বিতর্ক: মেসিকে ফিফার বর্ষসেরা পুরস্কার দিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়লেন ইনফান্তিনোরা। ফাইল চিত্র
ফিফার বিচারে লিয়োনেল মেসির বর্ষসেরা ফুটবলার হওয়া নিয়ে বিতর্ক নতুন মাত্রা পেল। দু’টি দেশের জাতীয় কোচ দাবি করলেন যে তাঁরা বার্সেলোনা তারকাকে সেরা ফুটবলার করতে প্রথম পছন্দের ভোট দেননি। অথচ মেসিকে ভোট দিয়েছেন যাঁরা, তার যে তালিকা ফিফা প্রকাশ করেছে সেখানে তাঁদের নাম রাখা হয়েছে। কেউ কেউ একধাপ এগিয়ে ফিফার বিরুদ্ধে ভোটে কারচুপির অভিযোগ এনেছেন। বিশ্ব ফুটবলের নিয়ামক সংস্থার তরফ থেকে শুধু জানানো হয়েছিল, বড় অক্ষরে সই করার জন্য মিশরের ভোট তারা বাতিল করেছে।
বিশ্ব ফুটবলের একটি মহল আগেই দাবি করেছিল যে সেরা ফুটবলারের পুরস্কারটা এ বার লিভারপুলের ডিফেন্ডার ভার্জিল ফান ডাইকের প্রাপ্য ছিল। তাঁদের বক্তব্য, মেসি প্রতি মরসুমে যা করেন গত বারও সেটাই করেছেন। একমাত্র আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জিতলে বা বার্সেলোনা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে চূড়ান্ত সাফল্য পেলেই তাঁকে পুরস্কৃত করা যুক্তিযুক্ত হত। ইউরোপের সেরা টুর্নামেন্টে সর্বাধিক গোল করাকেও তাঁরা বিচার্য বলে মনে করেননি। এমনকি মহম্মদ সালাহকেও বিশ্বসেরার পুরস্কারটা দেওয়া যেত বলে অনেকে মনে করেছেন। এটা নিয়ে সব চেয়ে বেশি সরব হয়েছে ব্রিটিশ প্রচারমাধ্যম।
ফিফার নির্বাচনের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। মিশরীয় ফুটবল সংস্থা, সুদানের কোচ দ্রাকবো লোগারুসিচ ও নিকারাগুয়ার কোচ খুয়ান ব্যারেরার পক্ষ থেকে ব্যালট পেপারের বিশ্বাসযোগ্যতা ও সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। মিশর প্রশ্ন তুলেছে, কেন তাদের জাতীয় কোচ সোয়াকি ঘারিব ও অধিনায়ক আহমেদের ভোট বাতিল করা হল ঠিকঠাক জানানো হোক। ভোট গণনা ও ভোটের অন্যত্র প্রয়োগের অভিযোগ তুলেও তারা সরব হয়েছে। ফিফা অবশ্য জানিয়েছে, সেই বড় অক্ষরে সই করার জন্যই তাদের ভোট বাতিল করার কথা। এখানে অন্য কোনও অভিসন্ধি নেই। সঙ্গে ফিফার এক মুখপাত্রের মন্তব্য, ‘‘মিশরের ফেডারেশন তো ভোটের ফর্মেও কোনও সই করেনি। যা যে কোনও দেশের সচিবের করাটা বাধ্যতামূলক।’’
মিশর অবশ্য ফিফার যুক্তি মানেনি। তাদের বক্তব্য, নির্ধারিত দিনের চার দিন আগেই তারা ফর্ম ভর্তি করে পাঠিয়েছে। সঙ্গে ব্যালটও। এ রকম কোনও ভুল হলে তাদের আগেই জানানো যেত। তাই মিশর গোটা ঘটনার তদন্ত দাবি করেছে। মিশরের সঙ্গে অবশ্য ফিফার বেশ কিছু দিন ধরে ঝামেলা চলছে। জুলাই ও অগস্টে মিশরের ফুটবল কর্তারা প্রায় সবাই পদত্যাগ করেন। ফিফা তখন জরুরিকালীন ভিত্তিতে তাদের নিজস্ব ম্যানেজমেন্ট দল পাঠায়।
সুদানের কোচ লুগারিসিচ ও নিকারাগুয়ার খুয়ান ব্যারেরা তাঁদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাঁদের পরিষ্কার বক্তব্য, কে কাকে ভোট দিয়েছেন তার যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে তা দেখে বিস্মিত তাঁরা। এই কোচেরা নাকি প্রকাশিত তালিকার দাবি অনুযায়ী মেসিকে সেরা ফুটবলারের ভোটটাই দেননি। লুগারিসিচ যেমন বলেছেন যে তিনি সেরা বেছেছিলেন সালাহকে। কিন্তু ফিফার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে তিনি প্রথম পছন্দের ভোট দিয়েছেন মেসিকে। একই ভাবে ব্যারেরা বলেছেন, ‘‘আমি তো মেসিকে ভোটই দিইনি। তা হলে কী করে আমাকে মেসির ভোটার বলা হল? আরও অবাক হয়েছি অধিনায়কদের তালিকায় আমার নিজের নামটা দেখে। বোঝাই যাচ্ছে যে মেসিকে পুরস্কারটা দিতে গিয়ে একটা বড়সড় কারচুপি করা হয়েছে।’’
ফিফার এই নির্বাচন পদ্ধতি খুব পরিষ্কার। সমস্ত দেশের জাতীয় কোচ ও অধিনায়কেরা সেরাদের ভোট দেন। সঙ্গে বিশেষ ভাবে মনোনীত বিভিন্ন দেশের সাংবাদিকেরাও। গোটা নির্বাচন পদ্ধতিকে পরিচ্ছন্ন রাখতে কে কাকে ভোট দিয়েছেন তাও প্রকাশ করা হয়। কিন্তু মিশরের জাতীয় ফুটবল সংস্থা এবং এই দুই কোচের প্রকাশ্য অভিযোগের পরে ভোটের ব্যবস্থা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গেল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy