সানিয়া মির্জা এবং শোয়োব মালিক।
চুটিয়ে টেনিস আর খেলছেন না। স্বীকার করে নিলেন সেটা ভবিষ্যতেও আর সম্ভব নয়। শেষ হতে চলা বছর কেমন গেল? আগামী বছরের পরিকল্পনা কী? আনন্দবাজার অনলাইনকে সাক্ষাৎকার দিলেন সানিয়া মির্জা।
প্রশ্ন: ১৭ জানুয়ারি থেকে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন শুরু হচ্ছে। প্রস্তুতি চলছে?
সানিয়া মির্জা: দুবাইতে রয়েছি। এখানে নাদিয়া কিচেনকের সঙ্গে অনুশীলন করছি। ওর বোন লিউডমিলাও রয়েছে আমাদের সঙ্গে। এক সঙ্গেই আমরা অনুশীলন করি। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের আগে অ্যাডিলেডে দুটো প্রতিযোগিতায় খেলব আমরা।
প্রশ্ন: কবে যাচ্ছেন অ্যাডিলেড?
সানিয়া: কিছু দিনের মধ্যেই। নতুন বছরের আগেই আমরা অ্যাডিলেডে পৌঁছে যাব।
প্রশ্ন: ডাবলস, মিক্সড ডাবলস, দুটোতেই খেলবেন? কার সঙ্গে জুটি বেঁধে খেলবেন?
সানিয়া: ডাবলসে কিচেনকের সঙ্গেই খেলব। অস্ট্রেলিয়ায় তিনটে প্রতিযোগিতাতেই ও আমার ডাবলস পার্টনার। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে মিক্সড ডাবলস কার সঙ্গে খেলব, এখনও ঠিক করিনি।
প্রশ্ন: সব মিলিয়ে ২০২২ সালে আপনার পরিকল্পনা কী?
সানিয়া: টেনিস খেলছি প্রায় ৩০ বছর হয়ে গেল। দীর্ঘ দিন ধরে শরীরের উপর প্রচুর ধকল পড়েছে। ফলে এখন আর দীর্ঘকালীন পরিকল্পনা করা সম্ভব নয়। এখন একটা করে প্রতিযোগিতা খেলি, আর তার পর ঠিক করি কী করব। ২০২২-এও সেটাই করব। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের পর শরীরের কী অবস্থা থাকে সেটা দেখে নিয়ে বাকিটা ধাপে ধাপে ঠিক করব।
প্রশ্ন: ২০২১-এর মূল্যায়ন কী ভাবে করবেন?
সানিয়া: এখন তো যা পরিস্থিতি, তাতে এই প্রশ্নের জবাব দিতে গেলে সবার আগে কোভিডের কথা বলতে হবে। এই পরিস্থিতিতে যে কারও পক্ষেই এগিয়ে চলা অত্যন্ত কঠিন। আমি, বা খেলোয়াড়রাও ব্যতিক্রম নই। ফলে যেখানে জীবনের গতিটাই প্রায় থমকে গিয়েছে, সেখানে যতটা এগোনো সম্ভব, এগিয়েছি। সেই দিক থেকে আমি নিজেকে নিয়ে খুশি।
প্রশ্ন: ভারতীয় টেনিসে কি সত্যিই ভবিষ্যৎ বলে কিছু আছে? আপনার পরে তো আর এক জনও কোনও গ্র্যান্ড স্লাম খেতাব জিততে পারলেন না?
সানিয়া: একটা সুসংগঠিত প্রক্রিয়া যতক্ষণ না শুরু হচ্ছে, তত দিন টেনিসের মতো ব্যক্তিগত খেলায় বেশি দূর এগোন অসম্ভব। ফলে সেটা না হওয়া পর্যন্ত গ্র্যান্ড স্লাম খেতাব আমাদের দেশে আসা কঠিন।
প্রশ্ন: আপনার ছেলে ইজহানের এখন তিন বছর হল। ওর যখন এক-দেড় বছর বয়স ছিল, তখন কাজটা বেশি কঠিন ছিল? না কি এখন একটু বড় হওয়ার পরে কাজটা আরও কঠিন হয়েছে?
সানিয়া: এই ব্যাপারটা একেবারে আমাদের টেনিস খেলোয়াড়দের মতো। আমাদের টেনিস জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন জিনিসের প্রয়োজনীয়তা বদলে যায়। অনুশীলনের পদ্ধতি বদলে যায়, খাবারের তালিকা বদলে যায়, দরকারে কোচ বদলাতে হয়। এক জন বাচ্চার ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা ঠিক সে রকম। প্রতিটি পদক্ষেপে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো বদলে যায়। ফলে মা হয়ে পেশাদার টেনিস চালিয়ে যাওয়া এবং দুটোর মধ্যে ভারসাম্য রাখার কাজটা কঠিন। ঠিক কতটা কঠিন, বা ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য কী কী করতে হয়, সেটা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। পরিস্থিতি যখন যে রকম দাবি করে, সে রকম ভাবে এগিয়ে যেতে হয়। লক্ষ্য ঠিক রাখতে হয়। সঙ্কল্প লাগে। এই দুটোর সঙ্গে দরকার সময়কে ঠিক ভাবে কাজে লাগানো, যাকে টাইম ম্যানেজমেন্ট বলে। আমি এই তিনটে বিষয় মোটামুটি ঠিক রাখতে পেরেছি বলে ইজহানের দাবিগুলো পূরণ করেও এখনও টেনিসটা খেলে যেতে পারছি।
প্রশ্ন: সেটা ঠিক। সন্তান হওয়ার পরেও তিন বছর হয়ে গেল আপনি খেলছেন।
সানিয়া: সন্তানের জন্ম হওয়া মানেই একজন মহিলার বাকি জীবন শেষ হয়ে গেল, এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই। বরং এটাকে নতুন শুরু হিসেবে দেখা উচিত। সেই সঙ্গে প্রয়োজনীয় অদল-বদলগুলো করে নেওয়া উচিত। যাঁরা সদ্য মা হয়েছেন, এবং একই সঙ্গে কাজও করছেন, তাঁদের জন্য এই বার্তাই দেব।
প্রশ্ন: রাঁধতে জানেন?
সানিয়া: না, জানি না। আমি যে রান্না জানি না, এটা আমার বাবা-মা, বোন জানে। শ্বশুরবাড়িও জানে। বন্ধু-বান্ধব, কাছের লোকজনও জানে। কিন্তু এখন শোয়েব (সানিয়ার স্বামী শোয়েব মালিক) এটা গোটা দুনিয়ার কাছে ফাঁস করে দিয়েছে।
প্রশ্ন: কী রকম?
সানিয়া: আরে কিছু দিন আগে লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগ চলাকলীন ওয়াহাব রিয়াজকে (পাকিস্তানের ক্রিকেটার) নিয়ে একটা অনুষ্ঠান করছিল। সেখানেই ও ফাঁস করে দিয়েছে যে আমি রাঁধতে জানি না।
প্রশ্ন: রান্নাঘরটা কে সামলায় তা হলে?
সানিয়া: রান্না করতে পারি না তো কী হয়েছে, আমার যা ম্যানেজমেন্ট স্কিল, ঘর-রান্নাঘর সব সামলে নিচ্ছি। সংসার সামলাতে সমস্যা হচ্ছে না।
প্রশ্ন: আপনি আর শোয়েব তো আমিরশাহির গোল্ডেন ভিসা পেয়ে গিয়েছেন। শোনা যাচ্ছে দুবাইয়ের স্পোর্টস ইন্ডাস্ট্রিতে আপনারা পা রাখছেন?
সানিয়া: ঠিকই শুনেছেন। তবে এখনই এটা নিয়ে কিছু বলছি না। যথা সময়ে জানাব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy