সফল: চেজের ব্যাটিং বাঁচাল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। পিটিআই
রাজকোটে যে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হেলায় হারিয়ে টেস্ট সিরিজ শুরু করেছিল ভারত, সেই দল শুরুতে ধাক্কা খেয়েও মাথা তুলে দাঁড়ানোয় অবাক অনেকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ শুক্রবার টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ১১৩-৫-এ ধুঁকছিল। সেই জায়গা থেকে দিনের শেষে তারা ২৯৫-৭।
শুরুতে প্রতিপক্ষকে ধাক্কা দিয়েও শেষে সেই ছন্দ ধরে রাখতে না পারার রোগও সারছে না যেন। যা নিয়ে শুরু হয়েছে চর্চা। কিন্তু টেস্ট শুরুর আগে বিরাট কোহালি যে প্রশ্ন তুলেছিলেন, ফের সেই একই বিতর্ক উস্কে দিয়ে জবাবটা দেওয়ার চেষ্টা করেন দিনের সফলতম বোলার উমেশ যাদব। সাংবাদিকদের তিনি বলে দেন, ‘‘আপনারা প্রশ্ন তুলতে পারেন, শেষ দিকের ব্যাটসম্যানরা রান তুলে দিচ্ছে কী ভাবে? আমি বলব, ভারতের উইকেট পাটা হয়ে গেলে এই এসজি বলে আর গতি, বাউন্স কোনওটাই পাওয়া যায় না। পুরনো হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বল এমন নরম হয়ে যায় যে, বোলিংয়ে বৈচিত্র আনার উপায় থাকে না।’’
রাজকোটের মতো হায়দরাবাদেও দুই দলের একই দাপট ও একই হতাশার ছবি যখন দেখা যাচ্ছিল শুক্রবারও। তখন ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার রস্টন চেজ ব্যাট হাতে রুখে দাঁড়ান। দ্বিতীয় টেস্টে নামার আগের দিন যিনি সাংবাদিকদের বড় মুখ করে বলেছিলেন, ‘‘প্রথম টেস্টে যা সব ভুল করেছি আমরা, তা থেকে শিক্ষা নিয়ে দ্বিতীয় টেস্টে নামব।’’ তাঁর কথার দাম তিনি নিজেই রাখলেন। খেলার শেষে এ দিন তিনি টিভিতে বলেন, ‘‘ঘরের মাঠে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে স্পিনের বিরুদ্ধে অনেক খেলি। তাই এখানে স্পিনারদের খেলতে অসুবিধা হয়নি। তা ছাড়া নিজের ভুলগুলো শুধরে নিয়ে রান পেলাম। এটা আসলে মানসিকতার ব্যাপার।’’
১৮২ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ছ’উইকেট পড়ে যায়। এর পরেই দলকে বিপদ থেকে উদ্ধার করার ‘চেজ’ শুরু করেন ২৬ বছরের রস্টন। যাঁর অভিষেকও এই ভারতের বিরুদ্ধে। দু’বছর আগে অভিষেক সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টেই যিনি সেঞ্চুরি করে ও পাঁচ উইকেট নিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন, দিনের শেষে তিনি ৯৮ রানে অপরাজিত। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ তিনশো থেকে মাত্র পাঁচ রান দূরে। দলের অধিনায়ক জেসন হোল্ডারের সঙ্গে তাঁর ১০৪ রানের পার্টনারশিপই বিপদ থেকে উদ্ধার করে ক্যারিবিয়ানদের। সিরিজে এই প্রথম ভারতীয় বোলাররা তাঁদের বিরুদ্ধে প্রথম নতুন বল নিলেন। হোল্ডার অবশ্য খেলা শেষ হওয়ার পাঁচ ওভার আগে ফিরে যান।
কুলদীপ যাদব, আর অশ্বিন, উমেশ যাদবরা যে ভাবে শুরু করেছিলেন, সেই ছন্দ নষ্ট করে দেন চেজ ও হোল্ডার। পুরোপুরি রক্ষণাত্মক ব্যাটিং করে। চেজের ৯৮ রানের মধ্যে মাত্র ৩০ রান আসে বাউন্ডারির বাইরে থেকে। হোল্ডার ৫২ রান করেন ৯২ বল খেলে আধ ডজন চার মেরে। ভারতীয় শিবিরে অবশ্য এসজি বলই খলনায়ক। শেষ দিকের ব্যাটসম্যানরা বলের সমস্যাটা বুঝতে পেরেই রক্ষমাত্মক হয়ে গিয়ে ভাল রান তুলে নিচ্ছেন বলে মনে করেন উমেশ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘টেল এন্ডাররা জানে, এই বল সুইং করবে না, রিভার্সও (সুইং) হবে না। এ রকম বড় মাঠে বাউন্ডারির দিকে তাকিয়ে না থেকে দৌড়ে রান নিয়ে যেতেই হয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং সে রকমই।’’
শুক্রবার হায়দরাবাদের রাজীব গাঁধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের পাটা উইকেটেও তিন উইকেট নিয়ে অবশ্য নিজেকে প্রমাণ করেন উমেশ। শুরুর দিকে তিন উইকেট নিয়ে কুলদীপ ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সমস্যায় ফেলে দিলেও, সেই বিপদ কাটিয়ে ওঠেন দুই ব্যাটসম্যান। শনিবার ভারত ব্যাট করতে নামলে কী হয়, এবার সেটাই দেখার।
স্কোরকার্ড
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৯৫-৭
ওয়েস্ট ইন্ডিজ (প্রথম ইনিংস)
ব্রাথওয়েট এলবিডব্লিউ বো কুলদীপ ১৪
পাওয়েল ক জাডেজা বো অশ্বিন ২২
শাই হোপ এলবিডব্লিউ বো উমেশ ৩৬
হেটমায়ার এলবিডব্লিউ বো কুলদীপ ১২
অ্যামব্রিস ক জাডেজা বো কুলদীপ ১৮
রস্টন চেজ ব্যাটিং ৯৮
শেন ডাউরিচ এলবিডব্লিউ বো উমেশ ৩০
জেসন হোল্ডার ক ঋষভ বো উমেশ ৫২
দেবেন্দ্র বিশু ব্যাটিং ২
অতিরিক্ত ১১
মোট ২৯৫-৭
পতন: ১-৩২ (পাওয়েল, ১১.১), ২-৫২ (ব্রাথওয়েট, ২২.৫), ৩-৮৬ (হোপ, ৩১.৩), ৪-৯২ (হেটমায়ার, ৩৪.১), ৫-১১৩ (অ্যামব্রিস, ৩৮.৫), ৬-১৮২ (ডাউরিচ, ৫৯.৩), ৭-২৮৬ (হোল্ডার, ৮৯.৬)।
বোলিং: উমেশ যাদব ২৩-২-৮৩-৩, শার্দূল ঠাকুর ১.৪-০-৯-০, আর অশ্বিন ২৪.২-৭-৪৯-১, কুলদীপ যাদব ২৬-২-৭৪-৩, রবীন্দ্র জাডেজা ২০-২-৬৯-০।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy