সন্তুষ্ট: পিয়ারলেসের ইতিহাস সৃষ্টিকারী কোচ জহর দাস।
খেতাব জয়ের পরে পিয়ারলেস ফুটবল দলের ভবিষ্যৎ কী?
তিন প্রধানের বাইরে একষট্টি বছর পরে ছোট দল হিসাবে পিয়ারলেস কলকাতা লিগ জিতেছে। মহাষষ্ঠীর রাত পর্যন্ত স্পষ্ট নয়, তারা আই লিগের দ্বিতীয় ডিভিশনে দল নামাবে কি না। শুক্রবারই আইএফএ-র পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে তাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে আই লিগে খেলবে কি না? ফুটবল দল চালান যে কর্তারা, তাঁরা নিজেরাই এখনও ধোঁয়াশায়। তাকিয়ে আছেন কোম্পানির সিদ্ধান্তের দিকে। ফুটবল বিভাগের এক কর্তা বললেন, ‘‘লক্ষ্মীপুজোর পর অফিস খুললে বুঝতে পারব ভবিষ্যৎ কী? ফুটবলারদের বলেছি, দিন পনেরো অপেক্ষা করতে।’’
কলকাতা লিগে প্রথম চারে থাকা দলগুলিই আই লিগে খেলার সুযোগ পায়। পিয়ারলেস গতবার রানার্স হয়েও খেলেনি। ফুটবলারদের ছেড়ে দিয়েছিল। এ বার সিদ্ধান্ত বদল হলেও দলের সেরা বিদেশি আনসুমানা ক্রোমা, ভার্নে কোলন, নরহরি শ্রেষ্ঠর মতো ফুটবলারদের ছেড়ে দিতে হবে তাদের। কারণ লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা ক্রোমাকে চাইছে আই লিগের তিনটি ক্লাব নেরোকা, আইজল এবং গোকুলম। কোলন ফিরে যাচ্ছেন নেরোকায়।
ক্রোমারা চলে গেলেও দলের কোচ জহর দাস মনে করেন, ‘‘এই দলটি আই লিগে খেললে ভাল ফল করবে। অনেক বঙ্গসন্তান খেলার সুযোগ পাবে। পঙ্কজ মৌলা, মনতোষ চাকলাদার, লক্ষ্মী মান্ডিরা কেন হারিয়ে যাবে? ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানে যে বঙ্গ ফুটবলারদের খেলার সুযোগই প্রায় নেই।’’ ইতিহাস ছুঁয়ে খেতাব জিতলেও ইস্টবেঙ্গল যে ভাবে শেষ ম্যাচ ওয়াকওভার দিয়েছে, তা মেনে নিতে পারছেন না দেশ জুড়ে কোচিং করে বেড়ানো জহর। বলছিলেন, ‘‘অপেক্ষা করেছিলাম ইস্টবেঙ্গল-কাস্টমস ম্যাচের ফল কী হয় দেখার জন্য। টিভি খুলে বসেওছিলাম। গড়াপেটা হতে পারে এই আশঙ্কা ছিল। কল্যাণীতে খেলাটা হলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দটা বেশি হত। একটা উত্তেজনার মধ্যে লিগ শেষ হত। কিন্তু সাত গোল করতে পারবে না বলে এরকম ঐতিহ্যশালী দল লড়াই না করে পালিয়ে গেল, এটা ভাবতেই পারছি না।’’
শেষ ম্যাচ ওয়ারওভার দিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে ইস্টবেঙ্গল। ফেসবুক, টুইটারে লাল-হলুদের এই কলঙ্কিত ঘটনা নিয়ে কটাক্ষ, টিপ্পনি শুক্রবারও অব্যাহত। পিয়ারলেস কোচ যা উস্কে দিয়েছেন এই বলে যে, ‘‘এখন তো মনে হচ্ছে আমার ছেলেরা ইস্টবেঙ্গলকে এমন চাপে ফেলে দিয়েছিল যে, স্পেনীয় কোচ পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। ইস্টবেঙ্গলকে তো বিশ্ব চেনে ফুটবলের জন্য। সেই ক্লাবের শতবর্ষ চলছে। ওরা যদি সেই ফুটবলই না খেলে, তা হলে কীসের শতবর্ষের উৎসব?’’
১৯৭৭-এ অমল দত্তের কোচিংয়ে ইস্টবেঙ্গলে খেলেছিলেন জহর। সেবার লিগে তিন গোল ছিল তাঁর। প্রয়াত ‘ডায়মন্ড’ কোচের প্রভাব রয়েছে হাওড়ার সত্তরে পা দেওয়া পিয়ারলেস কোচের উপরেও। যখন যেখানে সুযোগ পেয়েছেন, কোচিং করিয়েছেন। ভিলাই, আইজল, অসম, মুম্বই—যে যখন ডেকেছে, চলে গিয়েছেন কোচিং করাতে। মোহনবাগানে সিনিয়র ও অ্যাকাডেমি মিলিয়ে আট বছর কোচিং করিয়েছেন। প্রয়াত অমলের মতোই কখনও বাতিল হয়েছেন, সফল হয়েছেন। কিন্তু চ্যালেঞ্জ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থেকেছেন সবসময়। এ বারও পিয়ারলেসের কোচের ডাক পান হঠাৎ-ই। রঞ্জন চৌধুরী, সুব্রত ভট্টাচার্য (পটলা) রাজি না হওয়ায় তাঁকে শেষ মুহুর্তে প্রস্তাব দেন পিয়ারলেস কর্তারা। এবং সবাই মানছেন ক্রোমার মতো ‘খেপ’ খেলা ফুটবলারকে সামলে, বঙ্গসন্তানদের এক সূত্রে গেঁথে সফল হয়েছেন তিনি। তবুও বলছেন, ‘‘এটা আমার সেরা সাফল্য নয়। বরং ’৮১-তে সালকিয়া ফ্রেন্ডসকে কোচিং করিয়ে প্রথম ডিভিশনে তোলাটা সেরা। ওই দলের একজন ফুটবলারকেও কেউ চিনত না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy