চর্চায়: যত নজর তাঁর দিকেই। চেন্নাইয়ের শিবিরে তৈরি হচ্ছেন ধোনি। ছবি টুইটার থেকে নেওয়া।
তাঁকে সবাই ‘ক্যাপ্টেন কুল’ বলেই জানে। কিন্তু সেই মহেন্দ্র সিংহ ধোনির চোখেও জল দেখেছিলেন আর অশ্বিন। যে দিন টেস্ট ক্রিকেটকে চিরতরে বিদায় জানিয়েছিলেন ধোনি।
বছর ছয়েক আগের ঘটনা। ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়ে মেলবোর্ন টেস্টের পরে অবসর ঘোষণা করেন ধোনি। ওই সিরিজে প্রথম দুটো টেস্টে হেরে গিয়েছিল ভারত। মেলবোর্নে জিতলে সিরিজ বেঁচে থাকত। কিন্তু তা হয়নি। টেস্ট ড্র হয়ে যায়। তার পরেই টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করেন ধোনি। সেই অবসর নেওয়ার দিনে কী হয়েছিল, তা নিজের ইউটিউব চ্যানেলে বলেছেন অশ্বিন। এই অফস্পিনারের কথায়, ‘‘মেলবোর্নে আমি ধোনির সঙ্গে ব্যাট করছিলাম টেস্টটা বাঁচানোর জন্য। ম্যাচ শেষ হয়ে যাওয়ার পরে একটা স্টাম্প তুলে নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ধোনি বলে যায়, শেষ টেস্ট হয়ে গেল!’’
মাঠে ভাবলেশহীন থাকলেও পরে হোটেলে ফিরে কিন্তু রীতিমতো আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন ধোনি। অশ্বিনের স্মৃতিচারণ, ‘‘ওই সন্ধ্যায় আমি, সুরেশ রায়না, ইশান্ত শর্মা হোটেলে ওর ঘরে বসেছিলাম। সারা রাত ওই টেস্ট ম্যাচের জার্সিটা পরে ছিল ধোনি। এমনকি, কেঁদেও ফেলেছিল। ওর চোখে জল দেখেছিলাম সে দিন।’’ ৯০ টেস্টে ৪,৮৭৬ রান করা ধোনি কাউকে বুঝতেও দেননি যে ও ভাবে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে নেবেন। ঠিক যেমনই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকেও বিদায় নেওয়ার মুহূর্তটা কাউকে টের পেতে দেননি।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে ধোনির এ ভাবে অবসর নেওয়াটা মানতে পারছেন না কে এল রাহুলও। সাম্প্রতিক কালে রাহুলকেই সীমিত ওভারের ক্রিকেটে উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যানের ভূমিকাটা দিয়েছে ভারতীয় দল পরিচালন সমিতি। সেই রাহুল একটি ক্রিকেট ওয়েবসাইটকে বলেছেন, ‘‘খবরটা শুনে সত্যিই খুব ধাক্কা খেয়েছিলাম। মনটা ভেঙে গিয়েছিল।’’ রাহুলের একটাই ইচ্ছে ছিল। কী সেটা? ‘‘ধোনির বিদায়ী ম্যাচটা দারুণ ভাবে করা। আমি নিশ্চিত, দলের সবাই বা যারা কোনও না কোনও সময়ে ওর সঙ্গে খেলেছে, তারা চাইবে ধোনি যেন একটা বিদায়ী ম্যাচ খেলে অবসব নেয়। যাতে ওর অবসরটা স্মরণীয় করে রাখা যায়। কিন্তু যা হওয়ার তা তো হয়েই গেল।’’
আরও খবর: মৃত্যুর আগে তোমার ওই ছক্কাটা এক বার দেখতে চাই, ধোনিকে বলেন গাওস্কর
প্রথম এগারোয় ধোনির জায়গা নেওয়ার ব্যাপারে তিনিই এখন এগিয়ে। রাহুল বলছেন, কী ভাবে দলের তরুণদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসতেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক। ‘‘ধোনি আমাদের সব সময় পথ দেখিয়েছে। কিন্তু কখনওই বলেনি, তোমাদের বদলাতে হবে। ধোনি বরং চেয়েছে, আমরা মাঠে গিয়ে নিজেদের মেলে ধরি আর ভুল করলে তা থেকে যেন শিক্ষা নিই,’’ বলেছেন রাহুল। যোগ করেন, ‘‘যখনই কোনও কিছু নিয়ে প্রশ্ন উঠত, তখনই উত্তর দেওয়ার জন্য হাজির থাকত ধোনি।’’
তবে পাকিস্তানের প্রাক্তন ফাস্ট বোলার শোয়েব আখতার মনে করেন, একটা ব্যাপার ঘটলে এখনও ধোনি অবসর ভেঙে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে পারেন। সেটা কী? শোয়েব বলেছেন, ‘‘কে বলতে পারে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী হয়তো ফোন করে ধোনিকে অনুরোধ করলেন পরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলে দিতে। প্রধানমন্ত্রীর কথা কি কেউ ফেলতে পারে?’’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার সময় ধোনির ট্রফি ক্যাবিনেটের ছবিটা কিন্তু যে কারও কাছে ঈর্ষণীয়। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ, আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি তো আছেই। পাশাপাশি টেস্টেও ভারতকে এক নম্বর দল করেছিলেন তিনি। এই সাফল্যের পিছনে ধোনির আবেগহীন মানসকিতা যে একটা বড় কারণ, তা বলছিলেন ভি ভি এস লক্ষ্মণ। একটি চ্যানেলে লক্ষ্মণ বলেছেন, ‘‘খেলার ফল কী হবে, সে ব্যাপারে নিরাসক্ত থাকাই কিন্তু ধোনিকে সাফল্য দিয়েছে।’’ ভারতের প্রাক্তন ব্যাটসম্যান আরও বলেন, ‘‘আমি মনে করি, ভারতীয় ক্রিকেট দলকে নেতৃত্ব দেওয়াটা সব চেয়ে কঠিন কাজ। কারণ বিশাল প্রত্যাশার চাপ থাকে। কিন্তু ধোনি নিজেকে নিরাসক্ত রাখায় সেই চাপ সামলে নিয়েছিল দারুণ ভাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy