উদ্বিগ্ন: পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে জানেন না আসামোয়ারা।
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএবি)-এর প্রতিবাদে উত্তাল গুয়াহাটিতে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত নর্থইস্ট ইউনাইটেড ও চেন্নাইয়িন এফসির ফুটবলারেরা। উত্তরপূর্বাঞ্চলের রাজ্য অসমের এই শহর বুধবার থেকেই অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে। পরিস্থিতি সামলাতে সন্ধ্যায় জারি করা হয় কার্ফু। বন্ধ করে দেওয়া হয় মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবাও।
এই মুহূর্তে গুয়াহাটির অবস্থা এতটাই ভয়াবহ যে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে আইএসএলে বৃহস্পতিবারের নর্থইস্ট বনাম চেন্নাইয়িন ম্যাচ। দু’দলের ফুটবলার ও অন্যান্য সদস্যদের হোটেলের বাইরে যেতে বারণ করে দেওয়া হয়েছে।
সব চেয়ে ভয়াবহ অবস্থা চেন্নাই শিবিরের। এ দিন সকালে ম্যাচ বাতিলের খবর পেয়ে ফুটবলারেরা স্বস্তি পেয়েছিলেন। আশা করেছিলেন, দুপুরের মধ্যেই গুয়াহাটি ছেড়ে বেরোতে পারবেন। চেন্নাই কর্তারাও চেষ্টা করেছিলেন, পুরো দলকে ফিরিয়ে আনতে। কিন্তু তাঁদের যাবতীয় পরিকল্পনা ভেস্তে গিয়েছে। উদ্বিগ্ন চেন্নাইয়ের এক কর্তা ফোনে আনন্দবাজারকে বললেন, ‘‘বেশ কিছু উড়ান বাতিল হয়ে গিয়েছে। তা ছাড়া এই মুহূর্তে গুয়াহাটির যা পরিস্থিতি তাতে হোটেল থেকে ফুটবলারদের নিয়ে বিমানবন্দরে যাওয়াটা অত্যন্ত ঝুঁকির হয়ে যাবে। যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। পুরো পরিস্থিতির উপরে আমরা নজর রাখছি। চেষ্টা করছি দ্রুত পুরো দলকে ফিরিয়ে আনার।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘অবস্থার আরও অবনতি হলে কী হবে জানি না।’’ আতঙ্কিত চেন্নাইয়ের এক ফুটবলার বলছিলেন, ‘‘আমাদের টিম হোটেল শহরের বাইরে হাইওয়ের ধারে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দেখছি সেনাবাহিনীর গাড়ি চলাচলের সংখ্যা অনেক বেড়ে গিয়েছে। মোবাইলে ইন্টারনেট নেই। ফোন করতেও সমস্যা হচ্ছে। অনেক চেষ্টা করে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতে পেরেছি। তবে সমস্যা সব চেয়ে বেশি হচ্ছে বিদেশি ফুটবলারদের।’’ কেন? তিনি বললেন, ‘‘ওরা সকলেই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার জন্য ‘হোয়াটসঅ্যাপ কল’ করে। ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওরা যোগাযোগ করতে পারছে না।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘হোটেলের ওয়াই ফাই অবশ্য চালু রয়েছে। কিন্তু তাতে বিশেষ লাভ হচ্ছে না। কথা বলা যাচ্ছে না একেবারেই।’’
নর্থইস্ট শিবিরে বিদেশি ও ভিনরাজ্যের ফুটবলার মিলিয়ে মোট বারো জন রয়েছেন। তাঁরাও মরিয়া গুয়াহাটি ছাড়তে। বলছিলেন, ‘‘বুধবার বিকেলে অনুশীলন করে স্টেডিয়াম থেকে হোটেলে ফেরার সময় রাস্তায় সেনাবাহিনীর টহল দেখেছি। কিন্তু ভাবতে পারিনি, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অবস্থার এতটা অবনতি হবে।’’ আরও বললেন, ‘‘পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে তা কেউ জানে না। এই অবস্থায় গুয়াহাটিতে ম্যাচ হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। অনুশীলনও করতে পারব না। হোটেলেই বন্দি থাকতে হবে। তা হলে এখানে থেকে কী করব?’’
শুধু ফুটবল নয়, অশান্তির প্রভাবে বন্ধ ক্রিকেটও। বাতিল হয়ে গিয়েছে রঞ্জি ট্রফির দুটি ম্যাচ। গুয়াহাটিতে অসম বনাম সার্ভিসেসের ম্যাচ চলছিল। বৃহস্পতিবার ছিল চতুর্থ দিনের খেলা। কিন্তু কার্ফুর জেরে খেলা শুরুই করা যায়নি এ দিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy