—ফাইল চিত্র।
২০০৪ সালে লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি-র স্লোগান ছিল ‘ভারত উদয়’। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের উজ্জ্বল উপস্থিতি তুলে ধরতে গেরুয়া শিবিরের ওই স্লোগান অবশ্য ফ্লপ করেছিল। ক্ষমতায় এসেছিল ইউপিএ। এ বার ভারতীয় ক্রিকেট অধিনায়কের গলায় কার্যত সেই সুর। তিনিই ‘নয়া ভারতের প্রতিনিধি’— অ্যাডিলেডে ভারত-অস্ট্রেলিয়া টেস্ট সিরিজ শুরুর আগের দিন এমনই মন্তব্য করলেন বিরাট কোহালি। ক্রিকেটীয় প্রেক্ষাপটে ভারত অধিনায়ক এই মন্তব্য করলেও তাঁর এই মন্তব্যের অন্য তাৎপর্য তৈরি হয়েছে। আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রেও তার তাৎপর্য রয়েছে।
ঠিক কী বলেছেন কোহালি? অস্ট্রেলিয়ায় চার টেস্টের সিরিজ শুরুর আগে অ্যাডিলেডে সাংবাদিক বৈঠকে বলেছেন, ‘‘আমার যা ব্যক্তিত্ব ও চরিত্র, তাতে মনে হয়েছে, আমি নয়া ভারতকেই প্রতিনিধিত্ব করছি। ব্যক্তিগত স্তরে আমি বিষয়টি সে ভাবেই দেখি। আমি অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটারদের সঙ্গে নিজেকে তুলনা করি না। আমরা কী ভাবে অজিদের বিরুদ্ধে লড়ছি, সেটাই বড় কথা।’’ আর নয়া ভারত বলতে কোহালি বুঝিয়েছেন, ‘‘এই ভারত চ্যালেঞ্জ নিতে জানে। উচ্চাশা এবং সদর্থক মনোভাব রয়েছে। আমি নিশ্চিত, যে কোনও ধরনের চ্যালেঞ্জ নিতে তৈরি আমরা।’’
কিন্তু কোহালির এই মন্তব্য শুধু ক্রিকেটের বাউন্ডারিতে আটকে নেই। আর্থসামাজিক ভারতের প্রেক্ষাপটেও এর বিচার করতে শুরু করেছেন অনেকে। ভারত অধিনায়কের সঙ্গে একমত হতে পারেননি অনেকেই। ওই অংশের মতে, নয়া ভারতের প্রতিনিধিরা শুধু ক্রিকেটে নেই, সব ক্ষেত্রে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন। আবার ক্রিকেটের মধ্যেও যাঁরা প্রত্যন্ত গ্রামের অত্যন্ত দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসেছেন, তাঁরাই আসলে নয়া ভারতের মুখ। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক প্রশান্ত রায় যেমন মনে করিয়ে দিলেন ‘ইন্ডিয়া’ এবং ‘ভারত’-এর সেই চিরাচরিত বিতর্ক। অর্থাৎ শহুরে ভারত এবং গ্রামীণ ভারতের বিতর্ক। তিনি বলেন, ‘‘বিরাট কিন্তু শহুরে উচ্চ মধ্যবিত্ত শ্রেণিতে পড়েন। আমার মনে হয়, গ্রামীণ ভারতের অনেক প্রতিভাবান তরুণ বহু ক্ষেত্রে শীর্ষে উঠেছেন। এই ভারতীয় ক্রিকেট টিমেই যেমন অনেকেই দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসেছেন। তাঁরাই হওয়া উচিত নয়া ভারতের মুখ।’’
আরও পড়ুন: পন্থ নয়, প্রথম এগারোয় ঋদ্ধি, আছেন পৃথ্বী, উমেশও, দল জানিয়ে দিল ভারত
আরও পড়ুন: মায়ের সঙ্গে লিয়েন্ডার, ছবি পোস্ট করলেন জেনিফার
যদিও তিনি মনে করেন, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক অতীতের ম্যাচগুলিতে অত্যন্ত আগ্রাসী কোহালিকে দেখা গিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটাররা যেমন স্লেজিং করেন, বিরাটও ছেড়ে কথা বলেন না তাঁদের। এক সময় এই বিরাটই বলেছিলেন, ‘অজিদের সঙ্গে বন্ধুত্ব শেষ’। সেই কোহালিই এখন নমনীয়। কেন? অধিনায়ক নিজে বলছেন, ‘‘এর পিছনে অন্যতম কারণ আইপিএল। ভারতের এই টুর্নামেন্ট বিদেশি ক্রিকেটারদের বুঝতে সাহায্য করেছে। তৈরি হয়েছে বন্ধুত্ব।’’ একই সঙ্গে অবশ্য হা়ড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের বার্তা দিতেও ভোলেননি কোহালি। বলেছেন, ‘‘অবশ্যই ক্রিকেটের গরিমা রক্ষা করতে হবে। কিন্তু এটাও মাথায় রাখতে হবে যে, দুটো শক্তিশালী প্রতিপক্ষ মাঠে নামছে। মাঠের সেই যুদ্ধ অবশ্যই হাড্ডাহাড্ডি হতে চলেছে, যেমনটা সব সময় হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy