সাগর রানা খুনের তদন্ত এগোতেই আরও বিপাকে অলিম্পিক্সে জোড়া পদক জয়ী কুস্তিগীর সুশীল কুমার। ৪ মে খুনের দিনের ভিডিয়ো ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। এছাড়া দিল্লি পুলিশ ও অপরাধ দমন শাখার আধিকারিকদের কাছে বয়ান দিতে গিয়ে বারবার চণ্ডীগড় ও হরিয়ানার কিছু লোকজনের কথা উল্লেখ করেছেন সুশীল কুমার। তাই শুক্রবার অলিম্পিক্সে জোড়া পদক জয়ী কুস্তিগীরকে পুলিশের কড়া নিরপত্তায় চণ্ডীগড় আনা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে যুক্ত দুজন অভিযুক্ত বীরেন্দ্র ও রোহিতের বিরুদ্ধে শুক্রবার জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সাগর রানা হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার হওয়ার পর পুলিশের একাধিক জিজ্ঞাসাবাদে সুশীল কুমার এই ঘটনার সঙ্গে চণ্ডীগড় ও হরিয়ানার যোগের কথা স্বীকার করেছেন। ফলে খুনের ঘটনার চুলচেরা তদন্তের জন্যই তাঁকে দিল্লি থেকে চণ্ডীগড় আনা হল। এ দিকে সাগর রানা হত্যার আরও বড় প্রমাণ পেল দিল্লি পুলিশের অপরাধ দমন শাখা। সম্প্রতি একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা গিয়েছে সাগর রানাকে লাঠি দিয়ে মারছেন সুশীল। তবে শুধু সুশীল একা নন, তাঁর সঙ্গে আরও কয়েক জনকে লাঠি হাতে সাগরকে মারতে দেখা গিয়েছে। ফলে এখন এই ভিডিয়োকে হাতিয়ার করেই সুশীল কুমার ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা সাজাচ্ছে প্রশাসন। যদিও সুশীলের উকিল দাবি করেছিলেন, অলিম্পিক্সে জোড়া পদক জয়ীকে ফাঁসানো হচ্ছে।
সাগর রানা খুনের দিন সুশীলের দলবল সোনু মাহাল নামক একজনকে ব্যাপক মারধোর করে। এই সোনু আবার কালা জাঠেড়ির ভাইপো। সেই ঘটনার পর থেকে এই কুখ্যাত অপরাধীর লোকজনও সুশীলকে হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছিল। তাই তদন্ত চলার সময় অভিযুক্ত সুশীল কুমারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও আঁটোসাঁটো করেছে পুলিশ। পুলিশ হেফাজতে থাকার সময় সুশীল অনুরোধ করেছেন উত্তর ভারতের কুখ্যাত অপরাধী সন্দীপ কালা ওরফে কালা জাঠেড়ির লোকেরা তাঁর কাছে যেন ঘেঁষতে না পারে।
An exclusive Video of Olympian wrestler #sushilkumar Attacking Junior Wrestler who died later pic.twitter.com/HBPscC4JJE
— Journalist Siraj Noorani (@sirajnoorani) May 27, 2021

পুলিশের হেপাজতে সুশীলের আরও চার সহযোগী। ছবি - টুইটার।
সুশীল ছাড়াও গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁর সহযোগী অজয় কুমারকে। মঙ্গলবার আরও ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ঘটনার সঙ্গে যুক্ত দুজন অভিযুক্ত বীরেন্দ্র ও রোহিতের বিরুদ্ধে শুক্রবার জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই দুজন সে দিন দিল্লির ছত্রসাল স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন। সাগর রানা খুনের ঘটনায় সুশীল যুক্ত থাকার কথা স্বীকার করলেও তাঁর দাবি তিনি নাকি স্রেফ ভয় দেখিয়েছিলেন।
গত ৪ মে সাগর রানা মারা যাওয়ার পর থেকেই সুশীল আত্মগোপন করেছিলেন। দিল্লি পুলিশ হন্যে হয়ে খোঁজার পর তাঁকে গ্রেফতার করেন। সুশীলকে ছয় দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়। গত সপ্তাহে আদালতের কাছে পুলিশ জানিয়েছিল, “সুশীল তাঁর এক বন্ধু প্রিন্সকে বলেছিলেন, এই ঘটনার ভিডিয়ো করে রাখতে। তিনি এবং তাঁর সহযোগীরা সাগর এবং তাঁর দুই বন্ধুকে পশুর মতো মেরেছিলেন। সুশীল আসলে চেয়েছিলেন, পুরো ছত্রসাল স্টেডিয়ামই যেন ওঁকে ভয় পায়।”