ফাইল চিত্র।
বেঙ্গালুরু এফসি-র বিরুদ্ধে শনিবার ম্যাচ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই গ্যালারিতে লাফিয়ে উঠেছিলেন এসসি ইস্টবেঙ্গলের কোচ রবি ফাওলার। নির্বাসিত থাকায় তিনি রিজার্ভ বেঞ্চে বসতে পারেননি। তাতে যেন রক্তচাপ আরও বেড়ে গিয়েছিল লিভারপুল কিংবদন্তির। রীতিমতো ছটফট করছিলেন।
মাঠি স্টেনম্যানের দুরন্ত গোল ও দেবজিৎ মজুমদারের অসাধারণ পারফরম্যান্সে আইএসএলে দ্বিতীয় জয়ের চব্বিশ ঘণ্টা পরে অনেকটাই শান্ত লাল-হলুদ কোচ। টানা তিনটি ম্যাচ খেলার ক্লান্তি কাটাতে রবিবার পুরো দলকে ছুটি দিয়েছিলেন ফাওলার। নিজে অবশ্য সহকারীদের নিয়ে কেরল ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে পরের ম্যাচের রণনীতি তৈরি করতে বসে পড়েছিলেন। প্রথম পর্বে কিবু ভিকুনার দলের বিরুদ্ধে এগিয়ে গিয়েও শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে জয় হাতছাড়া করেছিল এসসি ইস্টবেঙ্গল। ১৫ জানুয়ারি দ্বিতীয় পর্বের ম্যাচে যাতে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, তার জন্য এখন থেকেই অঙ্ক কষতে শুরু করে দিয়েছেন ফাওলার। পাশাপাশি, মাঝমাঠের শক্তি বাড়াতে নতুন ফুটবলারও খুঁজছেন তিনি।
লাল-হলুদ শিবিরের অনেকেই অবশ্য মনে করছেন, এখন পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে। দল এখন অনেক বেশি সংঘবদ্ধ। তাই দুশ্চিন্তার কারণ নেই।
ফাওলারের সহকারী অ্যান্টনি গ্র্যান্টও এই বিষয়ে একমত। শনিবার বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে তিনিই ছিলেন দলের দায়িত্বে। জয়ের পরে সাংবাদিক বৈঠকে এভার্টনের প্রাক্তন তারকা বলেছিলেন, ‘‘আমরা মাত্র দু’সপ্তাহের প্রস্তুতিতে আইএসএলে খেলা শুরু করেছিলাম। এই কারণেই শুরুর দিকে সমস্যা হচ্ছিল। বার বার বলেছি, ছন্দ আসতে একটু সময় লাগবেই।’’ তিনি যোগ করেছিলেন, ‘‘আমরা বেশ কয়েক জন নতুন ফুটবলার নিয়েছি। ধীরে ধীরে উন্নতি করছি। ছ’দিনে তিনটি ম্যাচ খেলতে হয়েছে। তা সত্ত্বেও ছেলেরা দেখিয়ে দিয়েছে, ওরা কতটা ফিট। প্রত্যেকেই দারুণ লড়াই করেছে। এরাই দলের ভবিষ্যৎ।’’ গ্র্যান্ট উচ্ছ্বসিত এটিকে-মোহনবাগান ছেড়ে এসসি ইস্টবেঙ্গলে যোগ দেওয়া অঙ্কিত মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে। বলেছেন, ‘‘অঙ্কিত দারুণ খেলছে।’’
বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে গোল করে এগিয়ে যাওয়ার পরে লাল-হলুদের ফুটবলারেরা একটু চাপে পড়ে গিয়েছিলেন, তা অস্বীকার করেননি গ্র্যান্ট। বলেছেন, ‘‘ফুটবলে এক গোলে এগিয়ে যাওয়া যথেষ্ট নয়। বিশেষ করে প্রতিপক্ষ যেখানে বেঙ্গালুরুর মতো দারুণ দল।’’ তিনি যোগ করেছেন, ‘‘প্রধান কোচ সরে যাওয়ার পরে বেঙ্গালুরুর ফুটবলারেরা দারুণ খেলেছে। আমাদের ছেলেরাও প্রথমার্ধে প্রমাণ করেছে, বল নিজেদের দখলে নিয়ে কী ভাবে খেলতে হয়।’’
জয়ের পাশাপাশি, লাল-হলুদ শিবিরকে স্বস্তি দিচ্ছে কোনও গোল না খাওয়া। সপ্তম আইএসএলে রক্ষণ নিয়েই বার বার সমস্যায় পড়েছে এসসি ইস্টবেঙ্গল। সব ম্যাচেই গোল খেয়েছে তারা। ব্যতিক্রমী ছবি দেখা গিয়েছে বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে। ১০ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবলের নবম স্থানে উঠে উচ্ছ্বসিত গ্র্যান্ট বলেছেন, ‘‘ডিফেন্ডারেরাও নিজেদের প্রমাণ করতে সফল হয়েছে।’’
বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে দ্বৈরথের আগের দিনই ছিল স্টেনম্যানের জন্মদিন। শনিবার গোল করে এসসি ইস্টবেঙ্গলকে জিতিয়ে লাল-হলুদ মাঝমাঠের অন্যতম ভরসা বলেছেন, ‘‘আমার গোলে দল জিতেছে, এর চেয়ে ভাল জন্মদিনের উপহার আর কিছু হতে পারে না।’’
হামবার্গার এসভি অ্যাকাডেমি থেকে উত্থান স্টেনমানের। জার্মানির হয়ে অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপেও খেলেছেন তিনি। মাঝমাঠের ফুটবলার হয়েও লাল-হলুদের হয়ে ইতিমধ্যে তিনটি গোল করে ফেলেছেন স্টেনম্যান। তাঁর কথায়, ‘‘গত মরসুমেও আমি অনেক গোল করেছি। একটু উপরের দিকে খেলায় এই মরসুমে গোল করার সুযোগ অনেক বেশি পাচ্ছি।’’ বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে মাঠে নামার কয়েক ঘণ্টা আগে ড্যানি ফক্সের নির্বাসন প্রত্যাহারের খবর যে ফুটবলারদের উজ্জীবিত করেছিল, তা খোলাখুলিই জানালেন জয়ের নায়ক। বলেছেন, ‘‘অধিনায়কের মাঠে থাকাটা সব সময়ই অনুপ্রাণিত করে ফুটবলারদের। ড্যানি আমাদের রক্ষণের প্রধান ভরসা। ও থাকলে অনেক নিশ্চিন্ত হয়ে খেলতে পারি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy