হর্ষ-বিষাদ: সেমিফাইনাল থেকে সরে দাঁড়ানোর পরে হতাশ নাদাল।ফাইনালে উঠে নোভাক জোকোভিচের হুঙ্কার। এএফপি
যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের ফাইনালে রাফায়েল নাদাল বনাম নোভাক জোকোভিচের লড়াই হচ্ছে না। টেনিসপ্রেমীদের আশায় জল ঢেলে দিল স্প্যানিশ তারকার হাঁটুতে চোট। তবে দাপটে ফাইনালে উঠেছেন জোকোভিচ। ফাইনালে তাঁর সামনে খুয়ান মার্তিন দেল পোত্রো। যিনি ২০০৯ যুক্তরাষ্ট্র ওপেন চ্যাম্পিয়নও।
আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে ম্যাচটা চলার মধ্যেই কোর্ট থেকে যখন রাফায়েল নাদাল তাঁর কোচকে কিছু একটা ইঙ্গিত করছিলেন তখনই মনে হচ্ছিল কিছু একটা সমস্যা হচ্ছে তাঁর। কিছুক্ষণ পরে স্প্যানিশ তারকা কোর্টে যখন ফিজিয়োকে ডেকে হাঁটুতে টেপ বাঁধতে বলেন, তখন বোঝা যায় সমস্যাটা বেশ গভীর। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যে তাঁকে ম্যাচটাই মাঝপথে ছেড়ে দিতে হবে সেটা আন্দাজ করতে পারেননি কেউই। ব্যাপারটা বোঝা গেল যখন টেনিস বিশ্বে বল তাড়া করে খেলার ক্ষেত্রে সবচেয়ে নাছোড় খেলোয়াড় হিসেবে পরিচিত নাদাল একটা বল ছেড়ে দিলেন কোনও চেষ্টা না করেই।
শেষ পর্যন্ত ৬-৭ (৩-৭), ২-৬ পিছিয়ে থাকার সময় নাদাল ম্যাচ থেকে সরে দাঁড়ান। এত দূরে এসেও গত বারের চ্যাম্পিয়ন ও বিশ্বের এক নম্বরের এ ভাবে ছিটকে যাওয়ার যন্ত্রণাটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল। তবে, হাঁটুর চোট সারিয়ে দ্রুত কোর্টে ফেরার লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রতিজ্ঞাও জানিয়ে গেলেন নাদাল। ‘‘আমি এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে যাব। এই মূহূর্তগুলো সামলানো খুব কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তবে চেষ্টা করে যাব আবার যেন এ রকম সুযোগের সামনে আসতে পারি,’’ বলেন নাদাল।
১৭ গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক গত দু’বছরে চারটি গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে উঠেছেন গত দু’বছরে। তার মধ্যে ২০১৭ যুক্তরাষ্ট্র ওপেন ছাড়া টানা দুটি ফরাসি ওপেন খেতাবও দখল করেছেন। সেটা মনে করিয়ে দিয়েই নাদাল বলেন, ‘‘গত দু’বছর আমার জন্য খুব ভাল গিয়েছে। এখন সেই মুহূর্তগুলো উপভোগ করতে চাই। এ বছরও দারুণ যাচ্ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য এমন একটা পরিস্থিতির মুখে পড়তে হল।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘আমি সঠিক পথেই এগোচ্ছি। সবচেয়ে বড় কথা উপভোগ করছি আমার খেলা। ৩২ বছর বয়েসেও সাফল্য পাচ্ছি। অনেকেই ভাবতে পারেনি এই বয়েসে আমি এ ভাবে খেলে যেতে পারব। এখনও আমার মধ্যে জেতার খিদে রয়েছে। আবেগ রয়েছে। তাই আমি লড়াইটা চালিয়ে যাব।’’
এর আগেও নাদাল কেরিয়ারে বেশ কয়েক বার চোটের কারণে বেশ কয়েক সপ্তাহ, এমনকি বেশ কয়েক মাসও ভুগেছেন। এই চোটটা তুলনায় কতটা গুরুতর? নাদাল বলেন, ‘‘আমার গোটা খেলোয়াড় জীবন ধরেই শুনে আসছি আমার খেলার যা দরণ তাতে বেশি দিন টিকতে পারব না কোর্টে। কেরিয়ার বেশি এগোবে না। কিন্তু এখনও দেখুন আমি কিন্তু খেলে যাচ্ছি।’’
ঠিক উল্টো ছবি দেখা গেল দ্বিতীয় সেমিফাইনালে। জোকোভিচ প্রায় দাঁড়াতেই দিলেন না প্রতিদ্বন্দ্বী কেই নিশিকোরিকে। জিতলেন ৬-৩, ৬-৪, ৬-২। গত বছর কনুইয়ের চোটে যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে নামতেই পারেননি প্রাক্তন বিশ্বসেরা সার্বিয়ান তারকা। কে জানত সেই ধাক্কা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে উইম্বলডনের পরে টানা দ্বিতীয় গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের সামনে চলে আসবেন যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে। ‘‘খুব স্বচ্ছন্দ লাগে আমার এই প্রতিযোগিতায় খেলতে। আমার অন্যতম প্রিয় টুর্নামেন্ট এটা। কারণ এখানকার পরিবেশে খেলতে আমার খুব ভাল লাগে। তা ছাড়া প্রতি বছরই আমি এখানে খুব ভাল খেলি বলে বার বার ফিরে আসি,’’ বলেন জোকোভিচ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy