এ বার শুধু ব্যাটিংয়ে মন।
কেউ কেউ বলছেন, একেবারে ‘পারফেক্ট টাইমিং।’
কেউ তাঁকে আরও অন্তত বছর দুয়েক ক্রিকেট মাঠে দেখতে চান। কারও প্রচ্ছন্ন ‘হুমকি’, এখনই খেলা ছাড়লে তাঁর বাড়ির দরজায় গিয়ে ধর্নায় বসতেন।
মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ওয়ান ডে ও টি-টোয়েন্টি নেতৃত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে চর্চায় ভরপুর ক্রিকেট বিশ্ব।
“ভারতীয় ক্রিকেটকে ধোনির এখনও অনেক কিছু দেওয়ার আছে। বিরাট কোহালি সুপারস্টার।
সব ফর্ম্যাটে ক্যাপ্টেন্সি করার চ্যালেঞ্জ নিতে ও তৈরি।” —মাইকেল ক্লার্ক।
শুক্রবার দুপুরে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে দল বাছাইয়ের বৈঠকে জাতীয় নির্বাচকদের এমএস ধোনির নামের পাশে যে ‘ক্যাপ্টেন’ শব্দটা আর লিখতে হবে না, তা বুধবার রাতেই নিশ্চিত করে দেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক। এই বৈঠকেই সরকারি ভাবে বিরাট কোহালির নামের পাশে বসতে চলেছে ওয়ান ডে ক্যাপ্টেনের তকমা।
সুনীল গাওস্কর ভাবেননি যে, এখনই ওয়ান ডে-র নেতৃত্ব ছেড়ে দেবেন ধোনি। এক সর্বভারতীয় টিভি চ্যানেলে তিনি মন্তব্য করেন, ‘‘একটু তাড়াতাড়িই সিদ্ধান্তটা নিয়ে ফেলল ধোনি। আমি ভেবেছিলাম চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিটা খেলে তার পর ক্যাপ্টেন্সি ছাড়বে। কিন্তু টেস্টে কোহালির ধারাবাহিক সাফল্যের জন্যই ওকে এখনই ব্যাটন দিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তটা বেশ ভাল। তবে এখনই ধোনি ক্রিকেট ছেড়ে দিলে আমি ওর বাড়ির দরজায় ধর্নায় বসে পড়তাম ক্রিকেটে ফিরে আসার দাবি নিয়ে।’’
জাতীয় নির্বাচকদের প্রধান এমসকে প্রসাদ বলেন, ‘‘এক বছর বা ছ’মাস আগে যদি এই সিদ্ধান্তটা নিত এমএস, তা হলে অবাক হতাম। কিন্তু এখন মোটেই অবাক নই। ও ঠিক সময়েই বিরাটের হাতে ব্যাটনটা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’’ এমএসকে-র বক্তব্য, এমএসডি অন্তত আরও দু’বছর ক্রিকেটে থাকবে। এই সময়ে বিরাট কোহালিকে নিজের অভিজ্ঞতার যে পাঠ পড়াবেন তিনি, সেটাই হবে নতুন ক্যাপ্টেনের সবচেয়ে দামী সম্পদ।
চাপমুক্ত ধোনি যে আরও ভাল কিপার-ব্যাটসম্যান হয়ে উঠবেন শেষের ক’দিন, তাও বলছেন গাওস্কর, ‘‘ওকে তো আর ফিল্ড প্লেসিং বা বোলিং চেঞ্জ নিয়ে বেশি ভাবতে হবে না। তাই স্টাম্পের পিছনে দাঁড়িয়ে মন দিয়ে কিপিংটা করতে পারবে। আর ব্যাট হাতে তো আগের ফিনিশার ধোনিকে বোধহয় পাব আমরা। এই ক’দিনে বিরাট ধোনির কাছ থেকে যে সহায়তা পাবে সেটা ওকে দারুন ভাবে সাহায্য করবে। টেস্টে ভুল শোধরানোর সুযোগ পাওয়া যায়। ওয়ান ডে, টি-টোয়েন্টিতে তো আর তা পাওয়া যায় না। তাই বিরাট-ধোনির কম্বিনেশনটা ভালই হবে।’’
যাঁদের নেতৃত্ব দিয়েছেন ধোনি, সেই ভারতীয় ক্রিকেটাররাও আবেগে ভাসছেন প্রায়। অজিঙ্ক রাহানে যেমন। টুইট করেছেন, ‘‘অনেক কিছু শিখেছি ধোনিভাইয়ের কাছ থেকে। আমার প্রথম আন্তর্জাতিক ক্যাপ্টেনকে ধন্যবাদ।’’ এই একটা টুইটেই শেষ করেননি রাহানে। পরপর একাধিক পোস্ট করেছেন তিনি। যাতে আবেগের বাঁধ প্রায় ভেঙে গিয়েছে, ‘‘পুরো দলটার ফোকাস একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্যের দিকে রেখেছিলে ও দলের সবাইকে সেই লক্ষ্যপূরণের জন্য মোটিভেট করতে সাহায্য করেছিলে। অধিনায়কত্ব মানে শুধু জয় আর সাফল্য নয়। আসল নেতা সে-ই, যে রাস্তা জানে, সেই রাস্তায় হাঁটে ও হাঁটতে শেখায়।’’
তাঁর কাছের লোক হিসেবে পরিচিত সুরেশ রায়নাও ধোনি সম্পর্কে তাঁর মনের কথা তুলে ধরেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। লিখেছেন, ‘‘ভারতের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক। ধোনি তার স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করেছিল। বেশি করে স্বপ্ন দেখা, সেগুলো সত্যি করা আর আরও বড় হতে শিখিয়েছিল ও।’’
নেতা ধোনির বিদায় নাড়া দিয়েছে ক্রিকেটবিশ্বকেও। অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক টুইট করেছেন, ‘‘ভারতীয় ক্রিকেটকে ধোনির এখনও অনেক কিছু দেওয়ার আছে। বিরাট কোহালি সুপারস্টার। সব ফর্ম্যাটে ক্যাপ্টেন্সি করার চ্যালেঞ্জ নিতে ও তৈরি।’’
সর্বকালের সেরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যাপ্টেনদের তালিকায় ধোনিকে রেখেছেন প্রাক্তন ইংরেজ ক্যাপ্টেন মাইকেল ভন। নেতৃত্ব ছাড়ার জন্য তাঁকে অভিনন্দনও জানিয়েছেন। শাহিদ আফ্রিদি টুইটারে লিখেছেন, ‘‘ভারতীয় দলটাকে গড়ে তোলার বিশাল কৃতিত্ব প্রাপ্য ধোনির। বড় ক্যাপ্টেন আর নেতা। সারা বিশ্বের ক্রিকেটারদের প্রেরণা ও।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy