নায়ক: শুক্রবার ডায়মন্ড লিগে জ্যাভলিন ছুড়ছেন ভারতের সোনার ছেলে নীরজ চোপড়া। ছবি: টুইটার।
মরুশহরে ঝড় তুললেন নীরজ চোপড়া। শুক্রবার দোহা ডায়মন্ড লিগে ৮৮.৬৭ মিটার জ্যাভলিন ছুড়ে সোনা জিতলেন ভারতের নীরজ চোপড়া।
টোকিয়ো অলিম্পিক্সে সোনা জয়ী ভারতীয় তারকা কাঙ্ক্ষিত ৯০ মিটার দূরত্ব এখনও অতিক্রম করতে পারেননি ঠিকই, কিন্তু তাতেই কার্যসিদ্ধি করে ফেলেন তিনি। টোকিয়ো অলিম্পিক্সে তাঁর প্রতিপক্ষ হিসেবে থাকা ইয়াকুব ভাদলেচ এ বারও রুপোতেই সন্তুষ্ট থেকেছেন।
এশিয়ান গেমসের আগে এই ডায়মন্ড লিগকেই পাখির চোখ করেছিলেন ভারতীয় তারকা। গত বছর প্রথম ভারতীয় হিসেবে এই মঞ্চে পদক জয় করা নীরজ শুক্রবার তাঁর নতুন অভিযান শুরু করেন সাড়া জাগিয়েই। সুহেম বিন হামাদ স্টেডিয়ামে প্রথম বারেই তিনি জ্যাভলিন ছোড়েন ৮৮.৬৭ মিটার। সাদা টি-শার্ট এবং মাথায় কালো ব্যান্ড পরা নীরজ প্রথম বারেই চমক দেন বাকি প্রতিপক্ষদের। প্রসঙ্গত এই নিয়ে ডায়মন্ড লিগের আসরে তিনবার জ্যাভলিন ছোড়ায় প্রথম পাঁচে জায়গা করে নিলেন তিনি। এর আগে তিনি নিজের দক্ষতা প্রমাণ করেছিলেন ২০২২ সালে লুজ়ান এবং জুরিখ ডায়মনড লিগে। তার মধ্যে জুরিখেই তিনি জিতেছিলেন পদক।
যদিও এ দিন নিজের সেরা ৮৯.৯৪ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে পারেননি তিনি। তবে তাতেও হতাশ নন ভারতীয় তারকা। ডায়মন্ড লিগের ওয়েবসাইটে নীরজ বলেছেন, ‘‘এমন একটা সাফল্য পেয়ে আনন্দিত। তবে এখনও নিজের সেরা ফর্মে পৌঁছতে পারিনি। তবে এই সোনা আমাকে অবশ্যই লক্ষ্যপূরণের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’’
মোট ছ’বার এ দিন জ্যাভলিন ছোড়েন নীরজ। বাকি পাঁচটি ক্ষেত্রে তিনি যথাক্রমে ৮৬.০৪ মিটার, ৮৫.৪৭ মিটার, ৮৪.৩৭ মিটার এবং ৮৬.৫২ মিটার জ্যাভলিন ছোড়েন। তাঁর চার নম্বর জ্যাভলিন ফাউল হয়েছিল। নিয়ম অনুযায়ী নীরজের প্রথম দূরত্ব অতিক্রমকে সেরা থ্রো বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। পরে যা নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘আমি আসলে নিজের উপরে বাড়তি চাপ তৈরি করতে চাইনি। ডায়মন্ড লিগ নিঃসন্দেহে অ্যাথলেটিক্সের ক্ষেত্রে বিরাট একটি মঞ্চ। আমি খোলা মনে নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি।’’
তিনি আরও বলেছেন, ‘‘এই লড়াইয়ে জেতা মোটেও সহজ ছিল না। তার পরেও দেশকে সোনা তুলে দিতে পেরে আমি গর্বিত। নিঃসন্দেহে দারুণ ভাবেই আমার নতুন যাত্রা শুরু করেছি। আগামী প্রতিযোগিতার আগে এই সোনা আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বাড়িয়ে দেবে। এ বার আমাকে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।’’
সেখানেই না থেমে ভারতীয় তারকা বলেছেন, ‘‘যে কোনও অ্যাথলিটের কাছে ডায়মন্ড লিগে সাফল্য পাওয়া একধরনের নিজের সঙ্গে লড়াই করা। এখানকার পরিবেশ দারুণ উপভোগ করেছি। তাই ৯০ মিটারের লক্ষ্যপূরণ না করতে পারলেও হতাশ হচ্ছি না।’’
নীরজকে সমর্থন করতে এ দিন গ্যালারিতে ছিলেন অনেক ভারতীয় দর্শক। তা নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘অনেক মানুষ আজ আমাকে সমর্থন করতে স্টেডিয়ামে এসেছিলেন। তাঁদের আনন্দ দিতে পেরে আমিও তৃপ্তি অনুভব করছি। বিশেষ করে, ভারতের মতো দেশের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামলে প্রত্যাশার চাপ অনেকটাই বেড়ে যায়। আশা করি, ভবিষ্যতে ভারত থেকে আরও অনেক নতুন প্রতিভা ডায়মন্ড লিগে নিজেদের দক্ষতা এবং শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করবেন।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘ভারতের মানুষ যে ভাবে আমাকে সমর্থন করেন এবং সাফল্যের প্রার্থনা করেন, তার জন্য নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে করি। এক বছর পরে দোহায় নেমে সফল হওয়ার বিশেষ একটা আনন্দ রয়েছে।’’
ভারতীয় তারকাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। তিনি টুইটারে লিখেছেন, ‘‘দোহা ডায়মন্ড লিগে ৮৮.৬৭ মিটার জ্যাভলিন ছুড়ে নীরজ চোপড়া আবার দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে। দেশকে নতুন ভাবে সম্মানিত করেছে। নীরজই হল আদর্শ চ্যাম্পিয়ন, যে সমস্ত ধরনের পরিস্থিতিতে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দিয়ে দেশকে পদক উপহার দেয়। চ্যাম্পিয়নকে অনেক, অনেক অভিনন্দন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy