Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪
বৃষ্টিতে বারবার পাল্টে গেল ভারতীয় প্ল্যানিং

দেড়শো করেও আউটের ভিডিও চেয়ে পাঠালেন বিরক্ত বিজয়

মুরলী বিজয় নাকি বেজায় চটেছেন! এমনিতে সামনাসামনি দেখলে তাঁকে মনে হয়, জীবনে এর সঙ্গে কারও লাগা সম্ভব নয়। শান্ত, চুপচাপ স্বভাবের দক্ষিণ ভারতীয় ওপেনার কারও সঙ্গে উচ্চস্বরে কথাবার্তাও নাকি বলেন না। কিন্তু শুক্রবার এতটাই তিনি রেগে গেলেন যে, মাঠে আম্পায়ারের বিরুদ্ধেও কিছুটা অসন্তোষ দেখিয়ে ফেললেন!

সেঞ্চুরির তৃপ্তি। ফতুল্লায় মুরলী-ধবন। ছবি: এএফপি।

সেঞ্চুরির তৃপ্তি। ফতুল্লায় মুরলী-ধবন। ছবি: এএফপি।

রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায়
ফতুল্লা শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৫ ০৩:৩০
Share: Save:

মুরলী বিজয় নাকি বেজায় চটেছেন!

এমনিতে সামনাসামনি দেখলে তাঁকে মনে হয়, জীবনে এর সঙ্গে কারও লাগা সম্ভব নয়। শান্ত, চুপচাপ স্বভাবের দক্ষিণ ভারতীয় ওপেনার কারও সঙ্গে উচ্চস্বরে কথাবার্তাও নাকি বলেন না। কিন্তু শুক্রবার এতটাই তিনি রেগে গেলেন যে, মাঠে আম্পায়ারের বিরুদ্ধেও কিছুটা অসন্তোষ দেখিয়ে ফেললেন! তার পর টিমের ভিডিও অ্যানালিস্টকে বলে পাঠালেন, আউটের ভিডিও লাগবে। এবং তার পর নাগাড়ে আউটের ভিডিও দেখে চলা এবং ক্রমাগত বিরক্তি প্রকাশ।

সাকিব-আল-হাসানের বলটা নাকি অফস্টাম্পের বাইরে যাচ্ছিল। তবু আম্পায়ার এলবিডব্লিউয়ের অ্যাপিলে আঙুল তুলে দেন। যার পর বিরক্তি ধরে রাখতে পারেননি এ দিন দেড়শো করে যাওয়া ভারতীয় ওপেনার।

সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁকে একবার প্রশ্নটা জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, এলবিডব্লিউয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি খুশি ছিলেন না বলেই মাঠে অসন্তোষ দেখিয়ে ফেললেন কি না? কিন্তু অফস্টাম্পের বাইরে যে ভাবে তাঁকে বল ছাড়তে সাধারণত দেখা যায় টেস্ট ম্যাচে, সাংবাদিকদের প্রশ্নের বলটাও ঠিক ও ভাবেই ছেড়ে দিলেন বিজয়। বলে দেন, “না। আমি হতাশ হয়ে পড়েছিলাম কারণ যে কাজটা নিয়ে এগোচ্ছিলাম, সেটা হল না বলে। আমার টার্গেট ছিল টিমকে পাঁচশো পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া।” কিন্তু পরে শোনা গেল, হতাশার মূল কারণ আম্পায়ারের ওই বিতর্কিত সিদ্ধান্ত। এত ভাল একটা ইনিংস যে কারণে থেমে গেল।

বিজয় দেড়শো করে বিষাদে। ভারতীয় টিম ৪৬২-৬ তুলেও বিভ্রান্ত। তবে তার পিছনে আম্পায়ারের আঙুল নেই। আছে ঢাকার বৃষ্টি। যার ঘ্যানঘ্যানে মেজাজ এ দিন প্রবল ভুগিয়ে চলল ভারতীয় ব্যাটিংকে। একটা সময় অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে, পাঁচ মিনিট ব্যাট করে পরের দশ মিনিট ড্রেসিংরুমে ফিরে আসতে হচ্ছে। আবার নামতে হচ্ছে এবং আবার পনেরো মিনিটের মধ্যে ফের ড্রেসিংরুমে ফিরে আসতে হচ্ছে। শোনা গেল, যা নিয়ে ব্যাটসম্যানরা অনুযোগ করতে থাকেন, এ ভাবে চললে তো ব্যাটিংয়ে মনঃসংযোগ করাই যাবে না।

পরিকল্পনা— সেটাও চূড়ান্ত ঘাঁটতে থাকে। প্রথমে ঠিক ছিল যে, লাঞ্চের পর যদি এক ঘণ্টা বিজয়-রাহানে টেনে দেন, হরভজন সিংহকে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। চালানোর জন্য। কিন্তু লাঞ্চের পর বৃষ্টির দাপটে খেলাই হল না ঘণ্টাদেড়েক মতো। শেষ পর্যন্ত যখন শুরু হল, বিজয় বিতর্কিত সিদ্ধান্তে আউট হয়ে ফিরে এলেন। ব্যাস, প্ল্যান আবার পাল্টে ফেলতে হল। হরভজনের বদলে গেলেন ঋদ্ধিমান সাহা। একটা সময় ঠিক হল, চা-বিরতিতে ইনিংস ডিক্লেয়ার করে দেওয়া হবে। যাতে হাতে গোটা সাতেক সেশন রাখা যায় বাংলাদেশকে দু’বার অলআউট করার জন্য।

চা বিরতি হল। কিন্তু ফের বৃষ্টিতে এ দিনের মতো খেলাটা ‘কলড অফ’-ও হয়ে গেল!

ভরা বর্ষার জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে বাংলাদেশে সফর ফেলা নিয়ে টিম ইন্ডিয়ার প্রতিক্রিয়া চাওয়া হলে সাংবাদিক সম্মেলনে আসা বিজয় প্রসঙ্গে ঢুকতে চাইলেন না। বললেন, তাঁদের এ সব নিয়ে কথা বলা বারণ আছে। ঘটনা হল, সবচেয়ে বেশি ভুগতে হচ্ছে ভারতকেই। রান তোলার গতি এ দিন বারবার থমকে গেল। ক্রিকেটাররা একটা সময় হতাশাবিদ্ধ হয়ে ড্রেসিংরুমের লাগোয়া জায়গায় ভলিবল খেলতে শুরু করে দিলেন। এবং ডিক্লেয়ারেশন স্কোরটা কী হবে, সেটা নিয়েও রাত পর্যন্ত নিশ্চিত সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব হল না। পাঁচশো তুলে নাকি টিম চাইছে ছাড়তে। যাতে ফলো অন স্কোরটা তিনশো হয়। কিন্তু সেটা করতে গেলে আরও আধ-ঘণ্টা থেকে পঁয়তাল্লিশ মিনিট মতো যাবে শনিবার সকালে। নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না যে, আরও কিছুটা সময় বেরিয়ে গেলে বাংলাদেশকে দু’বার অলআউট করার মতো সময় হাতে থাকবে কি না। টিম ডিরেক্টর রবি শাস্ত্রীর মতো কেউ কেউ নাকি এ দিন বিকেল থেকেই শনি ও রবিবারের আবহাওয়ার খোঁজখবর নিতে শুরু করেছেন বলে শোনা গেল। জানার চেষ্টা হচ্ছে, সম্ভাব্য ক’টা সেশন পাওয়া যেতে পারে।

যা দাঁড়াচ্ছে, সাফল্যের টিম ইন্ডিয়ায় এখনও স্বস্তির চেয়ে অস্বস্তিই বেশি!

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy