Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
বিজয়ের চোট, শুরুতে ধবনের সঙ্গে হয়তো ‘ছোটভাই’

শেখার দিন শেষ, বিদেশে এ বার জিততে হবে: শাস্ত্রী

ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেটে ধোনি-যুগ শেষ। বাংলাদেশে এক টেস্টের সিরিজকে না ধরলে বুধবারই শুরু হচ্ছে ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেটে পূর্ণাঙ্গ কোহলি-যুগ। তিন টেস্টের পূর্ণাঙ্গ টেস্ট সিরিজ ক্যাপ্টেন কোহলির যে দ্বীপরাষ্ট্রেই প্রথম! এবং বিদেশ সফরে কোহলির ভারতীয় দলের ভবিষ্যৎ দর্শন কী হবে তার রূপরেখা আজই বাতলে দিলেন টিম ডিরেক্টর রবি শাস্ত্রী।

দলকে তাতাতে নেমে পড়েছেন। সোমবার গল-এ ভারতীয় টিম ডিরেক্টর রবি শাস্ত্রী। ছবি: টুইটার

দলকে তাতাতে নেমে পড়েছেন। সোমবার গল-এ ভারতীয় টিম ডিরেক্টর রবি শাস্ত্রী। ছবি: টুইটার

নিজস্ব সংবাদদাতা
গল শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৫ ০৩:৫০
Share: Save:

ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেটে ধোনি-যুগ শেষ। বাংলাদেশে এক টেস্টের সিরিজকে না ধরলে বুধবারই শুরু হচ্ছে ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেটে পূর্ণাঙ্গ কোহলি-যুগ। তিন টেস্টের পূর্ণাঙ্গ টেস্ট সিরিজ ক্যাপ্টেন কোহলির যে দ্বীপরাষ্ট্রেই প্রথম! এবং বিদেশ সফরে কোহলির ভারতীয় দলের ভবিষ্যৎ দর্শন কী হবে তার রূপরেখা আজই বাতলে দিলেন টিম ডিরেক্টর রবি শাস্ত্রী।
শাস্ত্রীয় বিধান এ রকম— ‘‘শেখার দিনটিন ভারতীয় দলের জন্য শেষ। এখন সময় এসেছে বিদেশের মাঠে টেস্ট ম্যাচ জেতা শুরু করা। আর বিপক্ষের কুড়িটা উইকেট তোলার রাস্তা বার করা।’’
মুরলী বিজয় হ্যামস্ট্রিং চোট থেকে পুরো সেরে উঠতে না পারায় গলে প্রথম টেস্ট থেকে আটচল্লিশ ঘণ্টা আগেই ছিটকে গিয়েছেন। ফলে লোকেশ রাহুলের সঙ্গে শিখর ধবনের ওপেন করা কার্যত নিশ্চিত। সাংবাদিকদের বিজয়ের গলে না খেলার আগাম খবর এ দিন শাস্ত্রীই দিলেন এখানে। ‘‘বিজয় পুরোপুরি ফিট হতে পারেনি। সে জন্য আমরা সামান্যতম ঝুঁকি নিচ্ছি না,’’ বললেন কোহলিদের টিম ডিরেক্টর।
পরক্ষণেই ফিরে গেলেন তাঁর আসল বক্তব্যে। বিদেশে ভারতের টেস্ট জেতা শুরু করার ব্যাপারে। ‘‘ক্রিকেট মাঠে আপনি নিশ্চয়ই ম্যাচ ড্র করতে আসেন না। আসেন জিততে। আর সে জন্য আপনাকে সেই ব্র্যান্ডেরই ক্রিকেটটা খেলতে হবে। যেখানে বিপক্ষের কুড়িটা উইকেট তুলতে পারাটাই আপনার আসল কাজ।’’
শাস্ত্রীয় মত, শেষ কিছু মাসে দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া সফরে ভারতীয় দল অনেক শিখেছে। বিদেশে ইদানীং প্রচুর ক্রিকেটে খেলেছে ভারত। যে অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই একটা ফ্যাক্টর হবে এ রকম একটা বিদেশ সফরে, যেখানকার কন্ডিশনের সঙ্গে ভারতীয় ক্রিকেটররা অনেকটাই পরিচিত। কেননা শ্রীলঙ্কার আবহাওয়া, উইকেট অনেকটা দক্ষিণ ভারতের ক্রিকেট সেন্টারগুলোর মতোই। ‘‘বিদেশে টেস্ট ম্যাচ জেতা শুরু করাটা আমাদের কাছে এই মুহূর্তে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ,’’ বলে দিলেন শাস্ত্রী।

বিরাট কোহলির পাঁচ বোলারে খেলার স্ট্র্যাটেজির প্রতিও সিরিজ শুরুর আটচল্লিশ ঘণ্টা আগেই প্রকাশ্যে পূর্ণ সমর্থন জানালেন শাস্ত্রী। অধিনায়কের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে টিম ডিরেক্টর চলতি অ্যাসেজে ইংরেজ-দাপটকেও টেনে আনলেন। ‘‘পাঁচ বোলার হাতে থাকা মানে আপনার হাতে একটা বাড়তি বোলিং বিকল্প থাকছে। ক্লোজ ম্যাচে যা আপনার সাহায্যে লাগতে পারে। যেটা আপনি আগে পেতেন না। টেস্ট জিততে গেলে নিজেদের বিশাল রানের ইনিংসের চেয়েও বেশি জরুরি বিপক্ষের কুড়িটা উইকেট তোলাটা। অ্যাসেজে ইংল্যান্ডের কথাই ভাবুন না একবার। দু’টো দলের মধ্যে আসল পার্থক্যটা করে দিয়েছে ইংল্যান্ডের বোলিং লাইন আপের গভীরতাটাই।’’

শ্রীলঙ্কার মাটিতে ভারত শেষবার টেস্ট সিরিজ জিতেছে ১৯৯৩-এ। তার পর বাইশ বছর কেটে গিয়েছে। এবং শাস্ত্রীর মনে পড়ছে, ‘‘আশির দশকে আমি যখন প্রথম এ দেশে টেস্ট সিরিজ খেলতে এসেছিলাম, ওরাই ১-০ জিতেছিল। তখনই ওদের বোলিং অ্যাটাকটা বেশ ভাল। তার পর মাঝের বছরগুলোতে ওদের বোলিংয়ে মুরলীধরনের অবদান বিরাট। অবশ্যই জয়বর্ধনে-সঙ্গকারার মতো ব্যাটও ওরা পেয়েছে। কিন্তু আবার বলছি মুরলীই ওদের সাফল্যের আসল লোক। কেননা আসল ব্যাপারটা হল কুড়িটা উইকেট তোলা।’’

আসন্ন সিরিজ দু’টো দেশের দু’টো তরুণ দলের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে শাস্ত্রীর ভবিষ্যদ্বাণী। একই সঙ্গে ভারতীয় ব্যাটিং লাইন আপে তিনে রোহিত বনাম পূজারা বিতর্কে টিম ডিরেক্টরের ব্যাখ্যা, ‘‘প্রথম এগারোয় রোহিতের সুযোগ প্রাপ্য। ও একজন ক্লাস প্লেয়ার। ওর ব্যাটিংটা কফির গন্ধ নেওয়ার মতো। ক্রিজে এসে উইকেটটাকে যেন একটু শুঁকে দেখে। তার পর নিজের কাজটা শুরু করে দেয়। আর রোহিত একবার কাজে নামলে যে কী করতে পারে সেটা আমরা সবাই জানি।’’

পাঁচ বোলারে খেলতে গিয়ে যে ব্যাটিং অর্ডারে ছয় নম্বরে ঋদ্ধিমান সাহার উপর ভরসা রাখতে হবে সেই ব্যাপারেও এ দিন সরাসরি নিজের ধারণা জানিয়ে দিলেন শাস্ত্রী। ‘‘সাহা খুব ভাল প্লেয়ার। ও হয়তো কয়েক বার কম রানে আউট হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ওর বড় স্কোর করার টেম্পারামেন্ট আছে। সিডনিতে দ্বিতীয় ইনিংসে সাহা সত্যিই খুব ভাল ব্যাট করেছিল। টেস্টটা ড্র রাখার পিছনে ওর অবদান ছিল। একটা ভাল শুরুকে সাহা যদি একবার বড় স্কোরে পরিণত করতে পারে তা হলেই ওর আত্মবিশ্বাস এসে যাবে টেস্টে ছয় নম্বরে নিয়মিত ব্যাট করার ব্যাপারে।’’

শাস্ত্রীকে যেন একটা ব্যাপারেই এ দিন সামান্য চিন্তিত দেখাল। যখন বললেন, ‘‘বিজয় খুব অভিজ্ঞ ওপেনার। লম্বা ইনিংস খেলতে পারে। ওকে আমরা অবশ্যই মিস করব প্রথম টেস্টে।’’

আসলে গল ধরে তিন টেস্টে তিনটি পৃথক ওপেনিং জুটি নামাতে বাধ্য হচ্ছে ভারত। যদিও শ্রীলঙ্কা রওনা হওয়ার আগে শিখর ধবন বলেছিলেন, ‘‘ওপেনিংয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকাটা তো ভারতীয় ক্রিকেটের পক্ষেই শুভ লক্ষণ।’’ সঙ্গে এটাও বলতে ভোলেননি, ‘‘লোকেশ (রাহুল) এখন বহু বছর দেশের হয়ে খেলবে। ফলে বিজয় বা আমি , যে-ই ওর সঙ্গী ওপেনার হই না কেন, আমাদের কাজ ওকে ঠিক মতো গাইড করা। লোকেশ আমাদের কাছে ছোটভাইয়ের মতো।’’

নিজের টাটকা ফর্ম নিয়ে ধবন একই সঙ্গে সতর্ক এবং আশাবাদী। ‘‘ইদানীং আমি যে ক’টা টেস্ট খেলেছি সেগুলো অনেক দিন বাদে বাদে হয়েছিল। শ্রীলঙ্কায় বড় সিরিজ। এক মাসের মধ্যে তিনটে টেস্ট খেলার সুযোগ পেলে হয়তো ধারাবাহিকতাও ফিরে আসবে আমার ব্যাটে।’’

দেখার, ধবনের আশা পূরণ হয়ে কি না।

শ্রীলঙ্কায় সঙ্গা-জ্বর

নিজস্ব সংবাদদাতা • গল

দুপুরের পর নামলেন ঐতিহাসিক স্টেডিয়ামের সিঁড়ি দিয়ে। বিদায়বেলায় গলে

শেষ বার জ্বলে ওঠার প্রস্তুতি শুরু করে দিলেন কুমার সঙ্গকারা। ছবি: দেবাশিস সেন

গলের যে স্টেডিয়ামে কেরিয়ারের শেষের শুরু হবে কুমার সঙ্গকারার, সেই মাঠ তাঁর সব সতীর্থের খুব প্রিয়। সুনামিতে ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর নতুন করে তৈরি গল স্টেডিয়ামের কিউরেটর জয়ানন্দ বর্ণবীরও। প্রাক্তন অফস্পিনার বর্ণবীরের দায়িত্বে থাকার সময় এই গলেই শেষ টেস্ট খেলেন মুথাইয়া মুরলীধরন। দেশের অন্যতম কিংবদন্তির জন্য বিশাল পার্টিও দেন বর্ণবীর। এ বার সঙ্গকারার জন্য সে রকমই প্ল্যান হচ্ছে। কিন্তু এর বেশি একটা শব্দও বলতে নারাজ বর্ণবীর। তবে শোনা যাচ্ছে, গোপনে হলেও পার্টির তোড়জোড় নাকি জোরকদমে চলছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy