শ্রীকান্তদের সাফল্যে খুশি গোপীচাঁদ ফাইল ছবি
ব্যাঙ্ককের নোনথাবুড়ি স্টেডিয়ামে তখন চলছে আবেগের বিস্ফোরণ। কোচ বিমল কুমারকে ঘিরে তখন নাচতে শুরু করে দিয়েছেন কিদম্বি শ্রীকান্ত, এইচএস প্রণয়রা। এমন সময় হঠাৎই বিমল দেখলেন তাঁর ফোনে ভেসে উঠেছে প্রকাশ পাড়ুকোনের নাম। কোনও মতে ছেলেদের শান্ত করে তিনি মাত্র কয়েকটা কথাই বলতে পারলেন, “৪৩ বছর আগে ওরা তোমাদের হারিয়েছিল। আজ আমরা তার প্রতিশোধ নিলাম প্রকাশ।”
প্রতিশোধই বটে! ৭৩ বছরের ইতিহাস মেটানো তো সহজ কথা নয়। ব্যাডমিন্টনে অনেক সাফল্যই পেয়েছে ভারত। দেশের পতাকা উড়েছে বিশ্বের বিভিন্ন কোনায়। কিন্তু টমাস কাপে আজ পর্যন্ত সাফল্য আসেনি। বরাবর কুলীন হয়েই ছিল ভারত। সেই অভাব মিটিয়ে দিলেন শ্রীকান্তরা। উচ্ছ্বসিত হওয়ার কারণও তাই যথেষ্ট সঙ্গত। সাধেই কি পুল্লেলা গোপীচন্দ একে কপিলের দলের বিশ্বকাপ ফাইনালে ওঠার সঙ্গে তুলনা করেছেন!
সেই ১৯৭৯ সালে টমাস কাপ থেকে শেষ বার পদক এসেছিল ভারতের। সেই দলে ছিলেন সৈয়দ মোদী, লেরয় ডি’সুজা, সুমন মিশ্র এবং পার্থ গঙ্গোপাধ্যায়। তখনও ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে ভারতের সামনে ছিল ডেনমার্ক। কিন্তু সেই বাধা টপকাতে পারেনি তারা। ২-৭ ব্যবধানে হারতে হয়েছিল তাঁদের। তখন থেকে আজ পর্যন্ত, সেমিফাইনালে ওঠাই ভারতের কাছে মস্ত বাধা ছিল। ব্যক্তিগত সাফল্য ছিল, কিন্তু কখনওই তা দলগত সাফল্যে রূপান্তরিত হতে পারেনি।
ভারতের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় পুল্লেলা গোপীচন্দ তাই বলেছেন, “কয়েক বছর আগে পর্যন্তও আমরা ভাবতাম যে টমাস কাপের যোগ্যতা অর্জন করতে পারব কিনা। যদিও বা যোগ্যতা অর্জন করতাম, গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় হয়ে যেত। আমার মনে আছে যে তখন কত কষ্ট করতে হত টিকে থাকতে।” গোপীচন্দ এটাও স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, এই সাফল্য কপিল দেবের দলের বিশ্বকাপ জয়ের থেকে কোনও অংশে কম নয়। বলেছেন, “ভারতীয় ব্যাডমিন্টনের ইতিহাসে এটা অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত। দলগত ব্যাডমিন্টনে টমাস কাপ সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতায়। সেখানে ফাইনালে ওঠা মানে বিশ্বের সেরা দলের বিরুদ্ধে চোখে চোখ রেখে কথা বলা। তাই জন্যেই আমার মনে হয়, ১৯৮৩ সালে বিশ্বকাপ ফাইনালে উঠে ভারতীয় দল যে ইতিহাস তৈরি করেছিল, এটাও তার সমান।”
টমাস কাপে সবচেয়ে বেশি বার খেলেছেন ডেনমার্ক। মাত্র এক বার জিতলেও, তাদের ধারাবাহিকতা প্রশ্নাতীত। গত তিনটি প্রতিযোগিতাতেই সেমিফাইনালে উঠেছে। এখনকার দলের ভিক্টর অ্যাক্সেলসেন এবং অ্যান্ডার্স অ্যান্টনসেন বিশ্ব ক্রমতালিকায় প্রথম দশে রয়েছেন। অ্যাক্সেলসেন টোকিয়ো অলিম্পিক্সে সোনা পেয়েছেন।
এর আগে সহজ জায়গা থেকেও একের পর এক ম্যাচ হেরেছে ভারত। সাফল্য কাছে এসেও ধরা দিত। কিন্তু কিদম্বি শ্রীকান্ত, এইচএস প্রণয়রা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিযোগিতা খেলে এতটাই অভিজ্ঞ, যে বিশ্বের প্রত্যেক খেলোয়াড়ের চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারেন। শক্তিশালী স্ম্যাশের জবাব দাঁতে দাঁত চেপে ফিরিয়ে দিতে পারেন। শ্রীকান্ত নিজের দিনে বিপক্ষকে কোর্টে দাঁত ফোটাতেও দেবেন না।
গোটা ভারতের ব্যাডমিন্টনপ্রেমীরা চাইবেন, রবিবারও যেন এই ছন্দ বজায় থাকে। সামনে ১৪ বারের চ্যাম্পিয়ন, প্রতিযোগিতায় সবচেয়ে সফল ইন্দোনেশিয়া। কিন্তু শ্রীকান্ত, প্রণয়রা যে সহজে জমি ছেড়ে দেবেন না, এটা নিশ্চিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy