—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি
ভারতের কুস্তিতে বিতর্ক থামার নাম নেই। নিলম্বিত কমিটির সভাপতি সঞ্জয় সিংহকে এ বার পাল্টা হুঁশিয়ারি দিল কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রক। কেন্দ্রের নির্দেশের পরে প্রাক্তন সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংহের ঘনিষ্ঠ সঞ্জয় জানিয়েছিলেন, অ্যা়ড-হক কমিটি তাঁরা মানেন না। তাঁরাই কুস্তি চালাবেন। এই দাবির জবাবে কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রক জানিয়েছে, নিলম্বিত কমিটি আয়োজিত কোনও প্রতিযোগিতা বৈধ বলে ধরা হবে না। এই সব প্রতিযোগিতায় কোনও পদক জিতলে তার কোনও দাম থাকবে না বলেও জানানো হয়েছে।
সঞ্জয়কে চিঠি দিয়ে এ কথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রক। চিঠিতে লেখা, ‘‘কুস্তি সংস্থার নিলম্বিত কমিটি কোনও প্রতিযোগিতা আয়োজন করলে তা অবৈধ বলে ধরা হবে। এই সব প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করলে বা পদক জিতলে তা সরকারী বিদ্যালয় বা কলেজে ভর্তি, বা সরকারী চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে বৈধ বলে ধরা হবে না। যত দিন না এই বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হচ্ছে তত দিন কুস্তির কাজকর্ম চালাবে অ্যাড-হক কমিটি। তাদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে।’’
মহারাষ্ট্রে প্রতিযোগিতা আয়োজনের চেষ্টা করেছিল সঞ্জয়ের কমিটি। সেই বিষয়েও হুঁশিয়ারি দিয়েছে কেন্দ্র। চিঠিতে লেখা, ‘‘কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রক জানতে পেরেছে যে মহারাষ্ট্রে জাতীয় প্রতিযোগিতা আয়োজনের চেষ্টা করেছিল নিলম্বিত কমিটি। এই বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিও জারি হয়েছে। কিন্তু কুস্তি সংস্থার নাম নিয়ে কোনও প্রতিযোগিতা আয়োজনের অধিকার নিলম্বিত কমিটির নেই। দ্রুত এই বিজ্ঞপ্তি ফিরিয়ে নিতে হবে। যত দিন না কেন্দ্র কোনও সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তত দিন যেন এই ধরনের কাজ আর না করা হয়।’’ কেন্দ্রের এই নির্দেশের পরে অবশ্য এখনও সঞ্জয় শিবির থেকে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
গত বছর ডিসেম্বর মাসে নির্বাচিত হওয়ার পরেই জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-২০ স্তরের প্রতিযোগিতার কথা ঘোষণা করেছিলেন সঞ্জয়। তিনি জানিয়েছিলেন, গত বছর ডিসেম্বর মাসের শেষে উত্তরপ্রদেশের গোন্ডাতে সেই প্রতিযোগিতা হবে। কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রকের মনে হয়েছিল, কোনও পরিকল্পনা না করেই সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার ফলে অংশ নিতে চাওয়া কুস্তিগিরেরা নিজেদের তৈরি করার পর্যাপ্ত সময় পাবেন না।
ভারতীয় কুস্তি সংস্থার সংবিধান অনুযায়ী, যুব বা সিনিয়র স্তরের কোনও প্রতিযোগিতার আয়োজন করার আগে এগজ়িকিউটিভ কমিটির বৈঠক হয়। সেই বৈঠকের পরে প্রতিযোগিতার সূচি প্রকাশ করা হয়। প্রত্যেকটি প্রতিযোগিতার আগে কুস্তিগিরদের প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজনীয় সময় দিতে হয়। সব থেকে কম ১৫ দিন সময় দিতে হয় প্রস্তুতির। সেই সব কোনও নিয়মের তোয়াক্কা করেননি সঞ্জয়। নিজের মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। সেই কারণে নতুন কমিটি নিলম্বিত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ক্রীড়া মন্ত্রক। তবে কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়নি। পরবর্তী নির্দেশ পর্যন্ত তাকে নিলম্বিত করা হয়েছে।
তার পরেই পিটি ঊষার নেতৃত্বাধীন ভারতীয় অলিম্পিক্স সংস্থা একটি অ্যাড-হক কমিটি গঠন করে। তার মাথায় রয়েছেন ভূপিন্দর সিংহ বাজওয়া (উশু)। বাকি দু’জন হলেন এমএম সোমায়া (হকি) ও মঞ্জুষা কানওয়ার (ব্যাডমিন্টন)। বিশ্ব কুস্তি সংস্থা যখন নির্বাচন না হওয়ায় ভারতীয় কুস্তি সংস্থাকে নিলম্বিত করেছিল সেই সময় যে অ্যাড-হক কমিটি তৈরি করা হয়েছিল সেখানেও এই তিন জন ছিলেন। এ বারও তাঁদের উপরেই ভরসা রাখা হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের পরে ঊষা বলেছিলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রক মনে করেছে নতুন যে কমিটি তৈরি হয়েছিল, তারা নিজেদের এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে কাজ করেছে। সেই কারণে সেই কমিটিকে নিলম্বিত করা হয়েছে। কিন্তু তাতে কুস্তির কাজকর্মে যাতে কোনও সমস্যা না হয় তার জন্য একটি অ্যাড-হক কমিটি আমরা তৈরি করেছি। আশা করছি এই কমিটি নিজেদের দায়িত্ব ঠিক ভাবে পালন করবে।’’
কিন্তু কেন্দ্রের নির্দেশ মানতে চাননি সঞ্জয়। তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমরা নির্বাচিত হয়েছি। রিটার্নিং অফিসারের সই আছে সেখানে। ওরা কী ভাবে সেটা ভুলে যাচ্ছে। কোনও অ্যাড-হক কমিটি আমরা চিনি না। নিলম্বিত করার কোনও শাস্তিও মানি না।’’ সঞ্জয় আরও বলেন, ‘‘কুস্তি আমরাই চালাব। যদি রাজ্য সংস্থা দলই না পাঠায় তা হলে অ্যাড-হক কমিটি কী ভাবে জাতীয় প্রতিযোগিতা করবে। আমরা নিজেরাই খুব তাড়াতাড়ি ওই প্রতিযোগিতা করব। তার জন্য এগজিকিউটিভ কমিটির বৈঠক হবে। দু’এক দিনের মধ্যেই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে।’’ সেই বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পরেই হুঁশিয়ারি দিল কেন্দ্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy