নীরজ চোপড়ার উচ্ছ্বাস। ছবি: রয়টার্স।
এশিয়ান গেমসে আবার সোনা জিতলেন নীরজ চোপড়া। বুধবার ৮৮.৮৮ মিটার বর্শা ছুড়ে সোনা জিতে গেলেন তিনি। রুপোও এল ভারতের ঘরে। ওড়িশার কিশোর জেনা ছুড়লেন ৮৭.৫৪ মিটার। ফলে একই ইভেন্ট থেকে সোনা-রুপো দুটোই এল ভারতের ঘরে। গোটা ইভেন্ট জুড়েই ভারতের দুই ক্রীড়াবিদকে পাল্লা দেওয়ার মতো কেউ ছিলেন না। তৃতীয় হওয়া ডিন জেঙ্কি ৮০ মিটার পেরোলেও দ্বিতীয় স্থানাধিকারীর থেকে পাঁচ মিটার পিছনে ছিলেন।
পদকজয়ের থেকেও যেটা সবচেয়ে বেশি করে চোখে পড়ল, তা হল দুই ভারতীয় খেলোয়াড়দের বন্ধুত্ব। যে যখনই টপকে যাচ্ছিলেন, তখন উল্টো দিকের খেলোয়াড়কে অভিনন্দন জানাচ্ছিলেন। এক সময় মনে হয়েছিল সোনা নীরজ নন, নিয়ে যাবেন কিশোরই। কিন্তু পরের থ্রোতেই নীরজ নিজের প্রতিভার পরিচয় দিলেন। সাধারণত নীরজ নিজের সেরা থ্রো-টা প্রথম তিন রাউন্ডের মধ্যেই দিয়ে থাকেন। কিন্তু বুধবার তাঁর পদক এল চতুর্থ রাউন্ডের থ্রোয়ে।
স্টার্ট লিস্টে দ্বিতীয় স্থানে ছিল নীরজের নাম। চার নম্বরে ছিলেন কিশোর। নীরজের প্রথম প্রয়াস ঘিরে বেশ ঝামেলা হয়। প্রযুক্তিগত কারণে সেই প্রয়াসের পরিমাপই করা যায়নি। ফলে নীরজকে আবার ছুড়তে হয়। প্রথম প্রয়াসে তিনি ৮২.৩৮ মিটার ছোড়েন। কিশোর ছোড়েন ৮২.১৬ মিটার। প্রথম রাউন্ডের শেষে দু’জনেই প্রথম দুটি স্থানে ছিলেন। ইভেন্ট শেষ হওয়ার আগে এক বার জায়গা বদল ছাড়া যার বিশেষ পরিবর্তন হয়নি।
দ্বিতীয় রাউন্ডে নিজেকে ছাপিয়ে যান নীরজ। তিনি ছোড়েন ৮৪.৪৯ মিটার। কিশোরের দূরত্ব ছিল ৭৯.৭৬ মিটার। তবে এ বারও কিছুটা ধোঁয়াশা তৈরি হয়। কিশোরের থ্রোকে প্রথমে ‘ফাউল’ বলেছিলেন আম্পায়ার। কিন্তু নীরজ এগিয়ে এসে তার প্রতিবাদ করেন। আম্পায়াররা কিশোরের থ্রো খতিয়ে দেখার পর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন।
নীরজের তৃতীয় রাউন্ড ফাউল হয়। ভারতের ক্রীড়াবিদ তা নিয়ে কোনও প্রতিবাদ করেননি। কিন্তু তৃতীয় প্রয়াসেই নীরজকে টপকে যান কিশোর। তিনি ছোড়েন ৮৬.৭৭ মিটার। সেটা দেখেই নীরজ ছুটে আসেন কিশোরের দিকে। জড়িয়ে ধরেন সতীর্থ খেলোয়াড়কে। প্রথম তিনটি রাউন্ডের পর বাদ পড়েন বাকি ছ’জন খেলোয়াড়।
কিশোর তাঁকে টপকে যেতেই সেরাটা বেরিয়ে আসে নীরজের। চতুর্থ প্রয়াসে তিনি ৮৮.৮৮ মিটার ছোড়েন। কিশোরকে টপকে আবার প্রথম স্থানে চলে আসেন তিনি। এ বার ওড়িশার কিশোর এসে জড়িয়ে ধরেন নীরজকে। চতুর্থের প্রয়াসে কিশোরের দূরত্ব ছিল ৮৭.৫৪ মিটার। পঞ্চম প্রয়াসে নীরজ ৮০.৮০ মিটার বর্শা ছুড়লেও কিশোরের প্রয়াস ফাউল হয়।
নীরজের ষষ্ঠ প্রয়াস ফাউল হয়। কিন্তু তাতে তাঁর অবস্থানের কোনও বদল হয়নি। শেষ প্রয়াস ছিল কিশোরের। কিন্তু তিনি নীরজকে টপকে যাওয়ার কোনও চেষ্টাই করেননি। তাঁর ষষ্ঠ থ্রো ফাউল হয়। কিন্তু সে দিকে পাত্তা না দিয়ে ছুটে গিয়ে নীরজকে জড়িয়ে ধরেন। দুই ভারতীয় খেলোয়াড় একসঙ্গে উল্লাস করতে থাকেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy