প্রত্যয়ী: অস্ট্রেলিয়া সফর নিয়ে আত্মবিশ্বাসী শামি। ফাইল চিত্র
ভারতীয় বোলিং আক্রমণের অন্যতম স্তম্ভ তিনি। সেই মহম্মদ শামি জানাচ্ছেন, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে নামার আগে তিনি কোনও রকম চাপ অনুভব করছেন না। সদ্য সমাপ্ত আইপিএলের দুরন্ত পারফরম্যান্সই তাঁর ওপর থেকে চাপটা কমিয়ে দিয়েছে।
সিডনিতে নিভৃতবাসে থাকার মধ্যেই চলছে ভারতীয় ক্রিকেটারদের অনুশীলন। তারই ফাঁকে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের ওয়েবসাইটে শামি বলেছেন, ‘‘এ বারের আইপিএলে কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের হয়ে যে রকম বল করেছি, তাতে আমার আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে গিয়েছে। পুরোপুরি ছন্দে আছি এখন।’’ দীর্ঘদিন ক্রিকেট থেকে দূরে কাটিয়ে আইপিএলে ফিরেই দুরন্ত বল করেছেন শামি। নিয়েছেন ২০ উইকেট। যা আইপিএলে তাঁর সেরা পারফরম্যান্স। শুধু ২০ উইকেট নেওয়াই নয়, মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে সুপার ওভারে মাত্র পাঁচ রান দিয়েছিলেন তিনি। যে বোলিং দেখে মুগ্ধ হয়েছিল ক্রিকেট দুনিয়া।
শনিবার শামি বলেছেন, ‘‘আমি এখন দারুণ জায়গায় আছি। আইপিএলে ভাল বল করার পরে এখন কোনও রকম চাপ ছাড়াই অস্ট্রেলিয়া সিরিজের জন্য তৈরি হতে পারছি।’’ লকডাউনের সময় যে তিনি বিশেষ ভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন, তা জানিয়েছেন শামি। কোহালির দলের অন্যতম প্রধান পেসারের মন্তব্য, ‘‘লকডাউনের সময় আমি ফিটনেস এবং নিজের বোলিংয়ের উপরে খুব জোর দিয়েছিলাম। জানতাম, আইপিএল ঠিক হবেই। তাই নিজেকে তৈরি রেখেছিলাম।’’
মাঝে একটা সময় ফিটনেস সমস্যায় খুব ভুগেছিলেন শামি। কিন্তু শেষ কয়েক বছরে নিজের ফিটনেসকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন তিনি। যা মুগ্ধ করেছে স্বয়ং বিরাট কোহালিকেও। ফিটনেস এখন শামির জীবনে কতটা গুরুত্ব পাচ্ছে, তা এই ভারতীয় পেসারের করা একটা টুইট থেকেই পরিষ্কার। এ দিন বারবেল তোলার একটি ছবি পোস্ট করে শামি টুইট করেন, ‘‘আমার জীবনের দুই প্রিয় জিনিস— ওজন তোলা এবং খাওয়া।’’
২৭ নভেম্বর ওয়ান ডে সিরিজ দিয়ে শুরু হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া সফর। তিনটে ওয়ান ডে-র পরে তিনটি টি-টোয়েন্টি এবং শেষে চারটে টেস্ট ম্যাচ। তিনটি দলেই রয়েছেন শামি। তবে তিনি পরিষ্কার করে দিয়েছেন, টেস্টের জন্যই নিজেকে তৈরি করছেন। শামির কথায়, ‘‘একটা লম্বা সফর আছে সামনে। সাদা বল দিয়ে শুরু হবে, তার পরে গোলাপি বল এবং শেষে লাল বলের ক্রিকেট। আমার নজর লাল বলের ক্রিকেটেই। অনুশীলনে যে কারণে লেংথ এবং সিমে ফেলে বল মুভ করানোর উপরে জোর দিচ্ছি।’’ যোগ করেন, ‘‘আমি সব সময় মনে করি, যদি ঠিক লেংথে বল ফেলা যায়, তা হলে যে কোনও ধরনের ক্রিকেটেই সফল হওয়া যাবে।’’
শামি মনে করেন, আইপিএলে যা খেলেছেন, তাতে সাদা বলের ক্রিকেটের জন্য তিনি তৈরি। বিশ্বের অন্যতম সেরা এই পেসারের কথায়, ‘‘আসল ব্যাপারটা হল নিয়ন্ত্রণ। সাদা বলের ক্রিকেটে আমি ছন্দেই আছি। তাই নেটে লাল বলে অনুশীলন করার উপরে জোর দিয়েছি। সীমিত ওভার এবং টেস্ট ম্যাচ, দু’ধরনের ক্রিকেট। প্রাথমিক ব্যাপারগুলো একই থাকলেও মাথায় রাখতে হবে, একই জায়গায় বল ফেললে চলবে না।’’
গত বার স্টিভ স্মিথ-ডেভিড ওয়ার্নার না থাকলেও এ বার এই দুই অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যান দলে ফিরে এসেছেন। তবে শামি তা নিয়ে চিন্তিত নন। তাঁর সাফ কথা, ‘‘ভারতের অনেক ভাল ব্যাটসম্যান আছে যাদের আমরা নিয়মিত নেটে বল করি। উল্টো দিকে কে আছে, তার নাম দেখি না। আমাদের কাজ, নিজেদের দক্ষতা অনুযায়ী বল করা। যত নামী ব্যাটসম্যানই হোক না কেন, একটা ভাল বলে যে কাউকেই আউট করা যায়।’’
নিজেদের বৈচিত্রময় পেস আক্রমণ নিয়েও খুশি শামি। যেখানে আরও আছেন যশপ্রীত বুমরা, উমেশ যাদবরা। সুস্থ হলে যোগ দেবেন ইশান্ত শর্মাও। আত্মবিশ্বাসী শামি বলেছেন, ‘‘আমাদের ফাস্ট বোলিং গ্রুপের সবাই ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার গতির উপরে বল করতে পারে। রিজ়ার্ভে যারা আছে, তাদের বলেও ভাল জোর। এ রকম আক্রমণ খুব কমই দেখা যায়।’’ শামি মনে করিয়ে দিতে চান, বিদেশে এবং দেশের মাঠেও টেস্ট জয়ের পিছনে উল্ল্যেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছে ভারতের পেস আক্রমণ। ‘‘আমাদের নিজেদের মধ্যে একটা সুস্থ প্রতিযোগিতা আছে। কিন্তু কোনও রকম লড়াই নেই। পরিসংখ্যান ঘাঁটলে দেখবেন, বেশির ভাগ বিদেশ সফরেই আমরা টেস্টে ২০ উইকেট তুলে নিয়েছি,’’ বলে দিচ্ছেন ভারতীয় বোলিংয়ের স্তম্ভ, ক্রিকেটের নতুন সুইং সুলতান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy