছু জায়গায় ফাটলও রয়েছে। ফলে ঠিক লেংথে বল পড়লে তা সিম করবে। নতুন পিচ হলে আগে পরীক্ষামূলক ম্যাচ হওয়া উচিত। নতুন অ্যাপ তৈরি করলে যেমন করা হয়। তার পর সেটা বাজারে আনা হয়। এই পিচটা ঠিক টি-টোয়েন্টির উপযোগী নয়। আর আমেরিকার চারটে মাঠেই একই ধরণের উইকেট।”

অনেকে আশঙ্কা করছেন ক্রিকেটারদের চোট নিয়েও। রোহিতের কাঁধের কাছে বল লাগে। তিনি রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়েন। তাঁর চোট যদিও খুব গুরুতর নয় বলেই জানা গিয়েছে। আয়ারল্যান্ডের হ্যারি টেক্টরের হেলমেটে বল লাগে। বুমরার বল টেক্টরের গ্লাভসে লেগে হেলমেটে লাগে। সেই বল ধরেন বিরাট কোহলি। আউট হয়ে যান টেক্টর। ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক মাইকেল ভন বলেন, “আমেরিকায় ক্রিকেট বিক্রির চেষ্টা ভাল, কিন্তু নিউ ইয়র্কে এমন নিকৃষ্ট মানের পিচে খেলা হওয়া মেনে নেওয়া যায় না। বিশ্বকাপে ওঠার জন্য এত পরিশ্রম করে সকলে, তার পর এমন একটা পিচে খেলতে হচ্ছে।”

ইডেনের পিচ প্রস্তুতকারক সুজন যদিও আইসিসি-কে দায়ী করতে নারাজ। তিনি বলেন, “আইসিসি চাইছে আমেরিকায় ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা তৈরি করতে। এখন কতগুলো দেশ ক্রিকেট খেলছে। সেটা কাজে লাগানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এটা ভাল। আমেরিকায় তো বেসবল, বাস্কেটবল খেলা হয়। ক্রিকেট এখনও তেমন জনপ্রিয় নয়। ফলে পিচ তৈরির ক্ষেত্রে হয়তো কিছু সমস্যা হয়েছে।”

তাতে যদিও সমালোচনা বন্ধ হচ্ছে না। ধারাভাষ্যকারদের অনেকেই পিচ নিয়ে খুশি নন। নভজ্যোৎ সিংহ সিধু তো পিচকে ভূতুরে আখ্যা দিয়েছেন। নিউ ইয়র্কের পিচকে জঘন্য বলছেন বলছেন মিকি আর্থার। ওয়াসিম জাফর কটাক্ষ করে বলেছেন, “নিউ ইয়র্কের পিচ দুর্দান্ত। তবে আমেরিকার মানুষদের টেস্ট ক্রিকেটে আগ্রহ বৃদ্ধি করার জন্য, টি-টোয়েন্টি জন্য নয়।”

T20 World Cup 2024 Team India Pitch New York

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।