ভারতীয় সমর্থকের উচ্ছ্বাস। ছবি: পিটিআই।
এক দিনের বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে হেরে গিয়েছিল ভারত। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেই দলকে হারিয়েই সেমিফাইনালে উঠলেন রোহিত শর্মারা। যে ভাবে সোমবার ট্রেভিস হেড ব্যাট করতে শুরু করেছিলেন, তাতে সাত মাস আগের স্মৃতি ফিরে এসেছিল ভারতীয় সমর্থকদের মনে। যশপ্রীত বুমরারা শেষ পর্যন্ত হতাশ করেননি। দলকে সেমিফাইনালে তুলেই ছাড়লেন তাঁরা। ভারত জিতল ২৪ রানে।
সেন্ট লুসিয়ায় এ বারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যে অধিনায়কই টস জিতেছেন, তিনি বল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সোমবারও সেটাই দেখা গেল। টস জিতলেন অস্ট্রেলিয়ার মিচেল মার্শ। বল করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। কিন্তু মার্শ ভাবেননি অস্ট্রেলিয়ার বোলিং আক্রমণকে নিয়ে এই ভাবে ছেলেখেলা করবেন রোহিত শর্মা।
ভারত অধিনায়ককে হিটম্যান বলা হয়। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তিনি আরও এক বার বোঝালেন তাঁর সেই নামকরণের সার্থকতা। কখনও পুল, কখনও লং অনের উপর দিয়ে আবার কখনও কভারে রোহিত খেললেন অনায়াসে। মিচেল স্টার্কের এক ওভারে শুধু বাউন্ডারি মেরে ২৮ রান নেন ভারত অধিনায়ক। ওই ওভারে ওঠে ২৯ রান। প্রথম ওভারেই রোহিতের আউটের আবেদন করেছিল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু ব্যাটে লেগে বল মাটিতে ছুঁয়ে ফিল্ডারের হাতে যায়। ফলে রোহিতের উইকেট পাওয়া হয়নি অস্ট্রেলিয়ার। শেষ পর্যন্ত সেই উইকেট নেন স্টার্ক। কিন্তু তত ক্ষণে ৪১ বলে ৯২ রান করে ফেলেছেন রোহিত। মাত্র ৮ রানের জন্য শতরান হাতছাড়া হয় তাঁর।
সোমবার রোহিত ১৯ বলে অর্ধশতরান করেন। মোট আটটি ছক্কা এবং সাতটি চার মারেন। জস হেজ়লউড ছাড়া কোনও বোলারকেই রেয়াত করেননি তিনি। অস্ট্রেলিয়ার বাকি বোলারেরা যখন প্রতি ওভারে ১০ রানের উপর রান দিচ্ছেন, তখন হেজ়লউড ৪ ওভারে দিলেন মাত্র ১৪ রান। কোনও ভারতীয় ব্যাটার তাঁকে ছক্কা মারতে পারেননি। তাতে যদিও ভারতের ২০৫ রান তুলতে কোনও অসুবিধা হয়নি।
একটা সময় মনে হচ্ছিল ভারত হয়তো ২২০ রান তুলে ফেলবে। কিন্তু রোহিত এবং সূর্যকুমার যাদব আউট হতেই রানের গতি কমে যায়। স্টার্কের বল রোহিতের ব্যাটে লেগে পায়ে লেগে উইকেট ভাঙে। আর সূর্যকুমার আউট হলেন অফ স্টাম্পের এক হাত বাইরের বলে অযথা ব্যাট ছুঁইয়ে। তিনি নিজের উইকেটটা উপহার দিয়ে এলেন স্টার্ককে। ১৬ বলে ৩১ রান করা সূর্য ফিরতেই ভারতের ২২০ রানের আশা শেষ হয়ে যায়।
হার্দিক পাণ্ড্য এবং শিবম দুবে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাঁরা ক্রিজ়ে থিতু হতে হতেই বেশ কিছু বল নষ্ট করেন। ফলে শেষ দিকে বড় শট খেললেও ২০৫ রানেই আটকে যায় ভারতের ইনিংস।
অস্ট্রেলিয়াকে সরাসরি সেমিফাইনালে যোগ্যতা অর্জন করতে হলে ভারতের দেওয়া লক্ষ্য পার করতে হত ১৫.৩ ওভারে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারদের দেখে কখনও মনেই হল না সেই হিসাবে তাঁরা মাথায় রেখেছিলেন বলে। অস্ট্রেলিয়া ম্যাচটি জিততে চেয়েছিল। তাই শেষ পর্যন্ত খেলার চেষ্টা করলেন ট্রেভিস হেডরা।
ভারতীয় বোলারদের মধ্যে সফলতম আরশদীপ সিংহ। ৪ ওভারে ৩৭ রান দিয়ে তিনটি উইকেট নেন তিনি। তবে প্রশংসা করতে হবে কুলদীপ যাদবের। তিনি বল করতে আসার আগে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারেরা অনায়াসে শট খেলছিলেন। দ্রুত রান করছিলেন। সেটাই আটকে দেন কুলদীপ। বলের লাইন এবং লেংথ বার বার বদলে ব্যাটারদের বোকা বানাচ্ছিলেন তিনি। তাতেই রানের গতি কমে। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে চাপে ফেলে দেন কুলদীপ। বড় শট খেলতে গিয়ে এর পর উইকেট দেন একাধিক অসি ব্যাটার।
ভারতের চিন্তা রয়ে গেল বিরাট কোহলিকে নিয়ে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে রান পেলেন না তিনি। শূন্য রানে আউট হয়ে যান বিরাট। কোনও ম্যাচেই সে ভাবে রান করতে পারেননি তিনি। সেমিফাইনালে বিরাটের ব্যাট থেকে রান চাইবে দল। বিরাট বড় ম্যাচে রান করতে জানেন। দল চাইবে সেমিফাইনালে রানে ফিরুক তিনি।
সমস্যা রয়েছে রবীন্দ্র জাডেজার বোলিং নিয়েও। তিনি এই ম্যাচে এক ওভারে ১৭ রান দিয়েছেন। এখনও পর্যন্ত বল হাতে সে ভাবে নজর কাড়তে পারেননি জাডেজা। রোহিত তাঁকে এক ওভারের বেশি দেননি। সোমবার হাতে বেশি রান থাকায় সমস্যা হয়নি। সেমিফাইনালের আগে এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে চাইবেন রোহিতেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy