মনোযোগী: উনিশ বছর পরে প্রিয় ইডেনের ছবি লেন্সবন্দি করলেন স্টিভ ওয়। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
অবিশ্বাস্য এক দৃশ্য। ইডেনের বাইশ গজে তখন বাংলাকে ব্যাটিং বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টায় লড়ছেন ওপেনার কৌশিক ঘোষ ও অনুষ্টুপ মজুমদার। হঠাৎই বাউন্ডারির বাইরে দাঁড়িয়ে চিত্রসাংবাদিকদের সঙ্গে ছবি তুলতে দেখা গেল এক পরিচিত ব্যক্তিত্বকে। দূর থেকে দেখে মনে হল, তিনি হয়তো স্টিভ ওয়। কিন্তু রঞ্জি ম্যাচে তিনি এখানে কী করবেন? ইডেনের একপাশের দর্শকাসনই যে ম্যাচে ভর্তি হয় না, অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক কেনই বা সেখানে আসবেন?
মাঠের কাছে যেতেই সেই ধারণা সত্যি প্রমাণিত হল। ১৯ বছর পরে ইডেনে পা রাখলেন বিশ্বকাপজয়ী অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক স্টিভ ওয়। নিজের বই ও তথ্যচিত্রের শুটিংয়ে ইডেন ও ময়দান চত্বরের ছবি সংগ্রহ করার জন্য কলকাতায় তিনি। তথ্যচিত্রের নাম, ‘স্পিরিট অব ক্রিকেট’। নীল টি-শার্ট ও কালো শর্টস পরিহিত এই মানুষটার সঙ্গে ইডেনের অনেক অম্লমধুর স্মৃতি জড়িয়ে। এই মাঠই ক্রিকেটার হিসেবে তাঁর প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের সাক্ষী। ১৯৮৭ সালে বিশ্বকাপ ফাইনালে (রিলায়েন্স কাপ) ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে বল হাতে চমকে দিয়েছিলেন স্টিভ। ন’ওভার বল করে ৩৭ রানে নিয়েছিলেন দুই উইকেট।
অথচ ২০০১ সালে এই ইডেনেই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় নেতৃত্বাধীন ভারতকে ফলো-অন করিয়েও হারতে হয়েছিল তাঁর দলকে। প্রথম দিন হরভজন সিংহের হ্যাটট্রিকের পরে দ্বিতীয় ইনিংসে ভিভিএস লক্ষ্মণের ২৮১ ও রাহুল দ্রাবিড়ের ১৮০ রানের ধাক্কা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি তৎকালীন অধিনায়ক। তাই ইডেন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বলে গেলেন, ‘‘ইডেনে সব চেয়ে প্রিয় স্মৃতি অবশ্যই ১৯৮৭-র বিশ্বকাপ ফাইনাল। এক লক্ষ সমর্থকের সামনে বিশ্বকাপ জেতার অনুভূতি অন্য রকম। তাই ২০০১-এর চেয়ে ’৮৭-র স্মৃতিই এখনও তরতাজা। ইডেন আমার অন্যতম প্রিয় মাঠ।’’ যোগ করেন, ‘‘২০০১-এর সেই টেস্ট হারলেও অসাধারণ ক্রিকেটের সাক্ষী ছিলেন সমর্থকেরা। আমি সেঞ্চুরিও করেছিলাম। কিন্তু যোগ্য দল জিতেছিল।’’
আরও পড়ুন: ফাইনাল মুম্বইয়েই, ম্যাচ সেই ৮টাতেই
টেস্ট নিয়ে ভারতীয় সমর্থকদের উন্মাদনার সাক্ষী স্টিভ। অথচ ক্রিকেটের সব চেয়ে পুরনো ফর্ম্যাটকে পাঁচ দিনের পরিবর্তে চার দিনের করার প্রস্তাব দিয়েছে আইসিসি। প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক জানিয়ে দিলেন, টেস্টের কোনও সংস্কার চান না। স্টিভ বলছিলেন, ‘‘টেস্ট ক্রিকেটে কোনও সংস্কারের প্রয়োজন নেই। সমর্থকদের বিনোদনের জন্য সীমিত ওভারের ক্রিকেট তো রয়েইছে। টেস্টে সংস্কারের কোনও প্রয়োজনীয়তা দেখছি না।’’
পুলিশ মাঠে নেটের পাশে এ ভাবে শুয়ে পড়েও ছবি তুললেন তিনি। নিজস্ব চিত্র
ইডেন থেকে বেরিয়ে কাস্টমস মাঠে ছুটলেন স্টিভ। সেখান থেকে তাঁর ঠিকানা পুলিশ মাঠ। নেটের পাশে শুয়ে পড়ে ছবি তুললেন তিনি। উঠে দাঁড়িয়ে হাত ও পায়ে লেগে থাকা ধুলো ঝেড়ে উঠে পড়লেন গাড়িতে। রবিবার সকাল থেকে ব্যারাকপুরের অনাথ আশ্রমে শিশুদের সঙ্গে সময় কাটান স্টিভ। ক্রিকেট খেলেন। ছবি তোলেন প্রত্যেকের সঙ্গে। কিন্তু ভারতে আসার মূল উদ্দেশ্য তথ্যচিত্র ও বইয়ের কাজ।
আরও পড়ুন: সেই শিল্ড ফাইনাল ভোলেননি নোবেলজয়ী
কে বেশি ভাল ব্যাটসম্যান, স্টিভ স্মিথ না বিরাট কোহালি? প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় অধিনায়ককে সেই প্রশ্নও ছু়ড়ে দেওয়া হয়েছিল। ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি কাকে বেশি নম্বর দেবেন? স্টিভ বলেন, ‘‘হেডলাইন দেব না। দু’জনেই নিজেদের দেশের সেরা তারকা। দুই দেশের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার। ওদের মধ্যে তুলনা চলে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy