উইম্বল়ডনের শেষ চারে ওঠার পরে। বুধবার। ছবি: এএফপি।
বুধবার এক ঘণ্টার ভেতর উইম্বলডন কোয়ার্টার ফাইনালে রজার ফেডেরার যখন ০-২ সেট পিছিয়ে, জন ম্যাকেনরোর টুইটার দেখা গেল— ‘খেলাটা দেখার সুযোগ না থাকলেও স্রেফ স্কোরলাইন জেনে বুঝতে পারছি, চিলিচ দু’বছর আগের ইউএস ওপেন সেমিফাইনালের চেয়েও ভাল খেলছে।’ সেন্টার কোর্টে ফেডেরার-চিলিচ ম্যাচের একই সময় পাশের এক নম্বর কোর্টে আর একটা কোয়ার্টার ফাইনাল চলছিল ম্যাকেনরোর ছাত্র মিলোস রাওনিক আর জকোভিচ বধকারী স্যাম কুয়েরির। ভাবা যায় না, শিষ্যের লাইভ ম্যাচের মধ্যেও প্লেয়ার্স বক্সে বসে কোচ অন্য ম্যাচ নিয়ে টুইটে প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন!
...ম্যাচটার শেষের দিকে সুপার গ্রেট খেলেছি। আমার পা আর মেরুদণ্ড
ঠিকঠাক জায়গায় ছিল। আর সার্ভিসগুলো ছিল জয়ের চাবিকাঠি। —রজার ফেডেরার।
ম্যাকেনরো-ই কেন? চব্বিশ ঘণ্টা পরেই ইউরো সেমিফাইনাল যুদ্ধে উদ্যোক্তা দেশ ফ্রান্সের বিরুদ্ধে হাইভোল্টেজ যুদ্ধে নামবেন জার্মান মাঝমাঠের অন্যতম স্তম্ভ টনি ক্রুজ। চৌত্রিশের ফেডেরার সওয়া তিন ঘণ্টায় ৬-৭ (৪-৭), ৪-৬, ৬-৩, ৭-৬ (১১-৭), ৬-৩ মারিন চিলিচকে হারিয়ে তাঁর একাদশ উইম্বলডন সেমিফাইনালে ওঠার পরক্ষণে ক্রুজের টুইট, ‘গ্রেট!’ ইউরো ভুলে জার্মান তারকা ফুটবলারও ফেডেরার-ম্যাজিকে মজে! কুয়েরিকে ৬-৪, ৭-৫, ৫-৭, ৬-৪ হারানো রাওনিক-ই শুক্রবার শেষ চারে ফেডেরারের প্রতিপক্ষ। কিন্তু মাত্র দু’টো তথ্যই বোধহয় ম্যাকেনরোর ছাত্রের ভেতর ঠকঠকানি ধরাতে যথেষ্ট। দু’বছর আগেই উইম্বলডনে এই রাউন্ডেই ফেডেরারের কাছে স্ট্রেট সেটে উড়ে গিয়েছিলেন তিনি। আর উইম্বলডনে সাত বারের চ্যাম্পিয়ন কখনও সেমিফাইনালে হারেননি! আর এই মুহূর্তে তো ফেডেরারকে ‘ভিন্টেজ ফেডেরার’ দেখাচ্ছে। প্রাক্তন ফরাসি ওপেন চ্যাম্পিয়ন মেরি পিয়ার্স তো এ দিন বিবিসি-র কমেন্ট্রিতে বলেই দিয়েছেন, ‘‘সতেরো বছর ধরে যে লোকটা গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেলে চলেছে, এক যুগ আগে নিজের প্রথম উইম্বলডন খেতাব জিতেছে, তাঁকে দু’হাজার ষোলোতেও এ রকম অসাধারণ কামব্যাক করতে দেখার পর কেন বলব না রজার ফেডেরারই অল টাইম গ্রেটেস্ট!’’ দু’সেট এবং তৃতীয় সেটের সপ্তম গেমে নিজের সার্ভিসে ফেডেরার যখন ০-৪০ পয়েন্টে পিছিয়ে, মনে হচ্ছিল তাঁর স্ট্রেট সেট হারাটা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু শুধু তিনটে ব্রেক পয়েন্ট বাঁচানোই নয়, ওই সার্ভিস গেমটাও জেতেন ফেডেরার। প্রাক্তন বিশ্বসেরা জিম কুরিয়ার বলছেন, ‘‘ওটা তিনটে ব্রেক পয়েন্ট বাঁচানো ছিল না রজারের, ছিল তিনটে ম্যাচ পয়েন্ট বাঁচানো! ওটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট।’’
কুরিয়ারের আর একটা পর্যবেক্ষণও শেষমেশ সত্যি হল এ দিন। ফেডেরার এই ম্যাচের আগে বলেছিলেন, ‘‘আশা করব দু’বছর আগের যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের মতো আমার বিরুদ্ধে এখানে নিঁখুত খেলবে না মারিন। সে দিন ও সত্যিই চূড়ান্ত ফর্মে ছিল।’’ কিন্তু এ দিনও প্রতিপক্ষ প্রায় সেই ‘চূড়ান্ত ফর্ম’ দেখালেও ফেডেরার তৃতীয় সেট জেতার পরে কুরিয়ার টিভিতে বলেন, ‘‘চিলিচের কিন্তু খেলা থেকে মাঝেমাঝে হারিয়ে যাওয়ার বদভ্যাস আছে। রজারের উচিত চতুর্থ আর পঞ্চম সেটে ব্যাপারটা মাথায় রাখা।’’
সত্যিই তাই। নইলে চতুর্থ সেটের টাইব্রেকারে ম্যাচ পয়েন্ট পেয়ে কেউ হেলায় হারায়? তাও ফেডেরারের বিরুদ্ধে উইম্বলডনে! গোরান ইভানিসেভিচকে এই সময় প্লেয়ার্স বক্সে দেখা গেল দু’হাতে মুখ ঢাকতে। চিলিচের বিখ্যাত গুরুও এই সুযোগ হারালে তাঁকেও রেয়াত করতেন না ফেডেরার! অন্য সেমিফাইনালে মুখোমুখি অ্যান্ডি মারে-টমাস বার্ডিচ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy