সকাল থেকেই একটা হইহই ব্যাপার আমাদের অ্যাকাডেমিতে। হায়দরাবাদে গোপীস্যারের এই অ্যাকাডেমিতেই আমি প্র্যাকটিস করি। সাইনাদি আর সিন্ধুদির মতোই। আমাদের সবার প্রিয় দুই দিদির সেমিফাইনালে যাওয়ার লড়াই বলে কথা। কী হবে, কী হবে সে নিয়ে আমাদের মতো জুনিয়র প্লেয়ারদের মধ্যেও চাপা একটা উত্তেজনা ছিল। প্রায় পাঁচ বছর সাইনাদি আর সিন্ধুদিকে কাছ থেকে দেখছি। জানি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপটা ওদের কাছে কী ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।
প্রথমে মনটা বেশ খারাপই হয়ে গিয়েছিল সাইনাদি হেরে যাওয়ায়। ইস! আবার সেমিফাইনালে ওঠার এত কাছাকাছি গিয়েও পারল না! সিন্ধুদি বিশ্বের দু’নম্বর চিনা মেয়ে শিজিয়ান ওয়াংয়ের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত ভাবে জেতার পর আনন্দটা তাই এত বেশি হচ্ছে। যাক, দুই দিদির মধ্যে অন্তত একজন ফাইনালে যাওয়ার আশাটা টিকিয়ে রাখতে পেরেছে।
তবে শুনলাম সাইনাদি বলেছে, আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে একটা দেশের অংশগ্রহণকারী প্লেয়ারদের সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হোক। আমার মনে হয় সাইনাদি ঠিকই বলেছে। আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে র্যাঙ্কিং অনুযায়ী এক-একটা দেশের প্লেয়ারদের অংশ নেওয়ার ব্যাপারটা নির্দিষ্ট করে দেওয়া উচিত। তাতে খেলার মান আরও ভাল হতে পারে।
অ্যাকাডেমির কাফেটেরিয়ায় বসে সবাই টিভিতে ম্যাচটা দেখছিলাম। গোপীস্যারের বাবা-মাও ছিলেন। খুব উপভোগ করেছি ম্যাচটা। এত দিন ওদের দেখছি, তাই জানি ব্যাডমিন্টনই সাইনাদি আর সিন্ধুদির ধ্যান-জ্ঞান। ‘টোয়েন্টিফোর ইনটু সেভেন’ খেলাটা নিয়েই পড়ে থাকে। নিয়মিত প্রচণ্ড পরিশ্রম করে। গোপীস্যারের কাছে আমাদের জুনিয়রদেরই দিনে প্রায় সাত-আট ঘণ্টা প্র্যাকটিস করতে হয়, সিনিয়রদের তো আরওই বেশি। তাই এই জয়টা সিন্ধুদির প্রাপ্য। ভীষণ ভাবে চাইছি ডেনমার্ক থেকে এ বার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়ে এখানে ফিরুক সিন্ধুদি। সেলিব্রেশনের দিন নিশ্চয়ই দারুণ একটা জমজমাট পার্টি হবে।
তবে তার আগে আরও দু’টো কঠিন লড়াই রয়েছে। প্রথমটা সেমিফাইনালে। সেখানে চিনের কেউ নেই, তা হলেও সেটা সহজ হবে বলে মনে হয় না। স্পেনের ক্যারোলিনা মারিনকে হারাতে হবে সিন্ধুদিকে। ক্যারোলিনার কাছে আগেও হেরে গিয়েছে সিন্ধুদি। আবার ক্যারোলিনার মুখোমুখি হলে লড়াইটা বেশ কঠিন হবে বলেই মনে হচ্ছে। তা ছাড়া পরপর দু’দিন তিন গেমের ম্যাচ খেলার পর শনিবারই সেমিফাইনালে নামার আগে ক্লান্তি যাতে চেপে না বসে সেটাও খেয়াল রাখতে হবে সিন্ধুদিকে। তার জন্য শরীরকে যতটা সম্ভব বিশ্রাম দিতে হয়।
তবে যে ফর্মে খেলছে ও, তাতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে সিন্ধুদিরই এ বার চ্যাম্পিয়ন হওয়া উচিত। আমরা সবাই সেই দিকেই তাকিয়ে। এ দিন আবার গনেশ চতুর্থীর পুজো ছিল অ্যাকাডেমিতে। সেখানেও আমরা সিন্ধুদির আরও দু’টো জয়ের জন্য প্রার্থনা করেছি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy