উল্লাস: মিলম্যানকে হারিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের সেমিফাইনালে ওঠার পরে নোভাক জোকোভিচ। এএফপি
রজার ফেডেরারকে ছিটকে দেওয়া জন মিলম্যানের স্বপ্নের দৌড় থামিয়ে দিলেন নোভাক জোকোভিচ। যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালে প্রাক্তন বিশ্বসেরা সার্বিয়ান তারকা স্ট্রেট সেটে জিতলেন অস্ট্রেলীয় খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে। ফল ৬-৩, ৬-৪, ৬-৪।
কনুইয়ের চোট থেকে ফিরে আসার পরে ৫৪ সপ্তাহের ট্রফি খরা কাটিয়েছিলেন জোকোভিচ এ বছর উইম্বলডন জিতে। ফলে চলতি মরসুমে তিনি দ্বিতীয় গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয় থেকে আর দু’ধাপ দূরে তিনি। এই নিয়ে টানা ১১ বার যুক্তরাষ্ট্র ওপোনের সেমিফাইনালে উঠলেন তিনি। খেতাব জিতলে তিনি পিট সাম্প্রাসের ১৪ গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের নজির স্পর্শ করবেন। তাই ২০১১ এবং ২০১৫ সালের পরে ফের তাঁর হাতে যুক্তরাষ্ট্র ওপেন খেতাবের আশায় তাঁর ভক্তরা।
তবে স্ট্রেট সেটে জিতলেও জোকোভিচের জয় কিন্তু সহজে আসেনি। আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে প্রচণ্ড গরম এবং আর্দ্রতার বাধা সামলে মিলম্যানের বিরুদ্ধে প্রায় ২ ঘণ্টা ৪৯ মিনিটের লড়াইয়ের পরে জোকোভিচকে যথেষ্ট তৃপ্ত মনে হচ্ছিল। প্রি-কোয়ার্টারে ফেডেরার মিলম্যানকে হারানোর উপায় খুঁজে পাননি। জোকোভিচ পেরেছেন। সেই জন্যই হয়তো। ‘‘মিলম্যান প্রচুর পরীক্ষা নিয়েছে আজ। ও এমন এক জন খেলোয়াড় যে বিপক্ষকে বল ফস্কাতে বাধ্য করে। ওর কাছ থেকে পয়েন্ট পাওয়ার জন্য যথেষ্ট লড়াই করতে হয়েছে,’’ বলেন জোকোভিচ।
মিলম্যানকে হারানোর পরে ফাইনালে জোকোভিচ বনাম রাফায়েল নাদালের দুরন্ত লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখছেন অনেকে। তার জন্য অবশ্য জোকভিচকে আগে শেষ চারে কেই নিশিকোরিকে হারাতে হবে। নাদালকেও জিততে হবে খুয়ান মার্তিন দেল পোত্রোর বিরুদ্ধে অপর সেমিফাইনালে।
জাপানি তারকা নিশিকোরি চার বছর আগে জোকোভিচকে হারিয়েই যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের ফাইনালে উঠেছিলেন। প্রথম এশীয় খেলোয়াড় হিসেবে সে বার কোনও গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে ওঠার নজিরও গড়েন তিনি। তার পরে অবশ্য আর কোনও গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে উঠতে পারেননি তিনি। ২১ নম্বর বাছাই নিশিকোরি কোয়ার্টার ফাইনালে প্রবল লড়াইয়ের পরে হারান মারিন চিলিচকে। ফল নিশিকোরির পক্ষে ২-৬, ৬-৪, ৭-৬ (৭-৫), ৪-৬, ৬-৪। এই চিলিচের কাছেই ২০১৪ যুক্তরাষ্ট্র ফাইনালে হেরে গিয়েছিলেন নিশিকোরি। এ বার কিন্তু তিনি কোনও ভুল করেননি। তবে ক্রোয়েশিয়ার তারকাকে হারাতে নিশিকোরির লাগল প্রায় চার ঘণ্টা। ‘‘জানি না কেন মারিনের বিরুদ্ধে কোর্টে নামলেই প্রবল লড়াই হয় আমাদের,’’ বলেন নিশিকোরি। সপ্তম বাছাই ক্রোয়েশীয় তারকার বিরুদ্ধে যাঁর মুখোমুখি লড়াইয়ের পরিসংখ্যান দাঁড়াল ৯ জয় ৬ হার।
কেই নিশিকোরির পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে মেয়েদের সিঙ্গলসে শেষ চারে উঠলেন জাপানের নাওমি ওসাকা। ২২ বছর পরে কোনও জাপানি খেলোয়াড় গ্র্যান্ড স্ল্যামের শেষ চারে ওঠার নজির গড়লেন। শুধু তাই নয় এই প্রথম একই গ্র্যান্ড স্ল্যামে পুরুষ ও মেয়েদের সিঙ্গলসের শেষ চারে উঠলেন জাপানের দুই খেলোয়াড়। শেষ চারে ওঠার পথে ওসাকা ৬-১, ৬-১ হারান লেসিয়া সুরেঙ্কোকে।
শেষ বার জাপানি মহিলা হিসেবে কিমিকো দাতে গ্র্যান্ড স্ল্যামের সেমিফাইনালে উঠেছিলেন যখন, ওসাকার জন্ম হয়নি। কিমিকো উইম্বলডনের সেমিফাইনালে উঠেছিলেন ১৯৯৬ সালে। তবে ২০ বছর বয়সি ওসাকার সামনে এ বার পূর্বসূরিকে ছাপিয়ে যাওয়ার দারুণ সুযোগ রয়েছে। সেই পথে তাঁকে এ বার মুখোমুখি হতে হবে চতুর্দশ বাছাই যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাডিসন কিইজের।
মুখোমুখি লড়াইয়ে কিইজের বিরুদ্ধে ০-৩ পিছিয়ে আছেন ওসাকা। এর মধ্যে ২০১৬ যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের তৃতীয় রাউন্ডে হারও রয়েছে। ‘‘সেমিফাইনালে ওঠাটা আমার কাছে বিরাট গুরুত্বপূর্ণ ছিল,’’ বলেন ওসাকা। শেষ ষোলোয় যিনি জেতার পরে আবেগে কোর্টেই কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন। জাপানি তারকা বলেন, ‘‘এর আগের ম্যাচে জেতার পরে কেঁদে ফেলেছিলাম কারণ, অনেকে আমায় নিয়ে মজা করছিল। তবে এ বার সোজা নেটে উঠে এসে খেলেছি। ভিতরে ভিতরে খুব চাপে ছিলাম। আমার গোটা শরীর কাঁপছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যে উত্তেজনায় র্যাকেট ভাঙার মতো ঘটনা ঘটাইনি তাতেই খুশি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy