রিয়াল মাদ্রিদের বিরুদ্ধে পুলিসিচকে সামনে রেখেই তৈরি হচ্ছে চেলসি। —ফাইল চিত্র।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১৩ বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ। চোখ ধাঁধানো সাফল্য। কিন্তু চেলসির বিরুদ্ধে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় পর্বের দ্বৈরথের আগে রিয়াল সমর্থকেরা রীতিমতো উদ্বিগ্ন।
আতঙ্ক প্রথম পর্বের ম্যাচে ঘরের মাঠে চেলসির বিরুদ্ধে ১-১ ড্র বা ক্রিশ্চিয়ান পুলিসিচ, টিমো ওয়ের্নারদের জন্য নয়। রিয়াল ভক্তদের অস্বস্তি বাড়াচ্ছে টমাস টুহলের বিরুদ্ধে জ়িনেদিন জ়িদানের ব্যর্থতার পরিসংখ্যান। ২০১৬ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত পাঁচ বার মুখোমুখি হয়েছেন দুই চাণক্য। কখনওই জিততে পারেননি রিয়াল ম্যানেজার। এক বার হেরেছেন। চারটি ম্যাচ ড্র হয়েছে। আজ, বুধবার রাতে লন্ডনের স্ট্যামফোর্ড ব্রিজ়ে চেলসিকে হারিয়ে ছবিটা কি বদলাতে পারবেন জ়িদান?
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের প্রথম পর্বে মাদ্রিদে চেলসির বিরুদ্ধে ১৪ মিনিটেই পুলিসিচের গোলে পিছিয়ে পড়েছিল জ়িদানের দল। ২৯ মিনিটে দুরন্ত ভলিতে ১-১ করেছিলেন করিম বেঞ্জেমা। হার বাঁচলেও ঘরের মাঠে গোল খাওয়া মানেই এক কদম পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় পর্বের ম্যাচে খেলতে নামবে রিয়াল। হাঁটুর চোট সারিয়ে চেলসির বিরুদ্ধে মাঠে ফিরছেন অধিনায়ক সের্খিয়ো র্যামোস। ফলে রক্ষণ নিয়ে কিছুটা হলেও দুশ্চিন্তা কমবে জ়িদানের। রিয়াল ম্যানেজার বলেছেন, “র্যামোসের পুরোদমে অনুশীলন করার অর্থ ও খেলার জন্য তৈরি।” তবে বুধবারের মরণ-বাঁচন ম্যাচে রাফায়েল ভারান, লুকাস ভাসকোয়েস, দানি কার্বাহালকে পাবেন না তিনি। ধোঁয়াশা রয়েছে ফেদেরিকো ভালভার্দে ও ফেরল্যান্ড মেন্দির খেলা নিয়ে। জ়িদানের কথায়, “আশা করছি রাফায়েলের চোট গুরুতর নয়। আমি ওর সঙ্গে কথাও বলেছি।” এর পরেই তিনি যোগ করেছেন, “চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালের ওঠার সম্ভাবনা কিন্তু আমাদের একেবারে শেষ হয়ে যায়নি। চেলসিকে হারানো ছাড়া অন্য কিছু ভাবতে চাই না।”
চেলসির বিরুদ্ধে এই ম্যাচ আরও এক জনের কাছে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি, এডেন অ্যাজ়ার। ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডের ক্লাব ছেড়েই রিয়ালে যোগ দিয়েছেন তিনি। কিন্তু চোটের জন্য অধিকাংশ সময়ই মাঠের বাইরে থাকতে হয়েছে তাঁকে। এখনও চেলসি সমর্থকদের হৃদয়ে রয়েছেন অ্যাজ়ার। ইংল্যান্ডের ক্লাবের ডিফেন্ডার আন্দ্রেয়াস ক্রিস্টেনসেন খোলাখুলি বলেছেন, “চেলসির সকলেরই অ্যাজ়ারের প্রতি দুর্বলতা রয়েছে। এই ম্যাচে অ্যাজ়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। যে কোনও মুহূর্তে ম্যাচের রং বদলে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে ওর।”
চেলসি শিবিরে চোট-আঘাতের খুব একটা সমস্যা নেই। একমাত্র মাতেয়ো কোভাসিচকে বুধবারের ম্যাচে সম্ভবত পাচ্ছেন না টুহল। সেমিফাইনালের প্রথম পর্বে মাদ্রিদে গিয়ে রিয়ালের বিরুদ্ধে গোল করায় এই ম্যাচে চেলসি অনেক চাপমুক্ত হয়ে খেলতে পারবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। টুহল কিন্তু একেবারেই তাঁদের সঙ্গে একমত নন। রিয়াল অধিনায়কের প্রত্যাবর্তনের খবর যে তাঁর অস্বস্তি বাড়িয়েছে, গোপন করেননি। চেলসি ম্যানেজারের কথায়, “র্যামোস খেললে লড়াই অনেক বেশি কঠিন হবে। দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার অসাধারণ ক্ষমতা রয়েছে ওর।” এর পরেই মজা করে বলেছেন, “কোনও স্ট্রাইকার ছাড়াই আমরা হয়তো এই ম্যাচটা খেলব। তা হলে র্যামোস কিছুই করতে পারবে না।”
স্পেনীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, জয়ের লক্ষ্যে রণকৌশল বদলাতে পারেন জ়িদান। ৫-৩-২-র পরিবর্তে ৪-৩-২ ছকে দলকে খেলাতে পারেন রিয়াল ম্যানেজার। টুহল যদিও তা নিয়ে ভাবতে চান না। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে চেলসি ম্যানেজার বলেছেন, “আমি ঠিক জানি না ওরা আগের ম্যাচের মতো ৫-৩-২ ছক না ৪-৩-৩-এ খেলবে। সব ধরনের ছকই শক্তিশালী। তবে তার মধ্যেও অনেক ফাঁক-ফোঁকর থাকে।” আরও বলেছেন, “আমাদের সব চেয়ে কঠিন কাজ এখন প্রথম পর্বের ম্যাচে কী ফল হয়েছিল তা ভুলে যাওয়া। বুধবার শূন্য থেকে শুরু করতে হবে। আমাদের পাখির চোখ রিয়ালকে হারানো। সেই লক্ষ্য নিয়েই প্রস্তুতি নিয়েছি।” টুহল যোগ করেছেন, “আমরা যদি নিজেদের খেলা খেলতে পারি, তা হলে কেউ আটকাতে পারবে না। ফুটবলারদের সেটাই বলেছি।”
মঙ্গলবার অনুশীলন করালেও ফুটবলারদের সঙ্গে ম্যাচ নিয়ে আলোচনা করার জন্য টুহল বেছে নিয়েছেন বুধবারের মধ্যাহ্নভোজকে। বলেছেন, “ছেলেদের সঙ্গে আমি বুধবার মধ্যাহ্নভোজের সময় কথা বলব। তার আগে ওদের পর্যাপ্ত
বিশ্রাম দরকার।”
রিয়ালের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালের প্রথম পর্বে দুর্দান্ত খেলেও চেলসি জিততে পারেনি একাধিক গোলের সুযোগ নষ্ট করায়। গত মরসুমে আরবি লাইপজ়িসের হয়ে দুর্দান্ত খেলা ওয়ের্নার প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছিলেন। ইপিএলে ফুলহ্যামের বিরুদ্ধে অসাধারণ খেলেন তিনি। নিজে গোল পাননি। তবে সতীর্থ কাই হাভার্টজ়কে গিয়ে গোল করিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy