Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

পঁয়ত্রিশের ফেডেরার দেখাচ্ছেন সেই ফোরহ্যান্ড কামাল

দু’বছর আগে আমিই বলেছিলাম ফেডেরারের ৩৩-৩৪ বছর বয়স হয়ে গিয়েছে। গ্র্যান্ড স্ল্যামে খেলার ধকল আর নিতে পারবে না। সবাইকে ভুল প্রমাণ করে দিল ও। এ বার উইম্বলডনেও ফেডেরারের হাতেই আট নম্বর ট্রফি দেখছি।

নায়ক: ১১তম উইম্বলডন ফাইনালে ফেডেরার। শুক্রবার। ছবি: গেটি ইমেজেস

নায়ক: ১১তম উইম্বলডন ফাইনালে ফেডেরার। শুক্রবার। ছবি: গেটি ইমেজেস

জয়দীপ মুখোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৭ ০৫:৩০
Share: Save:

অবিশ্বাস্য!

গত বছর উইম্বলডনের পরেই যে লোকটা ছ’মাস কোর্টের বাইরে ছিল। কোনও টুর্নামেন্ট জিততে পারেনি সারা বছরে। সেই লোকটাই কিনা এ বছর উইম্বলডনের ফাইনালে উঠল পুরো টুর্নামেন্টে একটাও সেট না হেরে।

দু’বছর আগে আমিই বলেছিলাম ফেডেরারের ৩৩-৩৪ বছর বয়স হয়ে গিয়েছে। গ্র্যান্ড স্ল্যামে খেলার ধকল আর নিতে পারবে না। সবাইকে ভুল প্রমাণ করে দিল ও। অস্ট্রেলিয়ান ওপেন তো জিতেছেই। এ বার উইম্বলডনেও ফেডেরারের হাতেই আট নম্বর ট্রফি দেখছি।

আগেই বলেছিলাম, টমাস বার্ডিচ পারবে না ফেডেরারকে হারাতে। সেটাই হল। প্রথম দু’সেটে বার্ডিচ তবুও লড়াইয়ে ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় সেটের ষষ্ঠ গেমে ফেডেরার যে ভাবে ১৫-৪০-এ পিছিয়ে যাওয়ার পরেও চারটে এস মেরে গেমটা দখল করল আমার মতে ওটাই টার্নিং পয়েন্ট। আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে না থাকলে এত চাপের মধ্যে এ ভাবে বিপক্ষকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এত সহজে কঠিন পরিস্থিতিতে অনায়াসে পয়েন্ট তুলে আনা যায় না। এটা চ্যাম্পিয়নের ইঙ্গিত। ফেডেরার যেন ওই গেমটাতেই বুঝিয়ে দিল এ বার ও চ্যাম্পিয়ন হতেই নেমেছে। সেই বিখ্যাত ফোরহ্যান্ডটাও দেখছি ফিরে এসেছে। যেটা ওর প্রধান অস্ত্র। বার্ডিচের বিরুদ্ধে এই অস্ত্রেই তো প্রচুর পয়েন্ট তুলে নিল।

আরও পড়ুন: সচিন-ওয়ার্নদেরও পরামর্শ চান শাস্ত্রী

সবচেয়ে বড় কথা পঁয়ত্রিশের ফেডেরারকে দেখে ক্লান্তির কোনও চিহ্ন পাওয়া যাচ্ছে না। শুক্রবার বরং বার্ডিচকে দেখে মনে হচ্ছিল তৃতীয় সেটে যেন ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। এর পিছনে ফেডেরারের খুব কঠোর ট্রেনিংয়েরও প্রভাব রয়েছে। ফেডেরারের প্রাক্তন কোচ টনি রোচের মুখে শুনেছি কী রকম তিন-চার জনকে প্র্যাকটিস পার্টনার হিসেবে রেখে প্রস্তুিত নেয় ও। তাছাড়া আমার মনে হয় এর পিছনে ফেডেরারের একটা কৌশলও ভীষণ ভাবে কাজ করেছে। সেটা হল, বেশি র‌্যালির দিকে না গিয়ে দ্রুত পয়েন্ট তুলে নেওয়ার প্রবণতা। উইম্বলডনে যেটা বারবার দেখা গিয়েছে। চার-পাঁচ সেটের লম্বা ম্যাচে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ার কোনও সুযোগ না দিয়ে আগেই ম্যাচটা বিপক্ষের হাত থেকে বার করে নিতে চেয়েছে ফেডেরার। সেটাই কাজে এসেছে।


ফাইনালে এ বার ফেডেরারের সামনে মারিন চিলিচের চ্যালেঞ্জ। গত বছর উইম্বলডনেই চিলিচের বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনালে দুটো ম্যাচ পয়েন্ট বাঁচিয়ে ফেডেরার জিতেছিল। তবে এই ফেডেরারের সামনে চিলিচেরও কোনও সুযোগ দেখছি না। ছেলেটার সার্ভিস আর নেট প্লে খুব ভাল। ফেডেরারের মতোই ও খুব বেশি র‌্যালিতে যায় না। দ্রুত পয়েন্ট তুলে নিতে চায়। এটাই ওর স্ট্র্যাটেজি। এগারো বারের চেষ্টায় উইম্বলডনের ফাইনালে উঠল চিলিচ। যেটা একটা রেকর্ড। তবে যদি না ফেডেরারের বড় কোনও চোট লাগে তা হলে ১৯ নম্বর গ্র্যান্ড স্ল্যামটা ওর হাতেই উঠছে।

এ রকম প্রত্যাবর্তন দেখা যায় না। এ মরসুমে যে ভাবে ফেডেরার খেলছে আমি নিশ্চিত এর পরে যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের জন্যও ও একই রকম খিদে নিয়ে ঝাঁপাবে। এই ফর্মটাই যদি ধরে রাখতে পারে, ফিটনেস লেভেলটাও যদি একই রকম থাকে তা হলে ফেডেরার আবার বিশ্বের এক নম্বরের আসনে ফিরে আসতে পারবে। কেউ ওকে রুখতে পারবে না। উইম্বলডন জেতার পরে বিশ্বসেরার সিংহাসনে ফেডেরারকে আবার দেখতে চাই।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy