(বাঁ দিকে) বজরং পুনিয়া এবং সাক্ষী মালিক। —ফাইল চিত্র।
আগে থেকে জানা সত্ত্বেও এশিয়ান গেমস এবং বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের ট্রায়ালে কেন ছাড় দেওয়া হবে প্রতিবাদী ছয় কুস্তিগিরকে? প্রস্তুতির জন্য কেন দেওয়া হবে অতিরিক্ত সময়? এমন প্রশ্ন তুলে বজরং পুনিয়া, সাক্ষী মালিক, বিনেশ ফোগাট-সহ ছয় কুস্তিগিরকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন অন্য কুস্তিগিরদের কোচ এবং অভিভাবকদের একাংশ।
সর্বভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংহের বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ করেন কুস্তিগিরেরা। তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর-ও করা হয়েছে। সেই আন্দোলনের কারণে প্রস্তুতি নিতে পারেননি বজরং, সাক্ষীরা। এশিয়ান গেমসের জন্য নাম পাঠানোর শেষ দিন ১৫ জুলাই। প্রতিবাদী কুস্তিগিরেরা আবেদন করেছিলেন এই তারিখ পিছিয়ে দেওয়ার জন্য। তাঁদের দাবি মেনে ভারতীয় অলিম্পিক্স সংস্থা (আইওএ) আবেদন করে এশিয়ার অলিম্পিক্স কমিটির (ওসিএ) কাছে। আইওএ জানিয়েছে, প্রতিবাদী ছয় কুস্তিগিরের জন্য এক বাউটের ট্রায়াল হবে। এই সিদ্ধান্তে খুশি নন কুস্তি কোচেদের একাংশ। খুশি নন কুস্তিগিরদের অভিভাবকদের একাংশও। তাঁদের বক্তব্য, ট্রায়াল পরিচ্ছন্ন হওয়া উচিত। কেন ছ’জনকে বাড়তি সুবিধা দেওয়া হবে?
পুরুষদের ৬৫ কেজি বিভাগে বজরংয়ের অন্যতম প্রধান প্রতিপক্ষ তরুণ কুস্তিগির সুজিত। তাঁকে ভবিষ্যতের তারকা বলে মনে করা হচ্ছে। সুজিতের কোচ দয়ানন্দ কলকল ক্ষুব্ধ। তাঁর প্রশ্ন, ট্রায়ালের দিন আগে থেকেই জানা ছিল। সেই মতো সবাই প্রস্তুতি নিয়েছে। তা হলে কেন এক জনকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হবে? দয়ানন্দ বলেছেন, ‘‘আমি বিশ্ব কুস্তি সংস্থার অ্যাড-হক প্যানেলের প্রধান ভূপেন্দর সিংহ বাজওয়ার সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁকে জানিয়েছি, এই সিদ্ধান্তে খুশি নই। ট্রায়াল পরিচ্ছন্ন এবং পক্ষপাতহীন হওয়া উচিত। তিনি আমার কথা গুরুত্ব দিয়ে শুনেছেন এবং যথাযথ ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছেন।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘১১ জুলাইয়ের নির্বাচনের পর ফেডারেশনের নতুন কর্তারা ট্রায়াল নেবেন। দেখা যাক কী হয়।’’
বিনেশ এবং বজরংয়ের পারফরম্যান্স নিয়ে তেমন অভিযোগ নেই। শেষ কয়েকটি প্রতিযোগিতায় তাঁদের পারফরম্যান্স সন্তোষজনক। প্রশ্ন উঠছে সাক্ষী, তাঁর স্বামী সত্যাবর্ত কাদিয়ান, জিতেন্দ্র কিনহা এবং সঙ্গীতা ফোগাটের পারফরম্যান্স নিয়ে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহারাষ্ট্রের এক কুস্তিগির বলেছেন, ‘‘গত দু’বছরে জিতেন্দ্র একটা ট্রায়ালেও জিততে পারেনি। তা হলে কী করে ওকে সরাসরি ফাইনাল ট্রায়ালে নামার সুযোগ দেওয়া যায়? দু’বছর জিতেন্দ্র ভারতীয় দলে সুযোগই পায়নি।” তিনি আরও বলেছেন, ‘‘সাক্ষী ৬২ কেজিতে কয়েকটা ট্রায়ালে হেরেছে সোনম মালিকের কাছে। ওকেই বা কেন শুধু ফাইনাল ট্রায়ালে নামার সুযোগ দেওয়া হবে?” বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে রুপো জয়ী অংশু মালিকের বাবা ধর্মেন্দ্র মালিক বলেছেন, ‘‘এটা কোনও সাধারণ ট্রায়াল নয়। বিশেষ দুটো প্রতিযোগিতার জন্য ট্রায়াল। এখানে কেন কয়েক জনকে বিশেষ সুযোগ দেওয়া হবে? ট্রায়াল অবশ্যই নিরপেক্ষ হওয়া উচিত। প্রতিবাদ করছে বলে কেন বাড়তি সুবিধা পাবে? ওরা তো এখন বিচার ব্যবস্থাকেও প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। প্রত্যেকের উচিত সম্পূর্ণ ট্রায়ালে অংশগ্রহণ করা। এখানে সব কুস্তিগির সমান। যদি কারও কোনও দুর্বলতা থাকে, তা হলে সে-ও নিজেকে আরও শক্তিশালী করার সুযোগ পাবে। খামতি বুঝতে পারবে।”
টোকিয়ো অলিম্পিক্সে দেশের প্রতিনিধিত্ব করা সোনমের বাবা রাজেন্দর মালিকও মানতে পারছেন না ছ’জন কুস্তিগিরকে সরাসরি ফাইনাল ট্রায়ালে নামার অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি। রাজেন্দর বলেছেন, ‘‘চারটে লড়াই জেতার পুরস্কার কি চূড়ান্ত লড়াইয়ে নামার সুযোগ? আইওএ চাইলে ছ’জনকে বাড়তি সময় দিতেই পারে। তা হলে প্রথম ট্রায়াল যারা জিতবে তাদের এশিয়ান গেমসে পাঠানো হবে, এই নিশ্চয়তা দেওয়া হোক। দ্বিতীয় ট্রায়ালে জয়ীকে পাঠানো হোক বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে। তাতে সবার প্রতি ন্যায়বিচার হতে পারে। কেন ছ’জনের জন্য অন্যদের বাড়তি একটি লড়াইয়ে নামতে হবে?” বিনেশের অন্যতম এক প্রতিপক্ষের কোচও খুশি নন আইওএ-র সিদ্ধান্তে। তিনি সরাসরি বলেছেন, ‘‘এই সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। আমরা মানব না। দরকারে প্রতিবাদের পথে হাঁটব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy