খুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অস্থায়ী স্টেডিয়াম। —নিজস্ব চিত্র
এসডিও অফিসের মুখোমুখি সবুজ মাঠটা নাগাড়ে ভিজে চলেছে।
দু’একটা ছুটন্ত গাড়ি, জমা জলে ছ্যাররর করে ফোয়ারা তুলে হারিয়ে যাওরা আগে এক ঝলক থেমে যাচ্ছে মাঠের সামনে। কাচ নামিয়ে উড়ে আসছে টাটকা স্বগতোক্তি— ‘‘কাল খেলা হলে শা... কে রোখে দেখি!’’
সেই রুখে তো দিল!
চোখের আরাম, সেই সবুজ মাঠটা শেষতক ভিজতে ভিজতে খেলাটা রুখেই দিল। কল্যাণীর বাগানে এখন তাই বিরাট এক ‘না’। ডার্বি হচ্ছে না।
মঙ্গলবার, সে বৃষ্টি থেমে গিয়েছে। রোদ ঠিকরোচ্ছে মাঠে। লাল-সাদা বলে কোমর, হাঁটু, চেটো নাচিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে দলটা। ইস্টবেঙ্গল, ওরা এসে গিয়েছে। আসেনি মোহনবাগান।
ময়দান মার্কেট থেকে, দিন তিনেক আগে কেনা সবুজ-মেরুন জার্সিটা চাপিয়েই টিকিট কিনতে এসেছিলেন তাহেরপুরের পিন্টু সাহা। টিকিট? স্টেডিয়ামের গেট থেকেই ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁকে— খেলা হবে কিনা ঠিক নেই, টিকিট!
তবু, এ দিন ভেজা বিকেলে একবার খোলা মাটটাই দেখতে এসেছিলেন। ‘‘যদি মত বদলায় দল’’, বলছেন পিন্টু। তাঁর সাধের বাগান যে বিকেলে জানিয়ে দেবে, কল্যাণীর মাঠ না-পসন্দ— জানতেনই না। রাগ হচ্ছে তাঁর ভীষণ।
খেলা না হোক, কল্যাণী স্টেডিয়ামে প্র্যাকটিসে নেমে পড়ল ইস্টবেঙ্গল।— শঙ্কর নাগদাস
আর ইমতিয়াজ? কাঁচরাপাড়ার পাঁড় ইস্টবেঙ্গল ছেলেটি বলছেন, ‘‘ভয় পাইল জানেন, মোহনবাগানিরা ভয়ে পালাইল। হেই জইন্য আমাগো কল্যাণীর মাঠটা এহন একা একাই কাইন্দসে।’’
বুধবারের বড় ম্যাচ হবে না— ঘোষমা যখন হচ্ছে, তখনও সে মাঠের সামনে কয়েকশো প্রত্যাশী বাইরে অপেক্ষায়। বড় ম্যাচ যে বাতিল হতে পারে তেমন আভাস সোমবারই মিলেছিল। কারণ, মোহনবাগান বুধবার ম্যাচ খেলবে না বলেই জানিয়ে দিয়েছিল। তবুও আশা জেগেছিল আইএফএ-র বিবৃতিতে। ম্যাচ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সেটুকু জানতে পেরেই এ দিন সকাল থেকে কল্যাণী স্টেডিয়ামের বাইরে ভিড় জমিয়েছিল অসংখ্য মানুষ।
অস্থায়ী গ্যালারি খুলে পেলা হয়েছিল আগেই। দেখেই অনেকে অশনিশঙ্কেত দেখেছিলেন— হ্যাঁরে খেলাটাই না পণ্ড হয়ে য়ায়!
আর শেষতক কিনা তাই হল।
বিকেল থেকে তাই মোহনবাগানের নামে স্লোগান দিয়েশুরু লহল খানিক বিক্ষোভও।
অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে, গেট বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ। পুলিশ এসে বুঝিয়ে সুঝিয়ে বেজা মানুষগুলোকে ঘরে ফেরান।
আর, তার খানিক পরেই মাঠ জুড়ে নেমে এল আঁধার।
হতাশায় অনেকেই রাস্তায় বলে পড়েন। কল্যাণী বি ব্লকের কৃষ্ণ বিশ্বাস স্টেডিয়ামের উল্টোদিকে দুপুর থেকে চা দোকানে অপেক্ষা করছিলেন। ম্যাচ বাতিল শুনেই বলছেন, ‘‘কল্যাণীর মতো শহরে ডার্বি ম্যাচ আবার কবে হবে, বা আদৌ কোনওদিন হবে কি না কেউ জানে না। একটা ম্যাচ এবং অনেক সম্ভাবনাকে কার্যত হত্যা করা হল। কান্না পাচ্ছে জানেন!’’ অন্ধকার রাতে, সবুজ মাঠটাও যেন একা একা কাঁদছে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy