রজার ফেডেরার, নোভাক জোকোভিচ, রাফায়েল নাদাল, সেরিনা উইলিয়ামস এবং ভিনাস উইলিয়ামস।—ফাইল চিত্র।
গত দু’দশকে ‘বিগ থ্রি’ এবং উইলিয়ামস বোনেদের মতো তারকাদের শাসন যে ভাবে টেনিস বিশ্বে দেখা গিয়েছে সেটা অন্য খেলাধুলোর ক্ষেত্রেও বিরল। একের পর এক ট্রফি জিতে আধিপত্য দেখানোর পরে একটা সময় অবশ্য প্রশ্ন উঠেছে এ বার কি অন্য কেউ উঠে আসবেন? তারকাদের দাপট কি শেষ হবে? উত্তরটাও বারবার দিয়েছেন সেই তারকাদের কেউ আরও একটা গ্র্যান্ড স্ল্যামের মুকুট মাথায় তুলে। ঠিক যে প্রশ্নটা এখন উঠছে যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের ফাইনালে বিগ থ্রি বা সেরিনা উইলিয়ামসকে না দেখে।
‘বিগ থ্রি’ অর্থাৎ রজার ফেডেরার, রাফায়েল নাদাল এবং নোভাক জোকোভিচ। এর মধ্যে ফেডেরার সব চেয়ে এগিয়ে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের দিক থেকে। ২০টি। যার মধ্যে আটটি উইম্বলডন খেতাব। রাফায়েল নাদাল। তর্কাতীত ভাবে ক্লে কোর্টের সম্রাট। যাঁর দখলে ১৯টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম। যার মধ্যে ১২টি ফরাসি ওপেন ট্রফি। তৃতীয় জন নোভাক জোকোভিচ। যাঁর গ্র্যান্ড স্ল্যামে দাপট প্রায় এগারো বছর ধরে চলছে। মোট গ্র্যান্ড স্ল্যাম ১৭টি। শেষ ন’টি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মধ্যে জিতেছেন পাঁচটি। ২০০৩ সালে ফেডেরারের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয় থেকে ধরলে গত ৬৭টি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মধ্যে ‘বিগ থ্রি’ দখলে গেছে ৫৬টি। শুধু তাই নয়, দু’বার (২০০৫ থেকে ২০০৯ এবং ২০১০ থেকে ২০১২) টেনিস বিশ্বের এই তিন তারকা যথাক্রমে টানা ১৮টি এবং ১১টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছেন। অন্য কেউ এই সময়টায় গ্র্যান্ড স্ল্যামে দাঁত ফোটানোর সুযোগ পাননি।
‘বিগ থ্রি’-র অগ্রজদের মধ্যে অন্যতম বিয়র্ন বর্গ। গোটা খেলোয়াড়জীবনে তিনি জিতেছেন ১১টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম। যার মধ্যে সাতটি জিতেছেন তিন বছরের একটু বেশি সময়ের মধ্যে। কিন্তু তাঁর মোট ৯ বছরের খেলোয়াড়জীবনের মধ্যে এতটা আধিপত্য ছিল না। বর্গের সময়ে জন ম্যাকেনরো, জিমি কোনর্স এবং আর্থার অ্যাশ-সহ ১০ জন গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছেন ১৯৭৪ থেকে ১৯৮১ এই সময়কালে। টেনিসের আর এক কিংবদন্তি পিট সাম্প্রাসকে নিয়েও একই কথা বলা যায়। ‘পিস্তল পিট’ এর মোট গ্র্যান্ড স্ল্যাম ১৪টি। তবে তাঁর সময়ে অর্থাৎ ১৯৯০ থেকে ২০০২ এর মধ্যে আরও ২০ জন গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছেন। ২০০৩ থেকে ফেডেরারের ক্ষেত্রে এই সংখ্যাটা ৭ (নাদাল এবং জোকোভিচ বাদে)। এ বার যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের ফাইনালে ‘বিগ থ্রি’-র কারও না থাকার ফলে ২০১৬ সালে ফ্লাশিং মেডোজে স্ট্যান ওয়ারিঙ্কার জয়ের পরে এই প্রথম তিন জনের বাইরে কোনও চ্যাম্পিয়নকে দেখা যাবে। বোঝাই যাচ্ছে গ্র্যান্ড স্ল্যামে তারকাদের দাপট কতটা।
ঠিক একই কথা বলা যায় মেয়েদের সিঙ্গলসে উইলিয়ামস বোনেদের ক্ষেত্রে। গত দু’দশকে সেরিনা এবং ভিনাসের মোট গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের সংখ্যা ৩০। এ ছাড়া বেলজিয়ামের তারকা জাস্টিন এনা আর্দেন জিতেছেন ৭টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম। ২০১০ থেকে দশ বছরের পরিসংখ্যান দেখলে সেরিনার দখলে গিয়েছে ১২টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম। গত ১০ বছরে সেই সংখ্যাটা ১১। ভিনাসের সাতটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম সবই এসেছে ২০০০ থেকে ২০১০-এর মধ্যে। তাই বলা যায় গত দশকে যদি ভিনাস শাসন করে থাকেন গ্র্যান্ড স্ল্যাম দুনিয়া তা হলে চলতি দশকে সেই ভূমিকায় একমাত্র নাম সেরিনা।
এ ছাড়া গত কুড়ি বছরে অন্য মহিলা গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ীর মধ্যে মারিয়া শারাপোভা পেয়েছেন পাঁচটি ও কিম ক্লিস্টার্স চারটি। জেনিফার ক্যাপ্রিয়াতি এবং অ্যাঞ্জেলিক কের্বের পেয়েছেন তিনটি করে ট্রফি। চলতি যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের দুই ফাইনালিস্ট ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কা এবং নেয়োমি ওসাকা দুটি করে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতে তিন নম্বরের জন্য লড়তে নামবেন শনিবার।
তাই এ বার যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের পুরুষদের সিঙ্গলসের পরে ফের কবে নতুন মুখ উঠে আসবে? এই প্রশ্নের উত্তর ফরাসি ওপেনে মনে হয় পাওয়া যাবে না। সেখানে যে সেরিনা, জোকোভিচের মতো আরও এক জন ট্রফির জন্য প্রচণ্ড খিদে নিয়ে নামবেন। নাম— রাফায়েল নাদাল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy