আকানে ইয়ামাগুচি ও পিভি সিন্ধু। ফাইল চিত্র।
প্রতিযোগিতা যত এগোতে থাকে, ততই সেরা ছন্দে দেখা যায় পিভি সিন্ধুকে। বরাবরই বড় ম্যাচের খেলোয়াড়। প্রতিপক্ষ শক্তিশালী হলে ওর খেলার মধ্যে হার-না-মানা লড়াই ফুটে ওঠে।
বৃহস্পতিবারও যেমন ডেনমার্কের মিয়া ব্লিশফেল্ডকে কার্যত উড়িয়ে দিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট পাকা করল অলিম্পিক্স পদক জয়ী। শেষ আটে ওর প্রতিপক্ষ আকানে ইয়ামাগুচি। বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে পাঁচে রয়েছে জাপানের তারকা।
ইয়ামাগুচির বিরুদ্ধে সিন্ধুর পরিসংখ্যান মুখে হাসি ফোটাতে পারে ভারতীয় সমর্থকদের। শেষ ১৮ বারের সাক্ষাতে ভারতীয় তারকা জিতেছে ১১ বার। সাতটি ম্যাচ জিতেছে ইয়ামাগুচি। শেষ বার অল ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়নশিপে ইয়ামাগুচিকে হারিয়েই সেমিফাইনালে উঠেছিল সিন্ধু। প্রথম গেম হেরে গিয়েও পরের দু’টি জিতে চমকে দিয়েছিল ২৬ বছরের তরুণী। টোকিয়োতেও ধৈর্য ধরেই খেলতে হবে সিন্ধুকে। একটি গেম হারলেও যেন মেজাজ না হারিয়ে ফেলে। ইয়ামাগুচি চেষ্টা করবে র্যালি করে ক্লান্ত করে দেওয়ার। সেই ফাঁদে সিন্ধুর পা দিলে চলবে না। মিয়ার বিরুদ্ধে যে খেলাটা খেলেছে, সেটা কিন্তু ইয়ামাগুচির বিরুদ্ধে খেললে চলবে না।
মিয়ার উচ্চতা ভাল। খুবই আগ্রাসী। ও চেষ্টা করেছিল স্ম্যাশের সাহায্যে সিন্ধুর মনোবল নষ্ট করে দিতে। কিন্তু রক্ষণ মজবুত করার পরে সিন্ধু এ ধরনের পরিকল্পনায় ভেঙে পড়ে না। ও কিন্তু মিয়ার বিরুদ্ধে র্যালি করেই হঠাৎ একটি স্ম্যাশে পরাস্ত করেছে। ম্যাচের মাঝের দিকে যদিও ভাল খেলতে শুরু করেছিল মিয়া। প্রথম গেমের শেষ পাঁচ পয়েন্ট ও দ্বিতীয় গেমের প্রথম পাঁচ পয়েন্ট টানা পেয়েছিল সিন্ধু। সব সময়ই তিন পয়েন্টের ব্যবধান ছিল মিয়ার বিরুদ্ধে।
ইয়ামাগুচির খেলার ধরন কিন্তু এ রকমই। ও চায় বিপক্ষ যেন ওর বিরুদ্ধে র্যালি করতে থাকে। কারণ, ইয়ামাগুচির উচ্চতা কম (পাঁচ ফিট এক ইঞ্চি)। স্ম্যাশের সাহায্যে বিপক্ষকে পরাস্ত করা ওর পক্ষে কঠিন। ওর লক্ষ্য থাকে গায়ে স্ম্যাশ করার। প্রতিপক্ষ যেন নড়াচড়া করার সময় না পায়। সেটা সিন্ধুকে খেয়াল রাখতে হবে। ইয়ামাগুচি দ্রুত ক্লান্তও হয়ে পড়ে। কোর্ট কভার করতে ওকে বাড়তি পরিশ্রম করতে হয়। সিন্ধু কিন্তু উচ্চতা কাজে লাগিয়ে দ্রুত শাটলের কাছে পৌঁছে যেতে পারে।
সিন্ধুর শক্তি অনুযায়ী ইয়ামাগুচির বিরুদ্ধে ওর জেতার সম্ভাবনা ৬০ শতাংশ। ভারতীয় তারকার স্ম্যাশ অত্যন্ত বিপজ্জনক। নেটের সামনে দাঁড়িয়ে খেলার প্রবণতা আছে। ইয়ামাগুচির বিরুদ্ধে যতটা সম্ভব নেটের কাছে দাঁড়িয়েই খেলতে হবে সিন্ধুকে। কারণ, প্রতিপক্ষ চেষ্টা করবে ড্রপ শট খেলে ওকে বিভ্রান্ত করার। ভারতীয় তারকার উচিত বিপক্ষকে ‘রং ফুট’-এ খেলানোর। তাতে ইয়ামাগুচি দ্রুত শাটলের কাছে পৌঁছতে সমস্যায় পড়বে।
অনেকেই মনে করছেন, টোকিয়োয় খেলা, তাই ইয়ামাগুচির কাছে এই ম্যাচ অনেকটাই সহজ। ঘরের কোর্টে খেলার সুবিধে পেতে পারে। আমার কিন্তু একেবারেই তা মনে হয় না। অলিম্পিক্স মানে ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’। সেখানে অন্তত ঘরের কোর্টের সুবিধা কেউ পায় না। তা ছাড়া ব্যাডমিন্টনে ইয়ামাগুচির উপরেই পদকের আশা জাপানের। কেন্তো মোমোতা হেরে গিয়েছে। মিক্সড ডাবলসে সেমিফাইনালে হেরে গিয়েছে ইউতা ওয়াতানাবে ও আরিসা হিগাশিনো জুটি। মেয়েদের ডাবলস থেকেও ছিটকে গিয়েছে জাপান। একমাত্র ইয়ামাগুচির দিকেই তাকিয়ে আছে পদকের আশায়। এই চাপ কিন্তু ভয়ঙ্কর। ঘরের মাঠে নিজের জেতার চাপের সঙ্গেই সারা দেশের প্রত্যাশার বোঝা ওকে অনেকটাই পিছিয়ে দিতে পারে। সে দিক থেকে সিন্ধু অনেকটাই চাপমুক্ত। অলিম্পিক্সে কী ধরনের পরিকল্পনা নিয়ে নামা উচিত, ওর জানা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy